কেশবপুরে টেপুর বিলের ৫ হাজার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২০ | আপডেট: ১০:০৪:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২০

মশিয়ার রহমান:
যশোরের কেশবপুরে টেপুর বিলের পানি নিস্কাশন না হওয়ায় ৫ হাজার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দ্রুত পানি নিস্কাশনের দাবিতে কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছে। ১৬ জানুয়ারী যশোরের জেলা প্রশাসক কেশবপুরে আসলে তার কাছে বিল সংলগ্ন এলাকার শত শত কৃষক ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের জোর দাবি জানান। এ সময় তিনি ঘের মালিককে দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করানোর জন্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু জেলা প্রশাসকের নির্দেশ এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

কৃষকরা অভিযোগ করেন, কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বন্যাকবলিত হাসাডাঙ্গা, নাগোরঘোপ, চিনাটোলা, মধ্যকুল, রতনদিয়া, হাবাসপোল গ্রামসহ ৮ থেকে ১০ গ্রামের সীমান্তবর্তী স্থানে প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমি নিয়ে টেপুরবিল অবস্থিত। এলাকাবাসি ওই বিলের একমাত্র ফসল বোরো ধান উৎপাদন করে সারা বছর খেয়ে পরে বেঁচে থাকেন। এসব গ্রামের মানুষ অতিদরিদ্র এবং কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। ১০ থেকে ১২ বছর আগে ৩০ শে পৌষের মধ্যে পানি নিষ্কাশন করে কৃষকদের ধান উৎপাদনের সুযোগ করে দেয়ার শর্তে বিলটি লিজ হিসেবে গ্রহণ করেন হাসাডাঙ্গা গ্রামের আবু তালেব মোড়লের ছেলে সুলতান মোড়ল। কিন্তু চলতি বছর ১৪ জানুয়ারী (৩০ পৌষ) পানি নিষ্কাশনের সময় শেষ হয়ে গেলেও এখনও বিলে অথৈই পানি রয়েছে। বিল সংলগ্ন এলাকার কৃষকরা এখনও বোরো বীজতলা তৈরী করতে পারেনি। ওই ঘের মলিক পানি নিষ্কাশনের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় এলাকার হাজার হাজার কৃষি পরিবার হতাশায় ভুগছেন। জলাবদ্ধতার এ সমস্যা নিরসনে গত ১২ জানুয়ারী এলাকার শহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, প্রদীপ দেবনাথসহ শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি ইউএনও’র কাছে দেয়া হয়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জানুয়ারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা সরেজমিনে বিলটি পরিদর্শন করেছেন।
কৃষক শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ওই বিলের উৎপাদিত ধান এলাকার মানুষের সারা বছরের রুটি রুজি। কৃষকরা যখন বিলের পানি নিষ্কাশনের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছেন তখন ওই ঘের মালিক বিলটি বারো মাসের জন্যে লিজ নেয়ার জন্যে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছেন।
ঘের মালিক সুলতান মোড়লের ম্যানেজার দীপঙ্কার বলেন, ওই ঘেরের অনেক কৃষক তাদের জমি বারো মাসের জন্যে ডিড করে দিয়েছে। কিছু কৃষক তা না মেনে বোরো আবাদের জন্যে পানি নিষ্কাশনের দাবি জানি আন্দোলন করছে। যে কারণে সময় মত পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিরসনে অচিরেই কৃষকদের নিয়ে বসা হবে।

এদিকে গত ১৬ জানুয়ারী যশোরের জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আলম মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি, চিংড়া ভূমি অফিস ও কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা পরিদর্শনে আসেন। এ খবর জানতে পেরে ওই বিল সংলগ্ন এলাকার শত শত কৃষক উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হয়ে তার কাচে ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক কৃষকদের সমস্যা শুনে ইউএনও’কে ১৯ জানুয়ারীর মধ্যে ওই ঘের মালিককে ডেকে টেপুর বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদের সুযোগ সৃষ্টির নির্দেশনা দেন। কিন্তু জেলা প্রশাসকের নির্দেশ এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক/কেশবপুর(যশোর)

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক