হরিঢালী-কপিলমুনি আনসার ভিডিপি ক্লাবের বেহাল দশা

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০১৯ | আপডেট: ৭:৩৬:অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, কপিলমুনি(খুলনা):
এক পাশে চিকুন বাঁশ আর এক পাশে মরা বকুল গাছের খুঁটি, আর তাতেই কোন রকমে দায়সারাভাবে গুনো তার দিয়ে ঝোলানো সাইনবোর্ড, এমন চিত্র হরিঢালী-কপিলমুনি অনসার ভিডিপি ক্লাবের। চিত্রটি সেই অনেক দিনের হলেও যেন হুশ ফিরেনি সংশ্লিষ্ট কারো।
জানাযায়, কপিলমুনিতে আনসার ও ভিডিপি ক্লাবটির অবস্থা খুবই নাজুক। ক্লাবের কমিটির মেয়াদ ৩ বছর উত্তির্ণ হলেও দীর্ঘদিন নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন না করায় জনহিতকর এ প্রতিষ্ঠানটি তার উন্নয়নের গতি হারিয়েছে। নতুন কমিটি নিয়ে আনছার ভিডিপির পাইকগাছা উপজেলা কর্মকর্তারও যেন নেই কোন ব্যাথা। গত পরিষদের নির্বাচিত কমিটিও ক্লাবটি উন্নয়নে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি বলে জানান দেখভালের দায়িত্বে থাকা মোমিন গাইন (প্রতিষ্ঠাতার ছেলে)।
জানাযায়, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সরকারের পটপরিবর্তন হলেও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ প্রতিষ্ঠানটিতে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে এর পদযাত্রা শুরু হয়েছিল। শুরু সোপান থেকে কপিলমুনির একটি জনগরুত্বপূর্ন স্থানে নিজস্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যকাল শুরু হয়। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশ যখন এগিয়ে চলেছে ঠিক সেই মূহুর্তে এখনও ভগ্নদশার মায়াজাল যেন ছাড়ছে না আনসার ও ভিডিপি ক্লাবটিকে।
সরেজমিনে দেখাযায়, কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ি জামে মসজিদ ও কপিলমুনি প্রেসক্লাবের মাঝখানে হরিঢালী-কপিলমুনি আনসার ভিডিপি ক্লাবটির অবস্থান। ১৯৯২ সালে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিহির কান্তি মজুমদারের হাতধরে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। ততকালীন থেকে কপিলমুনির হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হাবিবুর রহমান গাইনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ক্লাবটির সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০০৩ সালে হাবিবুর রহমান মৃত্যু বরণ করলে ক্লাবটির কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পড়ে। প্রাচীরের মূল ফটক দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই দেখাযায় ইটের গাঁথুনি দেওয়া একচালা বিশিষ্ট টিনের ছাউনির ৩টি কক্ষ। কক্ষের ভিতরের অংশ মাটির সাথে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। টিনগুলি মরিচা পড়ে জালের মত ছিদ্র হয়ে গেছে। ক্লাবটির চারপাশ জুড়ে ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে পুরো ক্লাবের ঘরসহ জায়গা পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বারান্দার অঙ্গিনায় মাটি ও বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে সেখানে আনসার ভিডিপির সদস্য আফাজ মোড়ল সেলাই মেশিন বসিয়ে দর্জির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
আফাজ মোড়ল বলেন, ‘টিন সেডের ঘরটি অনেক আগে থেকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আমি জীবিকার তাগিদে এখানে পায়ে চালিত সেলাই মেশিন বসিয়ে এলাকার পরিচিত দু’এক জনের জামা প্যান্টের কাজ করে থাকি। তাতে করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। এলাকার অনেক জনপ্রতিনিধি ক্লাবটি পরিদর্শন করে বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা হাবিবুর রহমান গাইনের ছেলে সংবাদপত্র পরিবেশক মোঃ মোমিন গাইন বলেন, ‘ক্লাবটির বেহাল দশার জন্য বর্তমান কমিটি দায়ী, কর্মকর্তারা কোন রকম খেয়াল করেন না ফলে মুখ থুবড়ে পড়েছে ক্লাবটির উন্নয়ন ও কার্যক্রম। ক্লাবটিকে পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু এমপির সু-দৃষ্টি কামনা করছি।’
এবিষয়ে ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রোস্তম খাঁ বলেন, ‘কমিটির মেয়াদ ৩ বছর আগে শেষে হয়েছে, নতুন করে কমিটি করা হয়নি। তাছাড়া ক্লাব উন্নয়নের জন্য আগের এমপির কাছে আবেদন দিয়ে ছিলাম কিন্তু কোন বরাদ্দ আসেনি।’
পাইকগাছা উপজেলা আনছার ভিডিপির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোছাঃ আশালতা খাতুন বলেন, ‘মেয়াদ উত্তির্ণ কমিটি দিয়েই কার্যক্রম চলছে। সদস্যরা কাজপত্র নিয়ে আমার কাছে আসলে আমি কমিটি করার উদ্যোগ নেব। তাছাড়া কøাব উন্নয়নে বর্তমানে কোন সরকারি বরাদ্দ নেই।’

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/এইচ এম এ হাশেম/কপিলমুনি


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক