১০ চাকার ট্রাক চলছে নির্বাধায়, দেখার কেউ নেই! কপিলমুনি বাজারে সদ্য নির্মিত ঢালাই রাস্তা হুমকির মুখে

প্রকাশিত: ১:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০১৯ | আপডেট: ১:৪৪:অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০১৯

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

কপিলমুনি (খুলনা) সংবাদদাতা:
দীর্ঘ প্রতীক্ষার ফসল কপিলমুনি বাজারে ঢালাই রাস্তাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। মাত্র ছয় মাস যেতে না যেতেই বহু প্রত্যাশিত রাস্তাগুলো ভারী যানবহনের কোপানলে পড়ে অঙ্কুরেই ধ্বংস হবে এমনটি ভাবেনি কেউ। স্থানীয়রা বলছেন, সংম্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকার কারণে মাল বোঝাই যন্ত্রদানব যানগুলো তোয়াক্কা করছে না কম সহিষু এই রাস্তার উপর দিয়ে যত্রতত্র চলাচলে।
জানাযায়, কপিলমুনি বাজারে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তা না থাকার কারণে বৃষ্টি মৌসুম থেকে শুরু করে বছরের প্রায় আট মাস ব্যবসায়ী ও হাটুরীদের নাকাল হতে হত। পঁচা পানি আর বর্জ্যরে উৎকট গন্ধে বাজারে লোক সমাগম কম হত। দূরের পন্য দ্রব্য আমদানীর ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হত। বাজারের ভিতরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পন্য আনা প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল। রাস্তার জলবদ্ধতা আর কাদা পানির কারণে স্থানীয় শ্রমিকরা পন্য উঠা নামার ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালপত্র আনা নেয়া করতে যেয়ে মারাত্বক অহত হয়েছে। বাজারের অনুকুল পরিবেশ না থাকার কারণে বাজারটি ধ্বংসের দারপ্রান্তে এসে পৌছায়। বহু ব্যবসায়ী অন্যত্র ব্যবসামুখী হয়। দেশের বৃহত্তম এই বাণিজ্যিক মোকামটি বাঁচানোর জন্য স্থানীয় সকল পেশার মানুষের দীর্ঘ দিনের যৌক্তিক দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে কপিলমুনি বাজারের রাস্তাগুলো ঢালাই করে হাটুরে, ব্যবসায়ী ও সাধারণের জন্য উপযোগী করে দেয়। তাছাড়া কপোতাক্ষ নদীর তীর বরাবর বাজারের অংশে আর সি সির একটি বাইপাস সড়কসহ আর সি সির ড্রেন নির্মাণ করে দেয়। গত বছর শেষের দিকে প্রকল্পটির নির্মান কাজ শেষ হয়। কিন্তুু ছয় মাস যেতে না যেতেই এসব ঢালাই রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। আবার কোন কোন জায়গা ভেঙ্গে গেছে। কোন কোন রাস্তার মুখে ভারী যানবহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দন্ড নির্মান করা হলেও রাতের অন্ধকারে সেগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বাজারের ভিতরে নির্মিত এসব ঢালাই রাস্তার উপর দিয়ে অনাধিক ২ থেকে ৩ টন ধারন ক্ষমতার যান চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও একেবারে সেগুলো মানা হচ্ছে না। ২ থেকে ৩ টনের মালবহনের সক্ষমতায় রাস্তাগুলো নির্মান করা হলেও রাস্তাগুলোর উপর দিয়ে ১০ টন থেকে ২০ টন মাল বহন করা হচ্ছে। এসব রাস্তার উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারি যানবাহনে করে আলু, ধান, চালসহ নানা দ্রব্য সামগ্রী বহন করা হচ্ছে। সংগত কারনেই রাস্তায় ফাটলসহ নানা স্থান ভাঙ্গতে শুরু করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল রাজশাহী থেকে আনা প্রায় ২০ টন বোঝায় বগুড়া ট ১১-১৯৫৩ নম্বরের একটি ট্রাক থেকে বাজারের ধান্য চত্তরের পাশে আলুর বস্তা খালাস করতে দেখা যায়। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দু’এক বছরের মধ্যেই রাস্তাগুলো ধংস হয়ে যাবে বলে এলাকাবাসী জানান। তারা আরও জানান, গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর স্বার্থের কারণে বাজারের সদ্য নির্মিত ঢালাই রাস্তা আগের চেহারাই ফিরে যাবে এটা মানতে পারছেন না তারা। এদিকে হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি সভাপতি ও ২ নং কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়ার্দার বলেন, ‘আমাদের বহু দিনের কষ্টের ফসল এই রাস্তাগুলো ভারী যানবাহনের কারনে ধংস হয়ে যাবে এটা মানা যায় না। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘কোন প্রকার ১০ চাকার গাড়ী চলাচল করতে পারবে না। নিষেধ অমান্য করে কেউ ১০ চাকার গাড়ী এনে সড়কের ক্ষতি করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/এইচ এম এ হাশেম/কপিলমুনি


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক