সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে লন্ডভন্ড সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল: শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

প্রকাশিত: ২:১৯ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২০ | আপডেট: ৫:৫১:অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২০

সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল। এরইমধ্যে উপকূলীয় এলাকার বাঁধগুলোর ১৮ টি পয়েন্ট ভেঙে গেছে। যার ফলে ওইসব এলাকার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে বিধ্বস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, উপড়ে পড়েছে গাছপালা। এতে ওইসব এলাকার মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও ঝড়ের কবলে পড়ে সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকালে বিষয়টি জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

জানা যায়, কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদী সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়াতে বাঁধের আশপাশের গ্রামগুলোর নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই এলাকার পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বাঁধের আশপাশের কাচা ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পরেছে এবং কাচা ‍বাড়িঘর ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এলাকার গবাদি পশু। এছাড়া, গাছপালাও বিধ্বস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াতে ওই এলাকার সকল মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে এসব মৎস্য ঘেরের মাছ।

এদিকে, ভাঙা বাঁধ দিয়ে পুনরায় জোয়ারের পানি ঢুকে আবারও লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই বাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। সুন্দরবন উপকূলের জেলেদের ট্রলার ও মাছ ধরা নৌকাকে আগেভাগেই জেলা প্রশাসন ও নৌবাহিনী সরিয়ে নিয়েছে বলে তাদের ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হয়েছে।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর আলিফ রেজা জানান, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদী সংলগ্ন বেড়িবাঁধের ১৫ পয়েন্ট ভেঙে ওই অঞ্চলের প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আনুলিয়া ও খাজরা ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া, চাকলা, দিঘলারাইট, কুড়িকাউনিয়া, হিজলা, কোলা, শ্রীউলা, হাজরাকালি, দয়ারগাট, বিছট, বাহাদুরপুর গ্রামসহ আরও অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন ও শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, ইউনিয়নের কাঁচা ঘরবাড়িঘর ভেঙে গেছে, কোনগুলো ধসে পড়েছে। উরে গেছে ওইসব বাড়ির টিনের চাল।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী বলেন, বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, পদ্মপুকুর ও রমজাননগর ইউনিয়নের উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ওইসব এলাকার মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকার বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স