মোংলা বন্দরে এসেছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চালান

প্রকাশিত: ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২০ | আপডেট: ১২:১৫:পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২০

নানা কল্পনা জল্পনা আর অধীর অপেক্ষা শেষে দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ রাশিয়া থেকে মোংলা সমুদ্রবন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছেছে। এ যন্ত্রাংশগুলোর মধ্যে রয়েছে- দুটি ইমার্জেন্সি কোর কুলিং সিস্টেম (ইসিসিএস) ট্যাংক ও দুটি হাই প্রেসার হিটারস পিভিডি-কে-ফাইভ এবং পিভিডি-কে-সিক্স।রূপপুরে যেটি স্থাপনের কথা আছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

সুত্র মতে জানা গেছে, সমুদ্রপথে রাশিয়ার ভলগা নদী থেকে প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গত সোমবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পৌঁছায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। যা মোংলা সমুদ্রবন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছায় মোঙ্গলবার।

 

পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এই যন্ত্রাংশগুলোর ওজন প্রায় ৪০০ টনের কাছাকাছি। ইসিসিএস ট্যাংকের প্রতিটির ওজন ৭৮ টন। ইসিসিএস নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের প্যাসিভ সেফটি সিস্টেম, যা রিয়েক্টর কোরে বোরিক এসিড সাপ্লাই করে। অন্যদিকে হাই প্রেসার হিটারস পিভিডি-কে-ফাইভ এর ওজন ১১০ টন এবং পিভিডি-কে-সিক্স এর ওজন ১৩০ টন।

 

এছাড়াও দেশে এসে পৌঁছেছে নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের মূল যন্ত্রাংশ একটি নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর ও একটি স্টিম জেনারেটর। এগুলো একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প সুত্র জানায় নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল হচ্ছে পারমাণবিক চুল্লি। যেখানে প্রধান জ্বালানি থাকবে। এটিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাণ বলা চলে।আর স্টিম জেনারেটরও এই চুল্লির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিউক্লিয়ার রিয়েক্টরটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন এবং স্টিম জেনারেটরের ওজন ৩৪০ টন। 

 

 এ ধরনের যন্ত্রাংশ স্থানান্তর এবং পরিবহন একটি জটিল ও কঠিন প্রক্রিয়া। বিশেষ করে চুল্লি এবং স্টিম জেনারেটর স্বয়ংক্রিয় যানে করে ভোলগোদোনস্কের সিমলিয়ান্সককের একটি জেটিতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে এগুলো নভোরোসিয়েস্কে পৌঁছায়। সেখান থেকে কৃষ্ণসাগর এবং সুয়েজ ক্যানেল হয়ে এটি মোংলায় এসে পৌঁছায়।

 

বিশেষ এই ইক্যুইপমেন্ট রাশিয়ান ফেডারেশনের সমুদ্রগামী জাহাজ থেকে বাংলাদেশের স্থানীয় বিশেষ বার্জে স্থানান্তর করা হবে।মাদার ভেসেল থেকে আনলোড প্রকৃয়াহচ্ চলছে। আগামী ৫ নভেম্বর মোংলা বন্দর থেকে এই যন্ত্রাংশ নিয়ে পৃথক জলযানে রূপপুরের উদ্দেশে পাঠানো হবে। নৌপথে আগামী ২০ অথবা ২১ নভেম্বর চাঁদপুর হয়ে পদ্মাপাড়ে প্রকল্প এলাকায় নবনির্মিত রূপপুর নৌ-বন্দরে পৌঁছাবে।

 

প্রকল্প সূত্র জানয় খুব শিগগিরই এই নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং স্টিম জেনারেটর স্থাপন কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

 

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে, প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তিশালী দেশ হওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করবে।এবং রূপপুরের এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সব মিলিয়ে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

ম.ম. রবি ডাকুয়া। প্রতিবেদক। বাগেরহাট, খুলনা