মণিরামপুরের ৯ টি গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে পেঁপে, লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

প্রকাশিত: ১২:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২১ | আপডেট: ১২:১৭:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২১

যশোরের মনিরামপুরের মশ্মিমনগর ও হরিহরনগর ইউনিয়নে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে পেঁপে। এতে করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এ কারণে চাষিরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজগঞ্জের মশ্মিমনগর ইউনিয়নের সাহাপুর ও হরিহরনগর ইউনিয়নের মদনপুর, সালামতপুর, শৈলী, এনায়েতপুর, খাটুরা, মধুপুর, কায়েমকোলা ও মুক্তারপুর এই ৯ টি গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হয় পেঁপে। পেঁপে চাষি হরিহরনগর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের নিছার আলী জানান- পেঁপে চাষ একটি লাভজন ফসল।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

এজন্য গ্রায় ১৫ বছর ধরে পেঁপে চাষ করি। এছাড়া এ গ্রামের অনেক চাষি পেঁপে চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। তিনি প্রতিবছর ৩ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেন। তিনি আরো জানান- প্রথম বার পেঁপের চারা লাগানোসহ বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যায় প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। ক্ষেত থেকে পেঁপে বিক্রি করতে শুরু করেছেন তিনি। বর্তমানে প্রতিমণ পেঁপে ৪০০/৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। প্রতি ২০/২৫ দিন পরপর ক্ষেতে পেঁপে বিক্রি যোগ্য হয়। তাতে করে প্রতিবার ২০/২৫ মন পেঁপে বিক্রি করা যায়। তিনি জানান- একবার চারা লাগালে ক্ষেত থেকে প্রায় ৩ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে পরবর্তী দুই বছর গাছের পরিচর্যায় খরচ খুবই কম লাগে। এছাড়া ঝড় বৃষ্টিতে গাছের ক্ষতি না হলে মোটামুটি লাভজনক ফসল ধরে নেওয়া যায়। কৃষক আব্দুল কাদের জানান- পেঁপে একটি লাভজনক ফসল।

তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন। চলতি বছরে এ ক্ষেত থেকে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষেত নষ্ট না হলে আগামীতে আরো বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তিনি। হরিহরনগর ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ রায় জানান- হরিহরনগর ইউনিয়ন ব্যাপি এ বছর ১৬০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে পেঁপে গাছের বিভিন্ন রোগের, যেমন-গাছের গোড়া পঁচা, পোঁকা বাহিত বিভিন্ন রোগ, ক্ষতিকারক ভাইরাস থেকে গাছকে মুক্ত রাখতে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়। এ ছাড়া পেঁপে গাছের খাদ্যের অভাব মেটাতে বিভিন্ন অনুখাদ্য প্রয়োগ করতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া পেঁপের পরাগায়নসহ ভালো ফলন পাওয়ার জন্য কৃষকদের প্রতিবিঘায় ২ টি পুরুষ গাছ রাখার কথা বলা হয়ে থাকে। রাজগঞ্জের হরিহরনগর ইউনিয়নের মাঠে মাঠে বিভিন্ন জাতের পেঁপে চাষ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে- বারি জাতের শাহিরাচি, কাশিমপুরি, হানিডিউ, পুশাজাজেন্ট। এসব জাতের পেঁপের চাষ করেছে এ এলাকার চাষিরা।

পেঁপে কিনতে আসা ব্যাপারী মোশাররফ হোসেন ও আক্তার হোসেন বলেন- আমরা চাষিদের ক্ষেত থেকে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা প্রতিমণ দরে পেঁপে কিনে থাকি। যা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার বাজারে বিক্রয়ের জন্য পাঠানো হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে জানাগেছে- পেঁপে চাষের সুবিধা হচ্ছে, জমিতে একবার চারা লাগালে ৩ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রথম বছরের পর, পরবর্তী ২ বছর ক্ষেত পরিচর্যার খরচ খুবই কম লাগে। এতে কৃষকরা ব্যাপকভাবে লাভবান হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, এ বছরও চাষিরা পেঁপে চাষে ব্যাপকভাবে লাভবান হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

উত্তম চক্রবর্তী। প্রতিবেদক। মণিরামপুর, যশোর