জানুয়ারিতে বিও হিসাব বেড়েছে ও অন্যান্য অর্থনীতি সংবাদ

প্রকাশিত: ৯:৪৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২০ | আপডেট: ৯:৪৪:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২০

জানুয়ারিতে বিও হিসাব বেড়েছে

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা:
জানুয়ারিও মাসের প্রথম দিকেও পুঁজিবাজারে তীব্র মন্দার মধ্যে দিয়ে পার করেছে। তবুও কমেনি বিও হিসাব খোলার প্রবণতা। এক মাসের ব্যবধানে বিও হিসাব বেড়েছে মাত্র ১২৬টি। সেন্ট্রাল ডিপজিটরি অব বাংলাদেশ (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি পরযন্ত বিও হিসাবের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৭৮ হাজার ৪২৭টি। ২০১৯ সালের শেষ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৭৮ হাজার ৩০১ জনে। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে বাজারে নতুন করে বিনিয়োগকারী বেড়েছে ১২৬ জন।

২৫ লাখ ৭৮ হাজার ৪২৭ জন বিনিয়োগকারীর মধ্যে পুরুষ রয়েছে ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৮ জন। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিনে পুরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ১৮৭ জন। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে পুরুষ বিনিয়োগকারী বেড়েছে ৬৩১ জন।
একই সময়ে নারী বিনিয়োগকারী ৪৮৬ জন কমেছে। জানুয়ারির শেষ কার্যদিবস নারী বিনিয়োগকারী ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৮ জন। আর ২০১৯ সালের শেষ কার্যদিবস নারী বিনিয়োগকারী ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৯৬৪ জনে।
জানুয়ারির শেষ কর্মদিবসের কোম্পানি বিনিয়োগকারী ছিল ১১ হাজার ৭৬১ জন। ডিসেম্বরের শেষ কার্যদিবস কোম্পানি বিনিয়োগকারী ছিল ১৩ হাজার ১৫০ জন। এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে এক হাজার ৩৮৯ জন।
জানুয়ারির শেষ কার্যদিবস দেশি বিনিয়োগকারী ছিল ২৪ লাখ ১৯ হাজার ৮৩১ জন। ২০১৯ সালের শেষ কার্যদিবস দেশি বিনিয়োগকারী ছিল ২৪ লাখ ১৯ হাজার ৬২৮ জনে। এক বছরে দেশি বিনিয়োগকারী বেড়েছে ২০৩ জন।
একই সময়ে বিদেশী বিনিয়োগকারী কমেছে ১২৮ জনে। জানুয়ারির শেষ কর্মদিবসে বিদেশী বিনিয়োগকারী ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৫ জন। ২০১৯ সালের শেষ কার্যদিবস বিদেশী বিনিয়োগকারী দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৩ জনে।

টপটেন লুজারের শীর্ষে শ্যামপুর সুগার

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার টপটেন লুজার বা দরপতনের শীর্ষে রয়েছে শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড। রবিবার শেয়ারটির দর ২ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯.০৩ শতাংশ কমেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ২৯ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। এদিন কোম্পানিটি ৪৯ বারে ৮ হাজার ৮৯টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ২ লাখ টাকা।
লুজার তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি লিমিটেড। গতকাল শেয়ারটির দর ৪ টাকা ৪০ পয়সা বা ৫.১৭ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটি গতকাল সর্বশেষ ৮০ টাকা ৭০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
লুজার তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- সাফকো স্পিনিং, মেঘনা পেট, জেমিনি সি, এসএস স্টিল, স্ট্যাইল ক্রাফট, বসুন্ধরা পেপার মিল, প্রাইম টেক্সটইল ও বিডিকম অনলাইন লিমিটেড।

১৪১ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে। ডিসেম্বর মাসে ৩২০ কোম্পানির মধ্যে ১৪১টি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমেছে এবং বেড়েছে ১২৯টিতে। মাস শেষে টাকার অঙ্কে অন্তত এক কোটির বেশি বিনিয়োগ হয়েছে ৫৯ কোম্পানিতে। অন্যদিকে এক কোটি টাকা বা এর বেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার হয়েছে ৮৭ কোম্পানি থেকে।
সর্বশেষ ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২০ কোম্পানির মধ্যে ৩১৩টি কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণের তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সংশ্নিষ্ট কোম্পানির মোট শেয়ার বিবেচনায় ডিসেম্বরে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আনলিমা ইয়ার্নে, যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সাড়ে ৯ শতাংশ। শেয়ার সংখ্যার হিসাবে তা ১৬ লাখ ৯০ হাজার। এ ছাড়া মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সে ৯ শতাংশের ওপর বেড়েছে। এ দুই কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার।
গত নভেম্বর শেষে আনলিমা ইয়ার্নে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের অংশ ছিল ৫.৫১ শতাংশ, যা ডিসেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ১৪.৯৭ শতাংশ। এ সময় কোম্পানিটির শেয়ার দরও ৫১ শতাংশ বেড়ে ৪২ টাকায় ওঠে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ২১.৮৪ থেকে বেড়ে ৩০.৯৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা জাহিন স্পিনিংয়ে ২৯.৬৮ থেকে ৩৫.২৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। শেষ দুই কোম্পানিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধারণের হার মোট শেয়ার বিবেচনায় ৫ শতাংশের ওপর বেড়েছে।
অন্যদিকে সমতা লেদার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ও প্রাইম ইন্স্যুরেন্সে মোট শেয়ারের বিবেচনায় ৩ থেকে প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে। ২ শতাংশের ওপর বেড়েছে ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স, আরডি ফুড, বিচ হ্যাচারি, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, সায়হাম কটন, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক ও প্রাইম টেক্সটাইল থেকে।
সংশ্নিষ্ট কোম্পানির মোট শেয়ার বিবেচনায় ১ শতাংশের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বেড়েছে ন্যাশনাল টিউবস, ফু-ওয়াং ফুড, ন্যাশনাল পলিমার, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, ইনফরমেশন সার্ভিসেস, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ইনটেক অনলাইন, জনতা ইন্স্যুরেন্স ও সিঙ্গার বাংলাদেশে।
অন্যদিকে, টাকার অঙ্কে নিট প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে শীর্ষে ছিল আল-আরাফাহ্ ব্যাংক। কোম্পানিটিতে ডিসেম্বরে ২ কোটি ১৭ লাখেরও বেশি শেয়ার বেড়েছে, যেগুলোর বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৩৭ কোটি টাকা। এ বিবেচনায় সিঙ্গারে নিট বিনিয়োগ হয়েছে ১৮ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকে ১৬ কোটি, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সে ১৩ কোটি এবং স্কয়ার ফার্মায় প্রায় ১১ কোটি টাকা।

মার্কিন কৃষিপণ্য কিনতে অর্থায়নে সুবিধা

যুক্তরাষ্ট্র সরকার সে দেশের উঁচু মানের কৃষিপণ্য ক্রয়ের জন্য বাংলাদেশি ব্যাংক এবং আমদানিকারকদের অর্থায়নের বিশেষ সুযোগ দেবে।
রবিবার ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান জোয়ান ওয়াগনার যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য ক্রয়ের সুযোগ বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশের জন্য একটি কৃষি বাণিজ্য কর্মসূচি ঘোষণা করার সময় এ তথ্য দেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের জন্য অন্যতম শীর্ষ রফতানি বাজার। উভয় দেশের উপকারার্থে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেয়ার সুস্পষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ কর্মসূচি আমাদের সেটি করতে সহায়তা করবে।’
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ) সংস্থাটির এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রোগ্রামের উপর আমেরিকান সেন্টারে গতকাল একটি সেমিনারের আয়োজন করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ও শীর্ষ কৃষিপণ্য আমদানিকারকরা এতে অংশ নেন।
এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রোগ্রাম বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য কেনার জন্য অর্থায়নে সহায়তা করতে ঋণের গ্যারান্টি দেয়। এই কর্মসূচিটি ‘পর্যাপ্ত আর্থিক শক্তি’ রয়েছে বাংলাদেশের মতো এমন বাজারগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের বাণিজ্যিক রফতানিকে সহায়তা করতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫শ কোটি ডলারের ঋণ গ্যারান্টি দেয়।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্মসূচির জন্য যোগ্য বিশ্বের ১৩০টির মতো দেশের একটি।
সেমিনার শেষে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কৃষি অ্যাটাশে টাইলার ব্যাবকক বলেন, ‘আমরা আশা করি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক এ কর্মসূচিতে যুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করবে।’
বাংলাদেশি আমদানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের উঁচু মানের কৃষিপণ্য কিনতে পারবেন। আশা করা যায়, তারা সুবিধাজনক শর্তে ঋণের সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন।
এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্মসূচি বাংলাদেশি আমদানিকারকদের যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং কৃষিপণ্য কেনার জন্য অর্থ প্রদানের নিশ্চয়তা দেবে। অংশগ্রহণকারী স্থানীয় ব্যাংকগুলো ১২ মাস পর্যন্ত সময়ের জন্য সম্ভাব্য কম হারের সুদে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলো থেকে ডলারে অর্থায়নের সুযোগ নিতে পারবে।

সুন্দরবনটাইমস.কম/রহমান আজিজ/ঢাকা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক