তালায় মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের খবরে দৌড়-ঝাপ শুরু

প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২০ | আপডেট: ৭:৫৩:অপরাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২০

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্নীগ্ধা খাঁ বাবলির বিরুদ্ধে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ-২, প্রজেক্ট (এনএটিপি-২) মৎস্য অধিদপ্তরের সিআইজি কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ প্রদর্শনী প্রকল্প নিয়ে সংবাদ প্রকাশে অফিসের ভেতরে-বাইওে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মূল ঘটনাকে আাঁড়াল ও নিজেকে নির্দোষ প্রমানে ইতোমধ্যে অফিসের ক্ষেত্র সহকারী রফিজ উদ্দীন সরদারকে দিয়ে মহলবিশেষ দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট সিআইজি সমিতির নেতৃবৃন্দদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন প্রকৃত তথ্য সরবরাহ না করতে। এছাড়া স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতেও মাঠে নেমেছেন একটি মহল।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

অভিযোগে জানাযায়, প্রকল্পের অধিনে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মোট ২৪টি পুকুরে সিআইজি কার্প জাতীয় মাছের চাষ হচ্ছে। প্রকল্পে প্রতিটি পুকুরে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও প্রতিটি থেকে মাছসহ অন্যান্য খাদ্য উপকরণের ভাউচার থ্রো করে প্রায় ৯ হাজার টাকা করে আতœসাতের অভিযোগ করেছেন, সংশ্লিষ্ট উপকারভোগীরা। এনিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশে মূলত গাত্রদাহ শুরু হয়েছে তাদের।
এরআগে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্যানুসন্ধানে উঠে আসে যে, তালা মৎস্য অফিস কর্তৃক ২৪টি সিআইজি সমিতির অনুকুলে ২৪ টি পুকুরে মৎস্য চাষের জন্য প্রতিটি ২০ হাজার টাকা হারে মোট ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়।

যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৮মে ২০২০ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্নীগ্ধা খা বাবলি ২৪টি সমিতির প্রতিটির অনুকুলে ১মন কার্প জাতীয় মাছ, ৮বস্তা (২৫ কেজির) ফিস ফীড এবং সাইন বোর্ড ক্রয় করে সমিতির সদস্যদের মাঝে বিতরন করেন। সূত্র জানায়,প্রতিটিতে প্রদেয় মাছের দাম সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা, খাদ্য উপকরণ ৫ হাজার ৬শ’ টাকা,সাইনবোর্ড সর্বোচ্চ ৩ শ’ টাকা সব মিলিয়ে ৯ হাজার ৯শ’ টাকা। বরাদ্দের বাকি টাকা কোথায় এবং কি উদ্দেশ্যে খরচ করা হয়েছে তা জানানো হয়নি।

এপ্রসঙ্গে বিভিন্ন সিআইজি প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানাযায়, তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম ও ভাউচারে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়। তারা আরো জানান যে, অফিসের মাঠ সমন্বয়কারী ক্ষেত্র পরিদর্শক রফিজ উদ্দীন উক্ত উপকরণ প্রদান করে তাদের কাছ থেকে ঐ স্বাক্ষর আদায় করেন।
এব্যাপারে খলিলনগর ইউনিয়নের সিআইজি সমিতির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক জানান, তার সমিতির অনুকূলে নির্দ্ধারিত পুকুরে যে মাছ দেওয়া হয়েছে তার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ হাজার টাকা ও আট ব্যাগ (২৫ কেজির) মেঘা ফিড যার দাম ৫ হাজার ৬শত টাকা ও একটি সাইনবোর্ড যার মূল্য ৩শত টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া মাছ (পাকাকরণ) নার্সিং না করায় তা অবমুক্ত’র কিছুদিন পরেই তাদের পুকুরের প্রায় অর্ধেক মাছ মরে ভেসে ওঠে।

এপ্রসঙ্গে অপর সিআইজি সমিতির পুকুর মালিক প্রকাশ দেবনাথ জানান, ১মন কার্প জাতীয় মাছ, ২৫ কেজির ৮ বস্তা খাবার ও একটি সাইন বোর্ড দিয়ে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বাজারে তাদের প্রদত্ত উপকরণের দাম সর্বোচ্চ ১০/১১ হাজার টাকা হবে। বিভিন্ন সিআইজির নেতৃবৃন্দ একই অভিযোগ করেছেন।
সূত্র জানায়, অভিযোগের তথ্যমতে উপজেলার পাটকেলঘাটাস্থ মেসার্স জাকির ট্রেডার্স থেকে উক্ত মেঘা ফিড ট্রেডের প্রতিটি পুকুরের জন্য ৮ বস্তা (প্রতিটিতে ২৫ কেজি) ক্রয় করা হয়। যার বস্তার গায়ে প্রতি কেজির দাম ৩২ টাকা লেখা থাকলেও বাজার মূল্য ৭ শ’ থেকে সাড়ে ৭ শ’ টাকা বলে জানাযায়।

সূত্র মতে, ২৪টি সিআইজি পুকুরে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও মূলত প্রতিটি পুকুরে সর্বোচ্চ ১১হাজার টাকার মাছসহ মালামাল প্রদানে সর্বমোট ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে ভাউচারে বরাদ্দের সমুদয় টাকা খরচ দেখানো হলেও মূলত বাকী টাকা আতœসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে জানানো হয়।
এপ্রসঙ্গে তালা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্নীগ্ধা খা বাবলির কাছে জানতে চাইলে, প্রথমত তিনি কোন প্রকার তথ্য প্রদানে অস্বীকার করেন। এসময় তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিষয়টি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নিকট জানলে তিনি ভাল বলতে পারবেন। তাছাড়া একটি ট্রেনিংয়ে থাকায় পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
চলবে………


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। তালা, সাতক্ষীরা