কপিলমুনির জেলে পল্লীর জেলেরা ত্রান নয়, টেকসই ভেড়িবাঁধ চায়

প্রকাশিত: ৮:৫৯ অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০২১ | আপডেট: ৮:৫৯:অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০২১
পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের মামুদকাটী মালোপাড়ায় বাঁধ ভেঙ্গে কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে।

উত্তাল সমুদ্রের ভয়ংকর তরঙ্গের চোখ রাঙ্গানির তোয়াক্কা না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গহীন সাগরে জাল ফেলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। কখনো কখনো ঝড় ঝাঞ্চা আর বনদস্যুদের সাথে লড়তে হয় জীবন বাজী রেখে, তারপরও থেমে নেই এ লড়াই। কেননা সাগরে মাছ ধরা এদের প্রধান উপজীব্য, এরা সাগর যোদ্ধা। মাঝে মধ্যে এ যুদ্ধে হেরে সলিলসমাধী হয় সাগর বক্ষে। তবুও এতে নেই দুঃখ, নেই বেদনা। এসব নিয়েই সাগরের বুকে নিত্যদিনের পথ চলা তাদের। এদের দুঃখ প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিজেদের ভিটায় অনিরাপদ বসবাসের জন্য।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির অদূরে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে মামুদকাটি গ্রামে গড়ে উঠা প্রায় পাঁচশ বছরের জেলে পল্লীর জেলেদের মর্মবেদনার কথা সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়। কপোতাক্ষীর পাড়ে এ পল্লীর প্রায় সহস্রাধিক মানুষের নিজ আবাসনে বসবাসের আরেক লড়াইয়ে এরা পরাজিত। বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনে প্রকৃতির বৈরিতায় এরা ক্ষতবিক্ষত। ঝড় আর জ্বলোচ্ছাসে এরা বেশী ক্ষতিগ্রস্থ। ভূক্তভোগীরা জানান, বিগত আইলা, সিডর আর আম্ফানে এদের জীবনে নেমে এসেছিল ভয়াবহ দুঃখ। লন্ডভন্ড হয়েছিল এদের ঘরবাড়ি। পানিতে ডুবেছিল এ পল্লীটি। দুর্বল ভেড়ি বাঁধ ছিল এর মুল কারণ বলে তারা জানান। এখনো সেই দুর্বল ভেড়ি বাঁধ দৃশ্যমান। যার কারণে ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কপোতাক্ষর বাড়তি পানি উগরে দিয়েছিল এখানে। দুর্বল ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয় গ্রামটি। এ জন্য এখানে মাত্র এক কিলোমিটার একটি টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মানের জোর দাবি উঠেছে এলাকার সর্ব মহলে।

জেলে পল্লীর যুবক বাসিন্দা সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, আমরা ত্রান চাইনা, নিরাপদ ভেড়িবাঁধ চাই, নদীর পাড় আঁকড়ে ধরে আমরা বাঁচতে চাই। ধীবর বধূ জয়ন্তী বিশ্বাস বলেন, আমরা আবাসন সুরক্ষা চাই, চাই পানি বন্দিহীন জীবন। কথা হয় ৬৫ বছরের বৃদ্ধা দিপালী বিশ্বাসের সাথে তিনি জানান, স্বামী সন্তানরা ৬ মাস সাগরের বুকে থাকলেও চিন্তিত নই, তবে এই জেলেপল্লীর অনিরাপদ ভেড়িবাঁধে আমরা আতংকিত। আমরা খাদ্য চাইনা দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই ভেড়িবাঁধ চাই। মামুদকাটি জেলে পল্লীকে আবাসন সুরক্ষা দিতে দেশের বিভিন্ন এনজিও ও সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় সুধী মহল। জেলেদের বসবাস সাধারণত নদীর কোল ঘেঁষেই তাই শুধু মামুদকাটি নয় দেশের সব জেলেপল্লীর আবাসন সুবিধা ও সুরক্ষা দেয়া অতিব প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করেন। কেননা এই সাগর যোদ্ধারা ঝড়ঝাঞ্চা তরঙ্গ বিক্ষুব্ধ ভয়াল সাগরের গভীর জল থেকে মাছ আহরণ করে একদিকে যেমন দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা মেটায় অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয়ে অবদান রাখে।


আপনার মতামত লিখুন :

এইচ এম এ হাশেম। নিজস্ব প্রতিবেদক। কপিলমুনি, খুলনা