দুবলর চরে প্রস্তুতি চলছে শুটকি তৈরীর মহোৎসবের

প্রকাশিত: ১:৫৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৪, ২০২০ | আপডেট: ১:৫৬:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৪, ২০২০

সুন্দরবন সংলগ্ন দুবলার চরে চলছে শুটকি তৈরীর প্রস্তুতির মহোৎসব। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় আশাবাদি ব্যবসায়ি সহ জেলে বহদ্দাররা। শতাধিক প্রজাতির এ শুটকি দেশের চাহিদা মিটিয়েও রপ্তানী করা হবে দেশের বাইরে। প্রশাসনের নিরবিচ্ছিন্ন তদারকিতে এবং দস্যু মুক্ত ঘোষনায় অনেক সস্তিতে আছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

বাগেরহাট জেলা থেকে মোংলার অদুরে সুন্দরবনের গা ঘেষে বঙ্গোপসাগরের হিরনপয়েন্ট-জাফরপয়েন্ট এলাকায় দুবলার চর ও চর আলোরকোল কিছু ভাগ্যাহত মানুষের ভাগ্যের অন্নেষন জিবিকা ,রুটি-রুজি কিংবা বার্ধক্যের পুজি সবি যেন এ সাগর আর চরকে ঘিরে।জিবন জুড়ে চলে যেন মৎস্য শিকারের এক আপ্রাণ প্রাণবন্ত এবং অফুরন্ত প্রচেষ্ঠা। শুটকি মৌসুমের শুরুতেই তারা শুরু করছের অস্থায়ী আবাসন গড়ার কাজ কেউ তৈরী করছেন মাছ শুকানোর মাচা,কেউবা মেরামত করছেন নিজ নিজ জলযান ও নৌকা সমুহ। এ যেন তাদের জীবন জীবিকার শ্রেষ্ট উৎসব। যেখানে এক সময় হানা দিত দস্যু নামের এক বিভিষিকা কেড়ে নিতে জাল-দড়ি এমনকি জিবন ও দিতে হয়েছে অনেককে। সব উপেক্ষা করে এবারও তারা সবাই ব্যস্ত হয়ে উঠেছে সাগর এলাকায় মাছ ধারতে ও শুকাতে।দেশের একমাত্র পাইকারী শুটকি বাজার মোকাম চট্রগ্রাম সহ অনেক বিদেশী রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠানও মুখিয়ে তাদের দিকে। জেলেদের জালে ধরা পড়া মাছের মধ্যে রয়েছে লইট্টা, ছুরি, রূপচাঁদা, খলিসা, ভেদা, পোয়া ,দাতনা, মেদ, কাইন, জাবা, লাক্ষা, ভোলা, ঢ্যলা, নানান প্রজাতির চিংড়ি সহ শতাধিক প্রজাতির মাছ।

দুবলর চরে প্রস্তুতি চলছে শুটকি তৈরীর মহোৎসবের

সব মাছ রোদে প্রাকৃতিক ভাবে শুকিয়ে বাজার জাত করা হয়। তবে এ শুকানো প্রকৃয়া কাজে কয়েক ধরনের প্রকৃয়ার লোক জড়িত আছে জেলেরা শুধু মাছ ধরে তার পর একদল কিনে তা শুকায় অন্য একদল শুকনা মাছ কিনে আবর বাজার জাত করে এভাবে প্রায় চাঁর/পাঁচ হাত ঘুরে এ শুটকি রপ্তানী হয়ে থাকে যাতে দেশের ব্যবসায়ী লাভবান সহ বৈদেশীক মুদ্রও অর্জিত হচ্ছে।সাগর এলাকায় প্রায় ১৫ টির অধিক চরাঞ্চল রয়েছে সেগুলো হচ্ছে দুবলা, মেহের আলী, আলোরকোল, অফিস কিল্লা, মাঝির কিল্লা, শেলার চর, নারকেলবাড়িয়া, মানিকখালী, ছোঠ আমবাড়িয়া, বড় আমবাড়িয়া, কবরখালী, কোকিলমনি, চাপড়াখালী।

 

স্থানীয় জেলেদের মতে, দক্ষিণঅঞ্চলের সাতক্ষীর,খুলনা,পাইকগাছা,পিরোজপুর,বরগুনা,রামপাল ও মোংলা সহ এর আশ পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন শুটকি কাজে এ চরে ভিড় জমায়। তারা এসব চরে এসে অস্থায়ী আবাস স্থল গড়ে তোলে এবং প্রায় ৬মাস বাস করার পর সব বাসা ঘর এমন ভাবে ভেঙ্গে নিয়ে যান যেন কোন চিহ্ন মাত্র থাকেনা। তবে প্রকৃতিক দূর্যোগ থেকে বাচাঁর জন্যে একটু শক্ত আবাস স্থল নির্মনের দাবি এ কাজে জড়িতদের অনেক দিনের। নদী-সাগর এলাকায় নিরাপত্তা প্রদানকারী কোষ্ট গার্ড জানিয়েছে তাদের টহল দল সর্বদা নজরদারী করে যাচ্ছে যাতে জেলেদের কোন রকম অসুবিধা না হয় এছাড়াও পরিবেশ দূষন মুলক কোন কাজ যাতে না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে । এছাড়াও প্রতি বছর দুবলার চরে শিশু শ্রমের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে থাকে কোষ্টগার্ড। তবে এসব শুটকি কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সবাই প্রস্তুতকৃত শুটকি পরিবহনে সু ব্যবস্থা কামনা করছে যাতে কম খরচে এবং নিরাপত্বার সাথে তাদের উৎপাদিত পন্য পাইকারী মোকামে পৌছাতে পারে নির্বিঘ্নে। তাহলেই সঠিক দাম পেতে পারবে তারা। এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শুটকি কাজে নিয়োজিত সকলে।


আপনার মতামত লিখুন :

ম.ম. রবি ডাকুয়া। প্রতিবেদক। বাগেরহাট, খুলনা