কৃষি ঋণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে পিছিয়ে বেসরকারি ব্যাংক

প্রকাশিত: ৯:৩৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২০ | আপডেট: ৯:৩৯:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২০

৫ ব্যাংক বিতরন শুর”ই করেনি
৬ ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

রহমান আজিজ, ঢাকা:
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ছয়মাসে (জুন-ডিসেম্বর) ১২ হাজার ৬২ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করার কথা। কিন্তু ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রাপূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেশি পিছিয়ে।
জানা গেছে, সরকারের অন্যতম লক্ষ্য খাদ্য নিরাপত্তা ও পল্লী অঞ্চলে দারিদ্র দূরিকরণ। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলে অর্থ সরবারহের করছে। এ লক্ষ্যের সাথে সংগতি রেখে সকল ব্যাংকের মোট বিতরন করা ঋণের ২ ভাগ কৃষকদের মাঝে বিতরণের লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তথ্যে দেখা যায়, ছয় মাসে মোট কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চেয়ে ১ হাজার ২৬২ কোটি বা ৮৯ শতাংশ কম। এর মধ্যে সবচেয়ে কম কৃষিঋণ বিতরণ করেছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সবচেয়ে কম কৃষিঋণ বিতরন করেছে সেরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। দেশি বিদেশি ৪৬ বাণিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৬ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ করার কথা ছিল ৬ হাজার ৮৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কিš‘ ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৫ হাজার ৩৭২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫০২ কোটি ৩৬ লাখ বা ২২ শতাংশ কম।
অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত আট বাণিজ্যিক ব্যাংক ৫ হাজার ১৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরন করেছে ৫ হাজার ৪২৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ২৪১ কোটি ১৬ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি বিতরন করেছে।

ছয় মাস অতিবাহিত হলেও একক ব্যাংক হিসাবে বিদেশি ই বাণিজ্যিক উরি ব্যাংক ও কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন কৃষিঋণ বিতরন শুর”ই করেনি। আর শুর” করলেও নামে মাত্র কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংক আল-ফালাহ, সিটি ব্যাংক নতুন ও বিশেষায়িত সীমান্ত ব্যাংক। এ সব ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের হার এক শতাংশের নীচে। এ সব বাণিজ্যিক ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণ করলেও বছরের শেষে এসে অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা এনজিও এর মাধ্যমে বিতরন করে।

এ ব্যাপারে বাংলাশে ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাধ্যবাধকতার ফলে কৃষিঋণ বিতরন করলেও বছর শেষে এসে কোন এনজিও বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করে। এর ফলে কৃষকের কাছে ঋণ গেলেও তা দেরিতে যায়। এর ফলে কৃষকের সঠিক কাজে লাগে না, ঋণের মান রক্ষা হয় না। অন্যদিকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কৃষিঋণ বিতরন করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বিডিবিএল ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বিদেশি হাবিব ব্যাংক ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। দেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক এশিয়া ও ইস্টার্ণ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, যে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পল্লী অঞ্চলে নিজস্ব শাখা নেই সে সব ব্যাংক মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি বা এমআরআই নিবন্ধিত এনজিও এর মাধ্যমে বিতরণ করতে পারবে। এবং গ্রাহক পর্যায়ে এনজিওদের জন্য নির্ধারিত সুদ হার কার্যকর হবে। এবং কোন কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ২ শতাংশের নীচে কৃষিঋণ বিতরণে ব্যর্থ হলে ওই ব্যাংককে জরিমানা দিতে হবে। এ জন্য কোন ব্যাংক নিজের শাখার মাধ্যমে বিতরণে ব্যর্থ হলেও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আশ্রয় নেয়। এর ফলে প্রতিবছর কৃষিঋণ বিতরন বাড়ছে। ২০০৮-৯ সালে যেখানে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমান ছিল মাত্র ৯ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষিঋনের পরিমান দাঁড়ায় ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ১০ বছরের ব্যবধানে কৃষিঋণ বিতরন বৃদ্ধি পায় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।

সুন্দরবনটাইমস.কম/রহমান আজিজ/ঢাকা

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক