ত্রাণের জন্য পাইকগাছার গদাইপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের উদ্দ্যোগে চাঁদা উত্তোলন!

প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২০ | আপডেট: ২:৫১:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২০

পাইকগাছার গদাইপুর ইউনিয়নে ত্রাণ দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যানের উদ্দ্যোগে চাঁদা তুলে চাউল মজুদ করায় নানা গুনজন শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, গদাইপুর ইউনিয়নে বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ত্রাণ সঠিক ভাবে বন্টন করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে চাঁদা তুরে ত্রাণ দেওয়ার জন্য চাউল মজুদ রাখা হলে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা হবে বলে বিশিষ্ট জনেরা মনে করছেন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সরকার সাধারণ ছুটি ২৫ এপ্রিল থেকে বাড়িয়ে ৫মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য ঘরে থাকতে জনসচেতনা মূলক বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করেছেন। করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে বেকার হয়ে পড়া ব্যবসায়ী, নিন্ম-মধ্যবিত্ত, দরিদ্র, হত-দরিদ্র ও বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্দ্যোগে ত্রাণ প্রদান করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখবে এবং কোন প্রকার খাদ্য শস্যের ঘাটতি নেই বলে সরকার বার বার জানাচ্ছেন। এর মধ্যে চাঁদা তুলে গদাইপুর ইউনিয়নে ত্রাণ দেওয়ার কোন পরিবেশ তৈরী হয়নি। তবে কেন চাঁদা তুলে চাউল মজুদ রাখা হচ্ছে তা নিয়ে ইউনিয়নে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

জানা গেছে ১৯ এপ্রিল চেয়ারম্যানের আহবানে গদাইপুর ইউনিয়নের সুশিল সমাজ নামে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান উপদেষ্টা রয়েছেন চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান। উক্ত কমিটি দায়িত্বশীল এক সদস্য জানান, সবকিছু চেয়ারম্যানের ইচ্ছায় হচ্ছে। আমরা আছি উপলক্ষ্য মাত্র। তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাসে প্রভাবে দেশে যদি মহামারি ও দূর্ভিক্ষ দেখাদেয় তখন এই মজুদ রাখা চাউল ইউনিয়নের বন্টন করা হবে। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরকারি স্কুল শিক্ষকদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নির্ধারন করে চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে তাছাড়া সরকারি চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন বাজারের মুদি ব্যবসায়ী, চাউল ব্যবসায়ী ও ঔষধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, রাতের বেলায় ৮-১০টি মটর সাইকেল নিয়ে ১৬-১৮জন লোক আমার বাড়ীতে আসলে আমি ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে পড়ি। পরে চেয়ারম্যান আসছে যেনে আস্বস্ত হই। করোনার প্রভাবে আমার ব্যবসা বন্ধ থাকায় আমার সংসার চালাতে হিমশিম থেকে হচ্ছে। তার উপর চেয়ারম্যানসহ এতো লোকজন আশায় আমার সম্মান বাঁচাতে আমি ত্রাণের জন্য ৩ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছি। গদাইপুর ইউনিয়নের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির মধ্যে হিতামপুর, বোয়ালিয়া মালোপাড়া উল্লেখ্যযোগ্য। সেখানে চেয়ারম্যান চাঁদা নিতে গেলে মালোদের রোশানলে পড়ে। তারা জানায় এখনো পর্যন্ত সরকারের ত্রাণ সহায়তার কোন কিছু পায়নি।

এব্যাপারে গদাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান জানান এ পর্যন্ত ৫টন চাউল মজুদ করা হয়েছে। আরও ৫টন মজুর করার কাজ চলছে। সর্বমোট ২০টন চাউল মজুদ করার পরিকল্পনা রয়েছে। চাউল কেন মজুদ রাখা হচ্ছে বা কবে নাগাদ এ চাউল বিতরণ করা হবে এ বিষয়ে তিনি জানান, সরকার সামনে কতটুকু কি করবেন সেটা ভেবে চাউল মজুদ করা হচ্ছে এবং সে অনুযায়ী ইউনিয়নে চাউল বিতরণ করা হবে। তিনি আরও জানান সুশীল সমাজের উদ্দ্যোগে সেচ্ছায় সকলে টাকা দিচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

এইচএমএ হাশেম। নিজস্ব প্রতিবেদক। কপিলমুনি, খুলনা