প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় ৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশিত: ১১:৪৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২০ | আপডেট: ১১:৪৭:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২০
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলা পরিচালনা শেষে সাতক্ষীরা কোর্টে সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবিরা।

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় জামিনে থাকা তিনজন আসামীর সময়ের আবেদন না’মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

একইসাথে আসামীদের ৩৪২ ধারায় মতামত গ্রহণ শেষে ১৪ জন সাফাই সাক্ষী দেওয়ার আবেদন করলে মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর ১১জনের আবেদন মঞ্জুর করে আগামি বুধবার সাক্ষীর দিন ধার্য করেছেন।

 

অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা আসামীরা হলেন সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম ও মোঃ আলাউদ্দিন।

 

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, সহকারি এটর্ণি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ,  সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট তপন কুমার দাস, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ওসমান গনি, অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু, অ্যাডভোকেট সাবেক অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আজাহার হোসেন অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম পিন্টু, অ্যাডভোকেট ওকালত আলী প্রমুখ।   

 

আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন  বাংলাদেশ হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ(২), অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ।

 

মামলার কার্যক্রম শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে বাংলাদেশেরে অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত কুমার চ্যাটার্জী বলেন, তিনজন আসামী অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে তাদের আইনজীবী সময়ের আবেদন করেছেন। আবেদনে ওইসব আসামী কোথায় চিকিৎসাধীন, কি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তাই তাদের সময়ের আবেদন না’মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। বিচারক তা মঞ্জুর করেন।

 

এ ছাড়া আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ (২) সাক্ষী শহীদুল ইসলাম, আনছার আলী ও জোবায়দুল হক রাসেলকে জেরা করার জন্য আবেদন জানান।  রাষ্ট্রপক্ষ আইনি ব্যাখ্যার মাধ্যমে তাতে আপত্তি জানালে আসামীপক্ষের আবেদন না’মঞ্জুর করা হয়। একপর্যায়ে ৩৪২ ধারা মোতাবেক কাঠগোড়ায় উপস্থিত ৩৪ জন আসামী নিজেদের নির্দোষ দাবি করলে তাদের  সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদসহ কয়েকজনের পক্ষ থেকে ১৪ জন সাফাই সাক্ষীর তালিকা আদালতে পেশ করা হয়। 

 

আদালত তিন জনকে বাদ দিয়ে বাকী ১১জন সাক্ষীর শুনানীর জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন। আসামী পক্ষ সাফাই সাক্ষী দেওয়ার আবেদন জানানোয় আইনগত কারণে মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা যায়নি।

 

অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর বলেন, জামিনে থাকা তিনজন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসাথে তিনজন সাক্ষীকে  জেরা করার আসামীপক্ষের আবেদন না’মঞ্জুর করেছে আদালত। একইসাথে ১১জনের সাফাই সাক্ষীর জন্য বুধবার দিন ধার্য করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই সাফাই সাক্ষী শেষে যুক্তিতর্ক  উপস্থাপন শেষ হতে পারে।

 

আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, তিনজন সাক্ষীকে জেরা করার জন্য তারা আবেদন করলেও আদালত তা না’মঞ্জুর করে। এছাড়া জামিনে থেকে নিয়মিত হাজিরা দিলেও মঙ্গলবার অসুস্থতার কারণে তিনজন আসামীর জামিন না’মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসাথে ১৪ জন সাফাই সাক্ষীর মধ্যে ১১জনের আবেদন মঞ্জুর করে বুধবার শুনানীর জন্য দিন ধার্য করেছে আদালত।

 

প্রসঙ্গত: ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৎকালিন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

 

এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।

 

এসজি/ডেক্স


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স