চুকনগরে নরনিয়া এনডিএস মহিলা মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রকাশিত: ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০ | আপডেট: ১০:৪৩:পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, চুকনগর(খুলনা):
চুকনগরে নরনিয়া এনডিএস মহিলা মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরীর বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনে চরম অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাধরুমের একটি মোটরও চুরি হয়ে গেছে বলে জানা যায়। এঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাধিকবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরজমিনে গেলেও তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে মাদক সেবন, কমিটির একাধিক সভাপতিকে অপমান ও শিক্ষককে লাঞ্চিত করার অভিযোগও রয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

জানাযায়, ডুমুরিয়া উপজেলার নরনিয়া গ্রামের মৃত এবাদ আলী মোড়লের পুত্র আরশাফ মোড়ল দীর্ঘদিন ধরে নরনিয়া এনডিএস মহিলা মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরীর চাকুরী করে আসছে। কিন্তু চাকুরীর শুরু থেকেই তিনি স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার কারণে প্রভাব খাঁটিয়ে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে নিজের ইচ্ছামত রাতে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্বে অবহেলার কারণে গত ৬মাস আগে বাধরুমের একটি মোটরও চুরি হয়ে যায়। নিয়ম হলো নৈশ্য প্রহরী দিনের সূর্য অস্ত যাওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করবে এবং সকালে সূর্য উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা, ৬টা ৩৫মিনিট ও ৭টার দিকে মোট তিনবার স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নৈশ্য প্রহরী আরশাফ মোড়লকে খুঁজে পাননি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিততে লোকজন নিয়ে মাদক সেবন করা, শিক্ষক আব্দুল মান্নানকে অন্য শিক্ষকদের সামনে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ ও লাথি মারতে উদ্যত্ত হওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

 

শিক্ষক আব্দুল মান্নান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ভাই আমরা দূর্বল প্রকৃতির মানুষ। তাই আরশাফের সকল অপমান অপদস্থ মুখ বুজে সহ্য করি। কমিটির সাবেক সভাপতি মরহুম এম এম শাহাবুদ্দিন ও বর্তমান ৪বারের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবকে অপমান করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। এব্যাপারে মাদ্রাসা ম্যানেজিং সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আরশাফ একজন মাদক আসক্ত ব্যক্তি।

 

সে বিভিন্ন সময়ে রাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে লোকজন নিয়ে মাদক সেবন করে। তাকে মাদকসহ একবার মাদ্রাসার ভিতর থেকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু গ্রামবাসী মিলে তার চাকুরীর কথা চিন্তা করে তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। আরশাফ একটি মোটর সাইকেল চুরির মামলার ১নং আসামী। মাদকাসক্ত আরশাফ ইতোপূর্বে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও একজন শ্ক্ষিককে অপমান করেছে। গতকাল আমাকেও অকথ্যভাষায় গালিগালাজ সহ অপমান করেছে। ইতোপূর্বে আমি তার বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় একটি মানহানীর অভিযোগও করেছি। সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে একটি রুমে ছাগল পালন করে। এতে পরিবেশ নষ্ট হ্েচছ। মেয়েরা দূর্গন্ধের কারণে আমার কাছে অভিযোগ করেছিল। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে তাকে নিষেধ করলেও তা কর্ণপাত করেনি। তাছাড়া তার প্রধান হাতিয়ার হল তার দুই স্ত্রী। কোন কিছু ঘটলেই স্ত্রীদের লেলিয়ে দেন। তারাই আগে লাঠিসোটা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।

 

এক কথায় বলা যায়, নরনিয়া গ্রামে এক আতঙ্ক পরিবারের নাম আরশাফ পরিবার। মাদ্রাসার সুপার মাওঃ গোলাম মোস্তফা জানায়, যেহেতু আমরা বাইরে থেকে এসে শিক্ষকতা করি। একারণে রাতে সে ঠিকমত দায়িত্ব পালন করে কিনা সেটা আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না। তবে যদি দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়। তাহলে অবশ্যই আরশাফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এব্যাপারে নৈশ্য প্রহরী আরশাফ হোসেন বলেন, সন্ধ্যার পর আমি আমার স্ত্রীকে রুমের ভিতরে রেখে ভাত খেতে ও দোকানে যাওয়ার কারণে আপনারা আমাকে খুঁজে পাননি।

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/গাজী আব্দুল কুদ্দুস


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক