পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কলারোয়ার চন্দনপুর কলেজের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত

প্রকাশিত: ৯:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০ | আপডেট: ৯:৫৩:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর অবশেষে নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে কলারোয়ার চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজে। একই সাথে ওই বিষয়ে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক কারণ দর্শানোরা আদেশ জারি করেছেন। ২৪জানুয়ারী শুক্রবার কলারোয়া সরকারি কলেজে ওই নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। ২২ ও ২৩জানুয়ারী পাঠকপ্রিয় দৈনিক পত্রদূত, কালেরচিত্র, কলারোয়া নিউজসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষার আগে নিয়োগ প্রার্থীদের চূড়ান্ত ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ওই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

জানা গেছে- কলারোয়ার চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজে কয়েকটি পদে নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই অর্থ বানিজ্যের অভিযোগে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন
দপ্তরে অভিযোগ দেন সংক্ষুব্ধরা। পাশাপাশি উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের কাদপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদের পুত্র জাহিদ হাসান বাদি হয়ে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ আদালতে মামলা (দে.৬/২০২০) দায়ের করেন। এতে চন্দনপুর কলেজের অধ্যক্ষসহ কয়েকজনকে বিবাদী করা হয়। বৃহষ্পতিবার (২৩জানুয়ারী) শুনানী শেষে সাতক্ষীরায় কলারোয়া সহকারী জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ৭দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ প্রদান করেন। আদেশে বলা হয়েছে- ‘বাদী পক্ষের প্রার্থনা মোতাবেক কেন বিবাদী পক্ষের প্রতি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ প্রদান করা হইবে না তদমর্মে অত্র নোটিশ প্রাপ্তির ৭ (সাত) দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বিবাদী পক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হইলো।’

এদিকে, একইদিন চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় ওই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান। উল্লেখ্য, চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, একজন ল্যাব সহকারী (তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তি) ও একজন ল্যাব সহকারী (২য় পদ) পদে নিয়োগের জন্য গত ২৭নভেম্বর ২০১৯সালে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। সেখানে পদের প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা হয়নি। ব্যাংক ড্রাফটের কথা থাকলেও কোন ব্যাংকের শাখায় ড্রাফট করতে হবে সেটাও উল্লেখ নেই। ইতোমধ্যে ওই পদগুলোতে অনেকগুলো আবেদন জমা পড়লেও নিয়োগ দেয়ার জন্য সুমন হোসেন, আসমাউল হুসনা, মিলন হোসেন ও সাইফুল্যাহ’কে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই নিয়োগের নিশ্চয়তা দিয়ে
অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ আনেন সংক্ষুব্ধ অপর প্রার্থী ও এলাকার কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি।

অভিযোগে আরো বলা হয়- উল্লেখিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ বানিজ্যের মাধ্যমে যোগসাজশ করে তাদের নিয়োগ দেয়ার পায়তারা চলছে। চন্দনপুর কলেজের
সুউচ্চ ভবন ও সুন্দর পরিবেশ থাকলেও এলাকার মানুষের চাহিদাকে অগ্রাহ্য করে আগামি ২৪জানুয়ারী শুক্রবার সকালে ওই নিয়োগ বোর্ড করা হচ্ছে কলারোয়া
সরকারি কলেজে। এখানেও প্রশ্ন উঠেছে এলাকার মানুষের কাছে।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা গেছে- ২০১৮সালের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে যে, কলেজে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ল্যাব আছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ কর্তৃক প্রত্যয়নপত্রের দ্বারা নিশ্চিত হয়ে ডিজির প্রতিনিধি
নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। কিন্তু বুধবার (২২জানুয়ারী) পর্যন্ত কোন বিশেষজ্ঞ চন্দনপুর কলেজের ল্যাব পরিদর্শন করেননি। অর্থাৎ বাস্তবে এখন
পর্যন্ত সরেজমিনে ল্যাব পরিদর্শনপূর্বক প্রত্যায়ন নেয়া হয়নি। তবে কোন বিশেষজ্ঞ দ্বারা যদি প্রত্যায়ন নেয়া হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রেও জালজালিয়াতীর আশ্রয় নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা নিয়োগ বানিজ্যের আশংকা প্রকাশ করে কয়েকটি দপ্তরে দরখাস্ত দেন। পাশাপাশি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ বোর্ড নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ২৪তারিখে বোর্ড স্থগিতের দাবি জানিয়েছিলেন।

সেলফোনে এ বিষয়ে অধ্যক্ষ গাজী রবিউল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন- ‘যে কেউ অভিযোগ দিতে পারে। নিয়োগ বোর্ড যেখানে
খুশি করি।’ অর্থ বানিজ্যের অভিযোগটি অস্বীকার করে তিনি এটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন।

সুন্দরবনটাইমস.কম/ডেক্স

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক