প্রতিকূল আবহাওয়ায়ও পাইকগাছায় কাঁঠালের উৎপাদন ভাল

প্রকাশিত: ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ১০, ২০২২ | আপডেট: ১১:৪৮:পূর্বাহ্ণ, জুন ১০, ২০২২

আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান না থাকায় খুলনার পাইকগাছায় কাঁঠালের আশানারূপ ফলন হলেও আকার-আকৃতিতে পরিবর্তন হয়েছে। উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কাঁঠাল বৃদ্ধি কম হয়। এতে আকার কিছুটা ছোট হয়েছে। কাঁঠালের আকার- আকৃতিতে বাঁধাপ্রাপ্ত হওয়ায় কোষ (কায়া) বড় হয়নি। তবে কোন কোন এলাকায় বাগান মালিকরা কাঁঠালের ভাল ফলন পেতে বাগানে অতিরিক্ত পরিচর্যা করায় সে সকল এলাকায় কাঁঠালের আকার-আকৃতি স্বাভাবিক হয়েছে। জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে কাঁঠাল পাঁকা শুরু হয়েছে। বর্তমান মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শেষ ভাগে চলছে কাঁঠালের ভরা মৌসুম। প্রথম দিকে বাজার দর চড়া থাকলেও এখন তাই দামও স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ হয়েছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলীতে কাঁঠালের আলাদা বাগান রয়েছে। তাছাড়া লবনাক্ততার প্রকোপ কাটিয়ে উপজেলার চাঁদখালী ও পৌরসভার আংশিক এলাকায় কিছু কিছু কাঁঠাল গাছ বেড়ে উঠেছে। এসকল এলাকায় পরিকল্পিত ভাবে কাঁঠাল বাগান গড়ে ওঠেনি। তবে মিশ্র বাগানে কাঁঠাল গাছ রয়েছে।

সূত্র জানায়, এলাকা ও এলাকার বাইরে কাঁঠাল কাঠের ব্যাপক চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় এলাকার বড় বড় গাছ গুলো অতিদ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। তবে ঠিক যে পরিমাণে গাছ কর্তন হচ্ছে সে পরিমাণে কাঁঠাল বাগান গড়ে না ওঠায় বর্তমানে এলাকায় বড় কোন কাঁঠাল গাছ তেমন একটা চোখে পড়ে না। এমনটা চলতে থাকলে আগামীতে কাঁঠালের সংকট দেখা দিতে পারে বলেও আশংকা করা হচ্ছে।

কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৮শ’ মেট্রিকটন কাঁঠাল উৎপাদন হবে। বাজারে পাকা কাঁঠালের পাশাপাশি সব্জি হিসেবেও চাহিদা রয়েছে। আকার ভেদে প্রতিটি কাঁঠাল ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ২শ’ টাকারও অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি অফিসের পাশাপাশি চাষিরা জানান, আষাঢ়-শ্রাবণ মাস মূলত কাঁঠাল পাঁকার উৎকৃষ্ট সময়। তবে জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁঠাল বাজার বেঁচা-কেনা হচ্ছে। কাঁঠাল রসালো ও সু-স্বাদু একটি ফল। প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ জাতীয় ফল কাঁঠাল শহর ও গ্রামাঞ্চলের সব এলাকার মানুষের কাছে সমান জনপ্রিয়। মানুষের সুস্থ্য সবল স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিনের অভাব পূরণে কাঁঠাল খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কাঁঠাল এমন একটি ফল যার কোন অংশই বাদ যায় না। কাঁঠালের কোষ, খোসা ও বিচি সব কিছুই প্রয়োজনীয়। বিচি উৎকৃষ্টমানের সব্জি হিসাবে তরকারিতে মিশ্রণ উপকরণ হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়। এর খোঁসা ও গাছের পাতা গবাদি পশু গরু-ছাগল ও ভেঁড়ার প্রিয় খাদ্য। তাছাড়া কাঁঠাল উৎপাদনে কোন প্রকার খরচ না থাকায় চাষীরা লাভবান বেশি হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, আবহাওয়ার প্রতিকুল পরিবেশেও পাইকগাছা উপজেলায় কাঁঠালের ফলন ভাল হয়ছে। এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁঠাল গাছ লাগানোর জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

আমিনুল ইসলাম বজলু। নিজস্ব প্রতিবেদক। পাইকগাছা, খুলনা