তালায় লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশী জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ: বৈরী আবহাওয়া নিয়ে দুঃচিন্তায় কৃষক

প্রকাশিত: ৮:৫১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৯ | আপডেট: ৮:৫১:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৯

মুজিবর রহমান:
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় এবছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশী পরিমান জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার বিলগুলোতে যে দিকে চোখ যায় শুধু ধান আর ধান। সব এলাকায় সবুজ ধানের শীষে বাতাস দোল খাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারনে জমির ফসল নিয়ে দুঃূচিন্তায় কৃষক দিন গুনছে। গত কয়েকদিনের কালবৈশাখী ঝড় আর শিলা বৃষ্টিতে কৃষকের ক্ষেতের ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের সকল পরিচর্যা শেষে ধান তোলার সময় শিলা বৃষ্টি কৃষকের হাসি ম্লান করে তুলেছে। গত মঙ্গলবার উপজেলার উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের মাঠের ধান হেলে পড়েছে। অনেক জমিতে পানি জমে ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর অধিক জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর চাষাবদের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকার কারণে উপজেলার সকল এলাকায় ব্যাপকহারে ইরিবোরো চাষাবাদ হয়েছে। অনেক নিচু এলাকার জমিতেও চাষাবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিলে ইরিবোরো চাষে সবুজ ফসলের সমারোহ। উপজেলার শতকরা ৮০জন কৃষকই সরাসরি কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষিকাজ করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১৯হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চাইতে প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে ইরিবোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর উপজেলায় জলাবদ্ধতা না থাকায় উপজেলার ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা, খলিষখালী, তেঁতুলিয়া, তালা, জালালপুর, মাগুরা, খেশরাসহ উপজেলার সর্বত্রই লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশী জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার আমতলাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আজিবার জানান, আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারনে এবছর আমাদের ব্লকে গতবারের চাইতে বর্তমানে ধান ভাল বুঝা যাচ্ছে। এ বছর আমার ব্লকে ব্রি-ধান ২৮ বেশ ফলেছে। আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় বেশ দুঃশ্চিন্তায় আছি, ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত চিন্তার শেষ নেই।
অপরদিকে ইসলামকাটি ইউনিয়নের গোনডাঙ্গা গ্রামের কৃষক প্রবীর সরকার জানান, গত বছরের তুলনায় ধান ভাল না, তবে রোগবালাই কম আছে।
ধানদিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম জানান, এবছর আমাদের এলাকায় ধানের ফলন খুব ভাল দেখা যাচ্ছে, যদি এভাবে শেষ নামে ও আবহাওয়া ভাল থাকে তাহলে বাম্পার ফলন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল-মামুন জানান, এবছর আবহাওয়া ভাল থাকার কারনে অনেক এলাকায় চাষাবাদ হয়েছে। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে কিছু কিছু এলাকায় ধানের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার সকল এলাকায় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করায় রোগ বালাই কিছুটা কম আছে। আগাম পরামর্শ দেওয়ায় ব্লাস্ট রোগ তেমন চোখে পড়েনি। মাগুরা-জালালপুর এলাকায় কিছু জমিতে রোগ দেখা দিয়েছে তবে তা চোখে পড়ার মত না। এবছর উপজেলায় ব্রি-ধান ২৮ বেশী পরিমান জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। তাছাড়া ৬৭, বিনা-১০ ও কিছু এলাকায় লবণ সহিষ্ণু ধান চাষাবাদ হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক