করোনার প্রভাব: বেকায়দায় কপিলমুনির মধ্যবিত্তরা: খাবার সংকট

প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২০ | আপডেট: ৬:৪০:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২০

এইচ এম এ হাশেম, কপিলমুনি(খুলনা):
সারা দুনিয়াকে স্তব্দ করে দিয়েছে মরণঘাতক করোনা ভাইরাস। বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে এই ভাইরাস। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার হার্ডলাইনে। এমন বাস্তবতায় ঘরবন্দী সর্বস্তরের মানুষ। সরকার ঘোষিত খাদ্য পৌছালেও দলীয় রীতিতে চলছে ত্রাণ বিতারণ কার্যক্রম। সুযোগ সন্ধানীরাও যেন বসে নেই। দলীয় পরিচয়ে তৎপর তারা। নিন্ম আয়ের মানুষ ছুটছে ত্রাণের খোঁজে। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্ত অনেক পরিবারে চলছে চাঁপা কান্না। কর্মহীন হয়ে মধ্যবিত্ত অনেক পরিবারে নেই খাদ্যের যোগান। যা ছিল তাও শেষের পথে। এমন অবস্থাতে সরকার ভাইরাসের বিস্তর রোধে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করলেও পরে আবার তা বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করায় কর্মস্থলে ফিরতে পারছেননা মানুষ।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

এদিকে ঘরে যে খাদ্য ছিল তার স্টক শেষ। অন্যদিকে তারা কর্মহীন হওয়ায় এ সব মানুষের পক্ষে তাদের পরিবারের জন্য খাদ্যের যোগাড় করা দুরহ হয়ে পড়েছে। ফলে সরকার ঘোষিত হোম-কোয়ারেন্টেইনে থেকে খাদ্যের অভাবে দিশেহারা মধ্যম আয়ের মানুষগুলো।
চলমান পরিস্থিতিতে দেশের নিন্ম ও নিন্ম মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সমস্যা হলেও সব থেকে বেশী বিপাকে পড়েছেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে বসবাসরত মধ্যবিত্তরা। লোকলজ্জায় চাওয়ার অভ্যাস না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। মুখ ফুটে বলতে পারছে না তাদের অসুবিধার কথা।

এদিকে নিম্নবিত্তদের সরকার সহায়তা করছে, অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য বিতারণে নিন্মবিত্তরা সুফল ভোগ করছেন মোটামুটি। কিন্তু মধ্যবিত্তদের অবস্থার নেই পরিবর্তন। এরা পরিবারের সম্মানের ও লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারছে না।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ভ্যান চালক মুজিবর ভ্যান চালিয়ে তার মোটামুটি চলে। কিন্তু করোনার প্রদেুার্ভাবের কারণে বর্তমানে মানুষ ঘর মুখো বাইরে কম, তাই তার আয় নেই। এই অবস্থায় চিন্তায় তার কপাল কুচকে গেছে। কী করবেন, কী করা উচিত, ভেবে উঠতে পারছেন না। সংসার চালাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। চক্ষু লজ্জায় কষ্টগুলো প্রকাশ করতে পারছেন না।

একজন ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিম্নবিত্তের লোকজন তো সরকারি ত্রাণ পাচ্ছে, বেসরকারি সহায়তা পাচ্ছে, কিন্তু মধ্যবিত্তের কী হবে? তারও ঘরে খাবার শেষ হয়ে আসছে। ফলে তার পরিবার অল্প অল্প করে খাচ্ছেন বলে জানান।
অবস্থাদৃষ্টে মধ্যবিত্তদের দুর্দশার কথা কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও তুলে ধরছেন।
একজন লিখেছেন, সবাই আমরা ব্যস্ত নিম্ন আয়ের মানুষদের নিয়ে। মধ্যবিত্তদের খবর কেউ নেয়না। এসময় মধ্যবিত্তদের খবর না রাখলে না খেয়ে মারা যেতে পারে হাজারও মধ্যবিত্ত। খবর নিয়েন, বাসায় বাজার সদাই আছে নাকি মুখ চেপে না খেয়ে দিন পার করছে এরা।

কপিলমুনি এলাকায় লবণ পানির চিংড়ি চাষের উপর প্রায় ৮০% মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত। এখন মৌসুমের শুরুতে ঘেরে অধিকাংশ ঘের মালিক চিংড়ি পোনার অতিরিক্ত দাম ও সংকটের কারনে পোনা ছড়তে পারেনি। ঘের প্রস্তুত করে বসে আছে চিংড়ি চাষিরা। তার উপর করোনা আতঙ্ক! পুঁজি হারিয়ে চরম হতাশায় দিন কাটছে তাদেরও। স্বল্প আয়ের এসব মানুষ দুর্দশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। সচারাচর হাত পেতে সাহায্য নেওয়ার মত পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি কখনও। যত সামান্য সম্মানই তাদের একমাত্র অসহায়ত্ব। অথচ মধ্যবিত্তদের এমন চাঁপা কান্না শুনবে কে? এমন প্রশ্ন অসহায়দের।

সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক