ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকূলে উত্তাল হয়ে উঠেছে নদ-নদী

প্রকাশিত: ৮:৩০ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২০ | আপডেট: ৮:৩০:অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২০

১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

শেষ রাতে কিছুটা গতিপথ পরিবর্তন করে সূন্দরবন উপকূলের দিকে ধেয়ে সুপার সাইক্লোন আম্ফান।  আম্ফানের প্রভাবে সাতক্ষীরা উপকূলে উত্তাল হয়ে উঠেছে নদ-নদী। সময় যতই এদিয়ে আসছে সাথে সাথে ঝড় হাওয়া ও জোয়ারের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে।

জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, সুপার সাইক্লোন আম্পানের কবল থেকে রক্ষা পেতে জেলায়  ১ হাজার ৮৪৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রো খোলা হয়েছে। বুধবার সকাল পযন্ত এসব আশ্রায় কেন্দ্র ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন । এছাড়া  ১৩ হাজার ৮৩০ টি গবাদিপশু আশ্রায় কেন্দ্রে আনা হয়েছে ।

বুধবার সকাল পযন্ত শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা থেকে গাবুরায় ৮ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাকী মানুষ ইতোমধ্যে আত্মীয়-স্বজনসহ নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। সবাই এখনও পযন্ত নিরাপদে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজর গিফারী।

তিনি আরোও জানান, উপকূলে ইতোমধ্যে ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি হওয়ায় সকাল থেকে স্থানীয় মানষদের উদ্ধার কাজও  কিছুটা বিঘ্নত হচ্ছে । এজন্য ৫০টি বাস ও ১০০ ট্রলার রেডি করা হয়েছে। 

জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, সাতক্ষীরা জেলায়  ১ হাজার ৮৪৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রো খোলা হয়েছে। জেলা সাত উপজেলায় বুধবার সকাল পযন্ত এসব আশ্রায় কেন্দ্র ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন । এছাড়া  ১৩ হাজার ৮৩০ টি গবাদিপশু আশ্রায় কেন্দ্রে আনা হয়েছে ।

এদিকে, সুপার সাইক্লোন আম্ফানের বিষয়ে সতর্ক করে উপকূলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বত্র মাইকিং করছে সিপিপি সদস্যরা। তোলা হয়েছে লাল ফ্লাগ।

উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা, পদ্মপুকুরসহ অন্যান্য ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কাজ শুরু করেছে প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি, নৌ বাহিনী, কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিস।

এদিকে, সুপার সাইক্লোন আম্পানের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে জেলার  ১ হাজার ৮৪৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র। মানুষকে সতর্ক করে চলছে মাইকিং। শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা, পদ্মপুকুরসহ অন্যান্য ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কাজ করেছে উপজেলা প্রশাসন।  

যদিও ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাধ নিয়ে আতংকে আছে উপকূলের মানুষ। শ্যামনগর ও আশাশুনির অন্তত ৪৩টি পয়েন্টে বেড়িবাধ জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যা মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ডাম্পিং করার কাজ অব্যাহত রেখেছে। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, সুপার সাইক্লোন আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ প্রত্যেক ইউনিয়নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সর্বত্র মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং চলছে। লাল ফ্লাগ উত্তোলন করা হয়েছে। দুর্গতদের জন্য ২৫০ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে।

তিনি আরোও জানান, প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে মাস্ক ও সাবানের ব্যবস্থা আছে এবং আইসোলেসন রুমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্যে  শুকনো খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে, জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি, নৌ বাহিনী, কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিস দুর্যোগ পূর্ব উদ্ধার কাজ করেছে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স