ঘের ব্যবসায়ী মধু-মোস্তাকের নির্যাতন ও অত্যচারে খরাইল ভবানীপুর এলাকার সংখ্যালঘুসহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ

প্রকাশিত: ৭:৪০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০১৯ | আপডেট: ৭:৪০:অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০১৯

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

নিজস্ব সংবাদদাতা:
মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী কেশবপুর উপজেলার মধু মোস্তাকের নির্যাতন ও অত্যাচারে তালা উপজেলার খরাইল ও ভবানীপুর এলাকার সংখ্যালঘুসহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এমনি অভিযোগ এনে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের দেবেন্দ্র নাথ সরদার ।
লিখিত বক্তব্যে দেবেন্দ্র নাথ সরদার বলেন, কপোতাক্ষ নদী ভরাটের ফলে ২০০৯ সালে অতিবৃষ্টির কারনে কপোতাক্ষ পাড়ে লাখ লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়ে। বছরে প্রায় ৬মাস জলাবদ্ধতা থাকতো এলাকায় চাষী জমিতে কোন ফসলাদি হতো না। এলাকার চাষীরা সম্মিলিত ভাবে জলাবদ্ধ এলাকাকে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে কামরুল ইসলাম মধু এবং সামাদ সরদারের ছেলে মোস্তাক আহম্মেদকে ইসলামকাটী ইউনিয়নের খরাইল বিলের ২৫০ বিঘা জমি ৬ বছর মেয়াদে বার্ষিক ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে লিজ দেওয়া হয়। যার চলতি বছরের চৈত্র মাসে ৬ বছরের চুক্তি মেয়াদ মাসে শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরসন হওয়ায় চাষীরা ধান ও সবজি ফলানোর জন্য কোন মৎস্য ঘের দিতে রাজি না। কিন্তু তিনি আবার খরাইল বিলের ২৫০ বিঘা জমি মৎস্য ঘের করার লক্ষে পুলিশ প্রশাসন ও কিছু অসাধু স্বার্থন্বেশী চাষীদের কে হাত করে নতুন চুক্তির পায়তারা চালাচ্ছে।
বর্তমান কপোতাক্ষ নদীতে জোয়ার ভাটা প্রবাহিত হওয়ায় জলাবদ্ধতা কোন সুযোগ নেই। বছরে ৩টি ফসল জমিতে সমান ভাবে চাষ করতে পারছে চাষীরা। কিন্তু ফসলী জমিতে মৎস্য ঘের করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে আসছে এই অসাধু ঘের ব্যবসায়ীরা। চাষীরা মৎস্য ঘের না দিয়ে ধান ফলাতে ইচ্ছুক কিন্তু বাঁধা একমাত্র একাধিক মামলার আসামী যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে কামরুল ইসলাম মধু এবং সামাদ সরদারের ছেলে মোস্তাক আহম্মেদ। তারা গায়ের জোরে প্রশাসনকে অর্থ দিয়ে বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে হুমকি দিয়ে নতুন ডিটে সহি করিয়ে নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ৬ বছরের ডিটে উল্লেখ ছিলো ২৫০ বিঘা ঘেরের পাশে ছোট ঘের থেকে বড় ঘেরে পানি দেওয়া যাবে কিন্তু নেওয়া যাবেনা। তার ঘেরের পাশে আমার ছেলের সঞ্জয় সরদার একটি ৬ বিঘা ঘের রয়েছে যা গত ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার ঘেরের মাছ ধরার জন্য পানি সরানোর প্রয়োজন হলে ছেলে সঞ্জয় সরদার টব ঘেরের পানি স্যালো মেশিন দিয়ে পনি সেচ দেওয়ার সময় মধু মোস্তাকের পোষা পেটুয়া বাহিনী জোর করে স্যালোমেশিন বন্ধ করে দেয়। মেশিন বন্ধ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে মধু ও মোস্তাকের সন্ত্রাসী বাহিনী বাবলু, আয়ুব ও মোস্তাকের ভাইসহ ১০/১২ জন ছেলে সঞ্জয় সরদারকে বেধড়ক মারধর করে। এসময় স্যালোমেশিন পানিতে ফেলে দেয়। এসময় ছেলে সঞ্জয় সরদার আমকে গলাধাক্কা এবং মা চপলা রানী সরদারকে বাবলু লাথি মেরে ফেলে দেয়।
মারধর করার পরে বাড়িতে আসার সময় ঘের হতে ১০০ গজ দুরে আসলে মোস্তাকের ইন্দোনে সন্ত্রাসী বাহিনী বাবলু, আয়ুব ও মোস্তাকের ভাই আবার আমাদেরকে বেধড়ক মারপিঠ করে এবং কাছে থাকা একটি বাটন ফোন কেড়ে নিয়ে তাদের ঘেরের মধ্যে ফেলে দেয়। সঞ্জয় সরদার শারিরিক ভাবে মারাত্মক অসুস্থ হওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্য সুজিত সরদার এর সহযোগীতায় তালা হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসাধীন রয়েছে। মারধরের পর হুমকি দেয় ছেলেকে মেরে ফেলে দিলে আমাদের কেউ কিছুই করতে পারবে না। কারন পুলিশ প্রশাসন আমাদের টাকায় কেনা ।
তিনি আরও বলেন, মধু মোস্তাকের পেটুয়া বাহিনী গত ৬ বছরে খরাইল ও ভবানীপুর এলাকার সংখ্যা লঘুদের উপর অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তার পেটুয়া বাহিনীর ভয়ে এলাকার সাধারন মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায়না। দিনের বেলা তার ঘেরের ভেড়ির উপর দিয়ে গেলে তাৎক্ষনিক তাকে ধরে বেধড়ক মারপিঠ ও নির্যাতনের নজির রয়েছে এলাকাতে।
এমন অত্যচার ও নির্যাতনের অভিযোগ পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে জানালেও কোন ন্যায় বিচার পাওয়া যাচ্ছে না তার কালো টাকার জন্য। মধু ও মোস্তাকের নির্যাতন অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই যেতে আজ এই সংবাদ সম্মেলন এতেও যদি কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা না হয় তাহলে আগামী দিনে মানববন্ধনসহ আরো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দেবেন্দ্র নাথ সরদার । তিনি বর্তমান ঘেরটি উন্মুক্ত তাদের উপর যে নির্যাতন করা হয়েছে সেব্যাপারে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/সেলিম হায়দার/তালা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক