নিরীহদের হয়রানীর অভিযোগে কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির দারোগার বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২০ | আপডেট: ৫:২৬:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, কপিলমুনি(খুলনা):
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এস আই অভিজিৎ রায় এর বিরুদ্ধে অর্থ বানিজ্য ও নিরীহ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামীদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মোটা অংকের টাকার চুক্তিতে ছেড়ে দেওয়া, জায়গা দখলে সহায়তা করা, আসামিকে বাঁচাতে চার্জশিটে ভুল ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা, মোটর সাইকেল আটকিয়ে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া, মানুষকে আটকে রেখে ফাঁড়ির অভ্যন্তরে রেখে রফাদফা করা, সে ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ঢুকতে বাঁধা দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
একাধিক সুত্রমতে, এস আই অভিজিৎ রায় কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদানের পর থেকে অর্থ বানিজ্যে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। অল্প দিনের ব্যবধানে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছেন তিনি। মাদকদ্রব্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে টাকা লুটতে থাকেন তিনি। যেখানে জনবান্ধব প্রশাসনে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে সরকার তৎপর, ঠিক এমন সময় তিনি প্রশাসন বিভাগকে কলঙ্কিত করতে যেন দিধা করছেন না তিনি। নিজেকে অনার্স মাস্টার্স পাশ বলে জাহির করে থাকেন। এবং নিজেকে ক্ষমতাধর মনে করেন। অনেক সময় তার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে বাইপাস করে ক্ষমতা জাহির করার অভিযোগ রয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

সুত্র জানিয়েছে, এস আই অভিজিৎ যোগদানের পর একটি ধর্ষণ প্রচেষ্টা ও শ্লীলতাহানি মামলায় প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে চার্জশিট প্রদান করায় ভুক্তভোগী কাশিমনগর এলাকার জনৈক মহিলা তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। সে ক্ষেত্রে তিনি প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একইভাবে ঐতুবৃ কেমিক্যাল কোম্পানির দায়ের করা মামলার আসামী কপিলমুনির ব্যবসায়ী সুমন সাধু ও অনুকুল সাধুকে ফাঁড়িতে আটকে রেখে মোটাংকের টাকা নিয়ে ছাড়েন এস আই অভিজিৎ। পরে আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসেন। উক্ত আসামীদ্বয়কে আটকের খবর পেয়ে সাংবাদিকেরা সেখানে গেলে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেননি তিনি। এ নিয়ে সর্বত্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
সুত্র আরোও জানায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু-পক্ষের কাছ থেকে টাকা আদায় করে থাকেন অভিজিৎ। শুধু তাই নয়, কপলমুনি বাজারের ডিপো মালিক সালামকে ইভটিজিং মামলা দিয়ে থানায় প্রেরণ করে। ওই ঘটনায় সালাম নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও সরেজমিন তদন্ত না করে বেরশিক যুবকদের কথামত তিনি এ কাজ করেন। জানাগেছে, ওই রাতে সালামকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য খরচখরচা দিতে বললে ডিপো মালিক সালাম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এবং টাকা দিতে অস্বীকার করলে সালামকে থানায় প্রেরণ করা হয়। পরদিন সকালে জনৈক মহিলাকে দিয়ে মামলা করে দেয়া হয়। সুত্র জানায়, এ ঘটনায় ওই রাতে মহিলাকে পুলিশ ফাঁড়িতে ডেকে আনা হলে মহিলাসহ তার অভিভাবক প্রতাপ মামলা করতে রাজি হয়নি। সে জন্য এস আই অভিজিৎ থানা ওসির সাথে মিমাংসার কথা বলে অনুমতি নিয়ে নেয়। কিন্তু ডিপো মালিক আটক সালাম টাকা দিতে অস্বীকার করলে পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত। গত মঙ্গলবার কপিলমুনিতে সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় মোটর সাইকেল আটকিয়ে টাকা আদায় ও তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে কপিলমুনি বাজারের অনেক ব্যবসায়ীকে টাকা গুনতে হয়। সে ক্ষেত্রে ত্রুটিবিচ্যুতি ধরে দরকষাকষির মাধ্যমে টাকা আদায় করেন তিনি।

এ বিষয়ে এস আই অভিজিৎ রায় বলেন, ‘পাবলিক অনেক কিছু বলে, কিন্তু এগুলো সঠিক নয়। কানাইদিয়া সিমান্তবর্তী এলাকা থেকে আসা কিছু মোটর সাইকেল ও মালামাল চেক করে ছেড়ে দেই। আসামীদের আটকের বিষয়ে আমি জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, তবে টাকা নেওয়ার কথাটা সঠিক নয়। এগুলো কিছু এন্টি লোক বলছে।’

সুন্দরবনটাইমস.কম/এইচ এম এ হাশেম


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক