তালার খলিষখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২০ | আপডেট: ২:৫৯:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
খলিষখালী(পাটকেলঘাটা) প্রতিনিধি:
তালার ৭৫নং খলিষখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মনিরা সুলতার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরজমিনে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে এই শিক্ষিকা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কাউকে পরোয়া না করেই তিনি নিজের নিয়মে স্কুল পরিচালনা করে আসছেন। সহকর্মীরা প্রতিবাদ করতে গেলেই বদলি, ডিটেনশন সহ নানা হুমকিতে পড়তে হয় তাদের। বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক শফিকুজ্জামান পিন্টু জানান, প্রধান শিক্ষিকা মনিরা ম্যাডাম খুবই বেপরয়াভাবে চলাফেরা করেন তার ক্ষমতার দাপট এতটাই ভয়ে তার সামনে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
আমি তার অন্যায়ের  প্রতিবাদ করেছিলাম বলে আমাকে ডিটেনশন দিয়ে টিকারামপুর স্কুলে পাঠিয়ছেন।  ঐ শিক্ষক  আরও জানান,তিনি যোগদান করার পর থেকে নিয়মিত বিদ্যালয়ের অনুপুস্থিত সহ ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত পাঠদান না করারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া সরকারি কোন জাতীয় দিবস পালনে তার কোন ভুমিকাও নেই। গত ১০জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও মুজিবর্ষ পালনের জন্য সরকারি নির্দেশ থাকলেও তিনি সে দিন স্কুলও খোলেননি। এপর স্থানীয়ও সাংবাদিকদের চাপে পড়ে এক সহকারী শিক্ষক তাপস বসুকে দিয়ে বেলা ১২টার সময়  বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ খুলে শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষা করেন।
১৩জানুয়ারি মঙ্গলবার ওমান সুলতানের মৃত্যুর জন্য রাট্রীয় শোক পালনের জন্য  সরকারী সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনিমিত রাখার নির্দেশ থাকলেও তিনি তা পালন করেননি । এছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রছাত্রীদের প্রতি তার বিদ্বেশী  মনোভাব । খলিষখালী বেসরকারি একটি সংস্থা “সাস” এর ব্যাবস্থাপক সূর্য কান্ত বিশ্বাস প্রতিবেদককে  জানান, আমার মেয়ে  সর্নালি বিশ্বাস ঐ বিদ্যালয়ে প্রতিবার পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে আসছিল। কিন্তু মনিরা ম্যডাম আসার পর আমার মেয়ে  ৪র্থ থেকে পঞ্চম শ্রেনীতে উন্নীত হওয়ার পর আমার মেয়ের রেজাল্ট ও অলৌকিকভাবে  পরিবর্তন হয়ে যায়। আমি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি তিনি দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে স্পেশালভাবে পরীক্ষা নিয়ে  রায়হান নামের একটি  ছেলেকে  প্রথম স্থান দিয়েছে। এছাড়াও আমার মেয়ের খাতায় নাম্বার এক আর রেজাল্ট সিটে দেখি আরেক নাম্বার। আমি ম্যাডাম ও স্কুলের সভাপতিকে জানিয়েও এর কোন প্রতিকার পায়নি।
বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা মনিরা সুলতানার সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার সহকারী শিক্ষকরা যেভাবে নাম্বার দিয়েছে আমি সেভাবেই রেজাল্ট দিয়েছি। স্পেশাল পরীক্ষার বিষয়ে বলেন, ঐ ছাত্র অসুস্থ ছিল বলে  এ জন্য নিয়েছি এটা নেওয়ার আমাদের নিয়ম আছে। আর জাতীয় দিবস পালনের বিষয় নিয়ে চাইলে তিনি জানান,জাতীয় দিবস  পালন করার চেষ্টা করি তো কিন্তু কবে কোন দিবস তা ব্যাস্ততার কারনে মনে রাখা সম্ভব হয়না।
বিষয়টা নিয়ে বিদ্যালয়ে সভাপতি কবীর মোল্যার সাথে কথা বললে তিনি জানান, ম্যডামের বিষয়ে এসব অভিযোগ আমি শুনেছি। মিটিং ডেকে দেখি কি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাছুরা সুলতানার সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই বা এ বিষয়ে আমার কাছে কেহ অভিযোগও করেনি। তবে আপনি বলেছেন  বিষয়টা খোজখবর নিয়ে দেখছি কি  করা যায়।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা মনিরা আসার পর থেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন শেষ নেই। তিনি এই  প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আমরা অতিদ্রুত এই প্রধান শিক্ষিকাকে বিদ্যালয় থেকে অপসারন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সুন্দরবনটাইমস.কম/কিশোর কুমার

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক