পাইকগাছায় ৩ দিনের ব্যবধানে শাপলা ক্লিনিকে ২ প্রসুতির মৃত্যু

প্রকাশিত: ৮:৪২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৯ | আপডেট: ৮:৪২:অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাইকগাছা(খুলনা):
পাইকগাছার বহুল আলোচিত শাপলা ক্লিনিকে গত ৩ দিনের ব্যবধানে দু’প্রসুতির মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে। ধারাবাহিক মৃত্যুর কারণে ভর্তিকৃত অনেক রোগী ক্লিনিক ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগেও ঐ ক্লিনিকে বেশ কয়েকজন প্রসুতি সহ অনেক রোগী মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একাধিকবার ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করেও দেয়। বার বার এ ধরণের রোগীর মৃত্যুর কারণে শাপলা ক্লিনিকটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত বুধবার রাত ১১ টার দিকে উপজেলার গজালিয়া গ্রামের আলমগীর ফকিরের সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী মারুফা খাতুন (২৫) কে পাইকগাছা উপজেলা সদরের শাপলা ক্লিনিকে ভর্তি করে। এদিন রাত ১২ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ নিতিশ চন্দ্র গোলদার ও মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুর রবের তত্ত্বাবধায়নে মারুফার সিজারিয়ান করা হয়। সিজারিয়ানের মাধ্যমে মারুফার একটি কন্যা সন্তান হয়। এদিকে, মারুফার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বৃহস্পতিবার তাকে পুনরায় অপারেশন করে। দ্বিতীয় অপারেশনের পর প্রসুতি মারুফা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ওইদিন রাতেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে প্রসুতি মারুফার মৃত্যু হয় বলে তার স্বামী আলমগীর ফকির জানান।
অপরদিকে, গত মঙ্গলবার একই ক্লিনিকে কালুয়া গ্রামের মাসুম গাজীর স্ত্রীর নাছরিন আক্তার (২০) কে ভর্তি করা হয়। সিজারিয়ান করার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকেও খুলনায় প্রেরণ করা হয়। খুলনায় নেয়ার পথে প্রসুতি নাসরিনের মৃত্যু হয় বলে তার পরিবার জানায়। গত ৩ দিনের ব্যবধানে দু’প্রসুতির মৃত্যুর পর শাপলা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। অনেকেই বলছেন, অত্র ক্লিনিকে যে পরিমাণ রোগী মারা গেছে তাতে ক্লিনিকটিকে রোগী মারার কারখানা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। আবার অনেকেই বলছেন, অসংখ্য রোগী মৃত্যুর পরও কর্তৃপক্ষ বার বার ক্লিনিকের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। ক্লিনিকের মালিক তাপস কুমার মিস্ত্রী বেশ কয়েকদিন ক্লিনিকে অবস্থান না করায় তার কোন মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারুফার মৃত্যু হয় বলে ক্লিনিকে কর্মরত বাসারুল ইসলাম বাচ্চু জানান। ডাঃ আব্দুর রব জানান, রোগীর সিজারিয়ান করার পর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় আরেকটি অপারেশন করে জরায়ু কেটে ফেলা দেয়া হয়। প্রথমে সে সুস্থ ছিল। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে মারুফাকে খুলনায় প্রেরণ করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/আমিনুল ইসলাম বজলু/পাইকগাছা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক