পাইকগাছায় প্রভাষকের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৯ | আপডেট: ১১:১২:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাইকগাছা(খুলনা):
পাইকগাছা সরকারি কলেজের প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু প্রথম স্ত্রী প্রভাষক রেবা আক্তার কুসুমকে শারীরিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার বিকালে নিজ বাসভবনে মারপিট করলে স্ত্রী কুসুম রক্তাক্ত আহত হয়। পরে তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ মন্টুকে থানায় তলব করেছে। একজন শিক্ষকের এহেন আচারণে সচেতন এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

জানাগেছে, পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড বাতিখালী গ্রামের প্রাক্তন অধ্যক্ষ লুৎফর রহমানের ছেলে ও পাইকগাছা সরকারি কলেজের ইংরেজী প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু (৪৬) ৬নং ওয়ার্ডের মৃত এ্যাডঃ স ম ইউসুফ আলীর মেয়ে ও গড়ইখালী শহীদ আইয়ুব ও মুসা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রেবা আক্তার কুসুম (৪৫) কে ১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করে। প্রথম দিকে তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন কলহ না থাকলেও ২০০৯ সালের পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয়। ওই সময় মন্টু জনৈকা এক এনজিও কর্মীকে বিবাহ করেছে এমন অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে ওই নারী স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ সহ দ্বারে দ্বারে ঘুরতে দেখা গেছে। যদিও ওই নারীর অভিযোগ মন্টু অস্বীকার করে আসছে। এরপর ২০১৬ সালের দিকে একই কলেজের অর্থাৎ পাইকগাছা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক সুলতানা জাহান পান্নাকে মন্টু বিয়ে করে। যার ফলে মন্টু ও কুসুমের দাম্পত্য জীবনে কলহ প্রকট আকার ধারণ করে। বর্তমানে কুসুমের দুইটি ছেলে রয়েছে, বড় ছেলে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফাইনালে এবং ছোট ছেলে খুলনা পাবলিক কলেজ থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। অপরদিকে মন্টু সুলতানাকে নিয়ে পৌর সদরের একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন বলে জানা যায়।
স্ত্রী রেবা আক্তার কুসুম অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে মন্টু আমার সাথে দুর্ব্যবহার এবং শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। সম্মানের দিকে তাকিয়ে আমি অনেক ব্যথা ও যন্ত্রণা নিজের মধ্যে চেপে রেখেছিলাম। শনিবার বিকাল ৫টার দিকে বাড়ীতে আসলে তার সাথে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কথা হয়। এসময় আমি তাকে বিদ্যুতের মিটারটি পরিবর্তনের কথা বললে সে আমাকে বাড়ী থেকে বের করে দেওয়া সহ অকথ্য অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন আমি তাকে বলি তুমি আমার সাথে এমন খারাপ ভাষায় কথা বলছো কেনো। তখন সে আমাকে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে সজরে আমার মুখে আঘাত করলে সিঁড়িতে পড়ে যায়। এরপর লোকজন আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

কুসুমের একমাত্র ভাই ব্যাংক কর্মকর্তা হাদিছুজ্জামান জানান, মন্টু দীর্ঘদিন আমার বোনকে অমানষিক নির্যাতন করে আসছে। যার ধারাবাহিকতায় শনিবারও সে বেদম মারপিট করে। বর্তমানে বোন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার চোখ ও কানের অবস্থা খুবই খারাপ। বাম চোখ দিয়ে দেখতে এবং বাম কান দিয়ে শুনতে পাচ্ছে না। বিষয়টি তাৎক্ষনিক মৌখিকভাবে থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ মন্টুকে থানায় তলব করে এবং আমাদেরকে দ্রুত চিকিৎসা করার পরামর্শ দেয়। চিকিৎসা শেষে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে পুলিশ আমাদেরকে আশ্বস্থ করেছে। বোন একটু সুস্থ্য হওয়ার পরে এ ঘটনায় মামলা করা হতে পারে বলে ভাই হাদিছুজ্জামান জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু জানান, ঘটনার দিন বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কুসুমের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমি তাকে একটা চড় মেরে ছিলাম। তবে কোন গুরুতর আঘাতের ঘটনা ঘটেনি। এরপর ওসি সাহেবের সাথে দেখা করে আমি হাসপাতালে কুসুমকে দেখতে গিয়েছি। তাকে শারীরিক এবং মানষিক নির্যাতনের বিষয়টি আদৌ সঠিক নয়।

ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, তারা উভয়ই বিষয়টি অবহিত এবং অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলেছে। আমি তাদেরকে চিকিৎসা থেকে অভিযোগ কিংবা মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/আমিনুল ইসলাম বজলু/পাইকগাছা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক