খুমেক হাসপাতালের জ্বাল মেডিকেল সনদে মিথ্যা মামলা দায়ের

প্রকাশিত: ৯:৩২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯ | আপডেট: ৯:৩২:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯

তালার ইউপি সদস্য সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

এম এ মান্নান তালাঃ
ভূয়া মেডিকেল সনদ দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে যেয়ে উল্টো ফেঁসে গেছে তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নিমাই সানা সহ একাধিক ব্যক্তি। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অসাধু ডাক্তার, কর্মচারী ও দালালদের সহযোগীতায় গুরুতর অপরাধ সংশ্লিষ্ট জ্বাল মেডিকেল সনদ নিয়ে তারা দফায় দফায় প্রতিপক্ষদের নামে হয়রানীমূলক মামলা করে। পরে ভুক্তভোগীরা জ্বাল মেডিকেল সনদের ঘটনায় প্রতারকদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করায় এখন ফেঁসে গেলো ইউপি সদস্য নিমাই সানা সহ প্রতারক চক্রের সদস্যরা। বিজ্ঞ আদালত ইতোমধ্যে ইউপি সদস্য নিমাই সানা সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন।
তালার মেশেরডাঙ্গা গ্রামের প্রফুল্ল ব্যানার্জীর ছেলে প্রভাষক আদিত্য ব্যানার্জী জানান, ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বিজয়ী ইউপি সদস্য একই গ্রামের মৃত. করুনাময় সানার ছেলে নিমাই সানার নেতৃত্বে একদল দূর্বৃত্ত প্রতিপক্ষ’র সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করে। এঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া নমিতা ব্যানার্জী দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে মারা যায়। এবিষয়ে সেসময় ইউপি সদস্য নিমাই সানা একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ইউপি সদস্য নিমাই সানা ও তার সহযোগী কামনাশীষ মন্ডল সহ অম্বিক মন্ডল গং মামলা থেকে নিজেদের বাঁচাতে এবং পরিকল্পিত ভাবে প্রতিপক্ষদের ফাঁসিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গুরুতর অপরাধে সব্যাস্ত করা যাবে- এমন একাধিক জ্বাল মেডিকেল সনদ সংগ্রহ করে। একাজে খুমেক হাসপাতালের কতিপয় ডাক্তার ও কর্মচারী সহ হাসপাতাল কেন্দ্রিক প্রতারকচক্রের সদস্য রবিউল ইসলাম শিকদার, নারায়ন চন্দ্র মন্ডল, পরিমল সাহা ও মো. শামীম সহ একাধিক প্রতারক সহযোগীতা করে। ওই জ্বাল মেডিকেল সনদগুলোকে পুঁজি করে ইউপি সদস্য নিমাই সানা সহ তার সহযোগীরা প্রতিপক্ষ প্রভাষক আদিত্য ব্যানার্জী সহ একাধিক নিরিহ ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানা ও বিজ্ঞ আদালতে হয়রানীকর একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার অনুসন্ধানে জ্বাল মেডিকেল সনদের বিষয়টি ধরা পড়ে। একই সাথে ওই মেডিকেল সনদগুলোর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় ভুক্তভোগী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী খুমেক হাসপাতালের সুপারকে লিগ্যাল নোটিশ দেন। নোটিশের জবাবে খুমেক হাসপাতালের সুপার গত ৫ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে ১০২৫ নং স্মারকে ওই মেডিকেল সনদগুলো সঠিক নয় বলে প্রত্যয়ন দেন। এর প্রেক্ষিতে মেশেরডাঙ্গা গ্রামের দেবনাথ সরকারের ভুক্তভোগী ছেলে স্বপন দেবনাথ বাদী হয়ে খুলনার বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ইউপি সদস্য নিমাই সানা সহ জ্বাল মেডিকেল সনদের সাথে জড়িতে প্রতারক চক্রের ১৬ জ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি মামলা (সিআর ৪২৯/১৭) দায়ের করেন। এই মামলায় দীর্ঘ শুনানী চলাকালে বিজ্ঞ আদালত চলতি মাসের ১৫ সেপ্টেম্বর ইউপি সদস্য নিমাই সানা সহ প্রতারনার সাথে জড়িত কামনাশীষ মন্ডল ও অম্বিক মন্ডলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়াা জারি করেন।
উল্লেখ্য, ইউপি সদস্য নিমাই সানা সহ এই প্রতারক চক্রের একাধিক সদস্য’র বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে হত্যা সহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা চলমান রয়েছে এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। ইউপি সদস্য নিমাই সানার বিরুদ্ধে একটি মামলায় ইতোমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে চার্জ গঠিত হওয়ায় বিধি মোতাবেক তাকে ইউপি সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করার জন্য ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/এমএ মান্নান/তালা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক