বাংলাদেশের একজন আর্তমানবতার বন্ধু ফাদার রিগনের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০ | আপডেট: ২:৩৫:অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০
বাংগালির চির বন্ধু ফাদার মারিনো রিগনি।

একজন বিজাতী বিদেশী মানুষ হিসেবে শুধু মানুষের সেবা সুস্রসা আর শিক্ষা চিকিৎসায় সাবলম্বি কারা জন্যে বাংলাদেশে এসেছিলে বটে।থেকেও গেলেন এদেশের মাটির সাথে মিশে। এমই একজন বাংগালির চির বন্ধু ফাদার মারিনো রিগনি। ইটালিয়ান বংশদ্ভুত এই দোভাষি নিজের দেশে যেতেন বেড়াতে চির বাসীন্দা হলো বাংলাদেশে।এমনকি মৃত্যুর পরেও তার লাশ চিকিৎসা রত দেশ থেকে আনা হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে।এ দেশ প্রেম চির অম্লান থাকবে ইতিহাসের পাতায়।যখনি তার কাছে কোন আর্ত পিড়িত মানুষ এসেছেন কখনো জিগ্গেস করেননি ধর্ম অকাতরে দিয়েছেন দু হাত ভরে হোক চিকিৎসা হোক শিক্ষা কিংবা অন্য কোন দান।যে ঋণ শোধ করা যায়না কোন দিন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

আজ ২০ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু, শিক্ষানুরাগী, কবি-সাহিত্যিক-অনুবাদক ফাদার মারিনো রিগন এস এক্স-এর তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী। ইতালিয়ান নাগরিক ফাদার মারিনো রিগন যাজকীয় দায়িত্বপালনের অংশ হিসেবে ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশ’র মোংলার মালগাজী গ্রামে প্রথমে আসেন। ফাদার মারিনো রিগন যাজকীয় দায়িত্ব পালনের বাইরে এসে ইতালিয়ান ভাষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিসহ ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, লালন সাঁইয়ের সাড়ে তিনশো গান, জসিম উদ্দিনের নক্সীকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট ছাড়াও এদেশের গুরুত্বপূর্ণ কবিদের অসংখ্য কবিতা অনুবাদ করেছেন।

 

ফাদার মারিনো রিগনকে বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করেন। এছাড়া ফাদার রিগন ১৯৮২ সালে কবি জসিম উদ্দিন একাডেমী সাহিত্য পুরস্কারসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫৩ সালে ফাদার মারিনো রিগন বাংলাদেশে আসার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে অবশেষে মোংলার শেলাবুনিয়ায় ৪০ বছরের স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন। তাঁর হাত দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মোংলার স্বনামধন্য স্কুল সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়সহ ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফাদার মারিনো রিগন উন্নততর চিকিৎসা গ্রহণের জন্য ইতালিতে থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফাদার রিগনের অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ি মৃত্যুর এক বছর পরে ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর তাঁর মরদেহ দেশে এনে মোংলার শেলাবুনিয়াতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

 

ফাদার মারিনো রিগনের তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট মোংলা, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং সেবা সংস্থার পক্ষ থেকে ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করবে এবং বিকেল ৪টায় মালগাজী মিশন বাড়ীর মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

ম.ম. রবি ডাকুয়া। প্রতিবেদক। বাগেরহাট, খুলনা