পাইকগাছায় দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকে স্বামী-স্ত্রীকে ৫ ঘন্টা আটক রাখার অভিযোগ

প্রকাশিত: ৮:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৯ | আপডেট: ৮:৩৮:অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৯

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

নিজস্ব প্রতিবেদক, কপিলমুনি(খুলনা):
পাইকগাছায় ঋনের টাকা আদায়ের জন্য দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকে স্বামী স্ত্রীকে ৫ ঘন্টা আটকে রেখে মানষিকভাবে নির্যাতন ও অপদস্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দম্পতিকে মোটর সাইকেল যোগে উঠিয়ে এনে এ নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে থানা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দম্পতিকে উদ্ধার করা হয়।

অভিযোগে জানাযায়, পাইকগাছা উপজেলার নগর শ্রীরামপুর গ্রামের মীর আহম্মাদ আলীর ছেলে মিল ব্যবসায়ী মীর আকরাম হোসেন ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগমকে বিকেল ৫টা দিকে পাইকগাছা বাজারের হোটেল কলাপাতা থেকে উঠিয়ে এনে রাত্র ১০ টা পর্যন্ত আটকে রাখে পাইকগাছা জিরো পয়েন্টে অবস্থিত দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিঃ কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায় দম্পতি আটক রাখার খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে গণমাধ্যম কর্মীরা ব্যাংকে যেয়ে দেখেন ব্যাংকের প্রধান ফটকে ৩টি তালা ঝুলছে। প্রধান গেইটে গনমাধ্যমকর্মীদের আগমন টের পেয়ে ভিতরের কয়েক ব্যাক্তি এগিয়ে আসেন।

এ সময় গনমাধ্যমকর্মীরা দম্পতি আটক রাখার বিষয়ে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মোর্তুজার কাছে জানতে চাইলে তারা গণমাধ্যম কর্মীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অসৌজন্যমূলক আচারন করেন। উপায়ন্ত না পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি পাইকগাছা থানার ওসিকে জানালে তিনি সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য এস আই রকিবুল ইসলামকে সঙ্গীয় ফোর্স দিয়ে পাঠান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেখেন প্রধান ফটকে তালা লাগানো। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবগত করলে তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে দেখেন ভূক্তভোগী স্বামী ও স্ত্রী দুজনকে আটকে রাখার হয়েছে।
ঋন গ্রহীতা মীর আকরাম হোসেন ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমাদের কাছে ব্যাংক টাকা পাবে বলে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিল। এরপর পর আমরা টাকা পরিশোধের জন্য চেষ্টা করছিলাম। টাকার জন্য পাইকগাছায় আসি এবং হোটেলে খাওয়ার সময় ব্যাংকের কিছু লোক যেয়ে বলেন, ব্যাংক ম্যানেজার আমাদেরকে পাঠিয়েছেন আমাদের সঙ্গে এক্ষুনি যেতে হবে। আমাদের হোটেলে খাওয়া অসম্পন্ন অবস্থায় উঠিয়ে এনে আটকে রাখে। ব্যাংক ম্যানেজার আমাদের বলেন টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আপনাদের ছাড়বো।’
ভুক্তভোগী নারী মমতাজ আরও বলেন, ‘আমরা ম্যানেজারকে বলি আপনারা আমাদেরকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন। আমরা আপনাদের টাকা পরিশোধ করে দিব। আমার অসুস্থ্য স্ত্রীকে যেতে দেন। বাড়িতে আমার শিশু সন্তান কান্নাকাটি করছে। কিন্তু ব্যাংক ম্যানেজার আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে অমানবিকভাবে মানষিক নির্যাতন করেন। এমনকি ব্যাংক ম্যানেজার বলেন টাকা না দেয়া পর্যন্ত সাংবাদিক ও প্রশাসন যেই আসুকনা কেন তোমাদের ছাড়া হবেনা, টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের আমাদের এখানেই থাকতে হবে। স্বামী স্ত্রী থাকার জন্য ঘর দিব বলেও ইভটিজিং করেন ম্যানেজার। এ ঘটনায় ব্যাংকের বাইরে উপস্থিত শতশত মানুষ বিষয়টিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করেন।

এদিকে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পাইকগাছা পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর ও ওয়ার্ড কাউনন্সিলর তৈবুর রহমানসহ গণমাধ্যম কর্মীরা ও বেশ কিছু লোক ব্যাংকে যেয়ে স্বামী স্ত্রীকে আটক রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক ম্যানেজার বলেন তাদের কাছে ঋনের টাকা পাব তাই তাদের কে ডেকে এনেছি মাত্র। থানা পুলিশ, পৌর মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তারা অবরুদ্ধ থেকে উদ্ধার হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মোর্তুজা মুজিব পরদেশী বলেন, ‘দম্পতিকে আটকে রাখার বিষয়টি সঠিক নয়, শুধুমাত্র নিকোজেশান করতে তাদের আনা হয়েছিল।’ ব্যাংক টাইমের বাইরে তাদেরকে মোটরসাইকেল যোগে নিয়ে আসা ও দীর্ঘ সময় তাদের আটকে রেখে কি নিকোজেশান করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তিনি বলেন ‘ভাই আমার অফিসে আসেন কথা বলবো।’

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/এইচ এম এ হাশেম/কপিলমুনি


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক