কেশবপুরে বিএডিসির সেচ প্রকল্প: উপজেলা সেচ কমিটির সভায় অবৈধ!

প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২০ | আপডেট: ২:৪১:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, কেশবপুর(যশোর):
যশোরের কেশবপুরে কপোতাক্ষ অববাহিকার বরনডালি পশ্চিম মাঠের বিলের গভীর নলকুপের আওতায় সেচ স্কীমের অভ্যন্তরে বিএডিসির নিয়মবহির্ভূতভাবে আরও একটি সেচ স্কীম অনুমোদন দিয়েছে। সম্প্রতি কেশবপুর উপজেলা সেচ কমিটির এক সভায় ওই সেচ স্কীমকে অবৈধ বলে দবি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

কৃষি বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে কপোতাক্ষ অববাহিকার বরনডালি পশ্চিম মাঠের ঘোচমারা বিলে বছরের একমাত্র ফসল বোরো আবাদের লক্ষ্যে বরনডালি গ্রামের গোলাম মোস্তফা বিএডিসির প্রত্যয়নপত্র নিয়ে একটি গভীর নলকুপ স্থাপণ করেন। এ সময় তিনি নিজের জমিসহ পার্শ্ববর্তী কৃষকদের ৪২ একর জমিতে বিঘাপ্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা সেচ চার্য ধার্য করে সেচ প্রদান করে আসছেন। উক্ত এলাকাটি অপেক্ষাকৃত উঁচু ও বেলে দোআশ মাটি বিধায় ঘন ঘন সেচ প্রদান করতে হয়। এই সেচ স্কীমের ৬’শ ফুট অদূরে পশ্চিমদিকে কপোতাক্ষ নদ। এই নদের সংযোগ খাল (শ্যাকুল্যের খাল) কপোতাক্ষ নদের বেঁড়িবাধ থেকে ওই সেচ স্কীমের কাছাকাছি পর্যন্ত প্রবাহিত রয়েছে। এই গভীর নলকুপের পশ্চিমদিকে ৩’শ ফুটের মধ্যে একই গ্রামের মামুন গাজীসহ ১৪ জনের ১৪টি অগভীর নলকুপের সাহায়্যে তারা সেচ প্রদান করতো। কিন্তু সেগুলো অকেজো হওয়ায় ২০০৩ সাল থেকে তারা গোলাম মোস্তফার সেচ স্কীম থেকে পানি নিয়ে ৭০ বিঘা জমিতে ফসল আবাদ করে আসছে। ২০১৭ সালে মামুন গাজীসহ ওই ১৪ জন একত্রিত হয়ে ওই সেচ স্কীমের ১’শ গজের মধ্যে আরও একটি সেচ স্কীম স্থাপণের চেষ্টা করে। ব্যর্থ হওয়ায় তারা গোলাম মোস্তফার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ১ হাজার টাকা বিঘা প্রতি সেচ চার্য নির্ধারণ করে ফসল আবাদ করছে।

এদিকে, কপোতাক্ষ নদ কাছে হওয়ায় ওই নদের পানি দিয়ে সেচ প্রদান করলে খরচ কম হবে বিধায় মামুন গাজী বিএডিসি যশোর বরাবরে একটি আবেদন করেন। এই স্কীমে স্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে বারিড পাইপের মাধ্যমে তাদের জমিতে পানি পৌঁছানোর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ওই সেচ স্কীমটি গোলাম মোস্তফার সেচ স্কীমের ৬’শ ফুটের মাথায় হওয়ায় চলমান সেচ স্কীমটি অচল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মামুন গাজীর সেচ স্কীমটি অনুমোদন দিলে উভয় গ্রƒপের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। বিধায় উক্ত সেচ স্কীমটি অচল না করে ভূগর্ভস্থ্য পানি উত্তোলন নীতিমালা অনুসরন করে অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।

সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি মো. মিজানূর রহমান প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, একটি গভীর নলকুপ থেকে অপর গভীর নলকুপ ১৯৯৮ ফুট ও একটি গভীর নলকুপ থেকে অপর অগভীর নলকুপের ব্যবধান হবে ১২৮৩ ফুট। মো. শাহিনুর এর সেচ স্কীমটি সেচ নীতিমালার পরিপন্থী। বিধায় গোলাম মোস্তফার গভীর নলকুপ স্কীমের সেচ স্কীমটি অক্ষুন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। উল্লেখ্য, ওই বিলে আরও একটি সেচ প্রকল্প স্থাপনের বিরুদ্ধে গোলাম মোস্তফা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়ার জের ধরে তার সেচ প্রকল্পটি ধ্বংস করতে দুটি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটে। ফলে হুমকির মুখে পড়ে ঘোচমারা বিলের প্রায় ২’শ বিঘা জমির বোরো আবাদ। এরপরও প্রতিপক্ষরা ওই বিলে সেচ প্রকল্প স্থাপণে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।

সুন্দরবনটাইমস.কম/মশিয়ার রহমান

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক