কেশবপুরে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:৪৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০ | আপডেট: ৭:১৬:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০

মশিয়ার রহমান, কেশবপুর(যশোর):
যশোরের কেশবপুর উপজেলার দত্তনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। যৌন হয়রানীর শিকার পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীর মা তাকে সাথে করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছেন। কেশবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। তাকে স্থায়ী বরখাস্তের জন্য খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস


অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যখন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন এ সময় প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান সুযোগবুঝে ওই মেয়েকে পানি খাওয়ানোসহ বিভিন্ন কাজের অজুহাতে অফিস রুমে ডেকে পাঠায়। দূর থেকে তার কাজের আবদার মিটাতে গেলে ধমক দিয়ে তাকে কাছে নিয়ে যৌন হয়রানী করে থাকে। এ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি মেয়েটিকে যৌন হয়রানী করায় সে ভীত-সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে তার মা ও নানাকে ঘটনাটি জানাতে বাধ্য হয়। অবশেষে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ওই ছাত্রী তার মা ও নানার সাথে এসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে জানায়।


ওই ছাত্রী তার আরও ৪ থেকে ৫ জন সহপাঠীর নাম উল্লেখ করে জানায়, প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান পর্যায়ক্রমে তার ওই সব সহপাঠিদেরও বিভিন্ন অজুহাতে ডেকে পাঠায় এবং তাদেরও যৌন হয়রানীর চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনা কাউকে জানালে তাদেরকে ওই স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান ভয় দেখাত। বিষয়টি তাদের অন্য শিক্ষকরা জানলেও হয়রানীর ভয়ে তাঁরা মুখ খুলতে সাহস পান না।
কেশবপুর প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা বাবু জানান, অভিযোগের তদন্তে বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল জব্বার সরদার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ক্লাষ্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার আনিসুর রহমানকে দত্তনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তিনি তদন্ত শেষে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টাসহ শ্লীলতাহানীর বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।


প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ২৪ বছর অত্র বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি। ইতিপূর্বে কেউ আমার বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ করেনি। একটি কুচক্রী মহল আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমন অভিযোগ করেছেন।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম জানান, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টাসহ শ্লীলতাহানী চেষ্টা করায় শিক্ষক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেশবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। তাকে স্থায়ী বরখাস্তের জন্য খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক