কপিলমুনি এলাকার চিংড়ী চাষীরা ঝুঁকছেন কাঁকড়া চাষের দিকে

প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯ | আপডেট: ৭:৩১:অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯

কপিলমুনি (খুলনা) প্রতিনিধি:
এক সময় দেশে উল্লেখযোগ্য পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা আসতো দক্ষিণের চিংড়ি খাত থেকে, কিন্তু সে হিসেবটা যেন পাল্টে গেছে। তাই খুলনার কপিলমুনি এলাকার অনেক চিংড়ি চাষীই বর্তমানে বিকল্প চাষ হিসেবে কাঁকড়াকে বেছে নিচ্ছেন।
জানাযায়, ২০-২৫ বছর ধরে কপিলমুনি এলাকায় অধিকাংশ জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। সাদা সোনা খ্যাত চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ, পর্যাপ্ত জমির অভাব, হারীর মূল্য বেশি, চিংড়ির বাজার মূল্য কম ও জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে চিংড়ি চাষ অনেকটা ক্ষতির মুখে। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আজ অনেকেই কাঁকড়া চাষের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। কেউ চিংড়ি চাষের পাশাপাশি কাঁকড়া চাষ করছেন। আবার কেউ চিংড়ি চাষ ছেড়ে দিয়ে শুধু মাত্র কাঁকড়া চাষের দিকে যাচ্ছেন। অসাধু ব্যবসায়ীদের অনৈতিক হস্তক্ষেপে চিংড়ির বৃহৎ এ বাজারে ধ্বস নেমে এসেছে এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চিংড়ির মূল্য কম, ফলে চাষীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। তাছাড়া ভাইরাসের আক্রমণ বেশির ভাগ চাষীকে হতাশ করে দিয়েছে। যেসব দেশে চিংড়ি রপ্তানী হতো সে সব দেশে দিন দিন বাড়ছে কাঁকড়ার কদর। কোটি কোটি টাকা চিংড়ি চাষে বিনিয়োগ করে আসল টাকার ফেরৎ না পাওয়ার আশংকায় রয়েছেন তারা। বড় বড় ঘের মালিকরা এখন বাগদার পাশাপাশি কাঁকড়া চাষে পুঁজি বিনিয়োগ করছেন। ১০০ বিঘা জমিতে ২০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে যেখানে ৫ লক্ষ টাকা লাভ করা কষ্ঠ সাধ্য ব্যাপার, সেখানে ৫ বিঘা জমিতে দেড় লক্ষ টাকা বিনিয়োগে ৫ লক্ষ টাকা অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বড় বাগদা ও গলদার দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে আসা, পোনার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকের মুজরী বৃদ্ধি ও জমির হারী বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশির ভাগ ঘেরমালিকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। ভাইরাসে অক্রান্ত হওয়ার কারণে প্রতি বছর বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখিন হতে হয় চিংড়ি চাষীদের, পক্ষান্তরে উন্নত প্রযুক্তিতে কাঁকড়া চাষ বেশ জনপ্রিয় উঠছে এ অঞ্চলে।
কাঁকড়া চাষী আমিন উদ্দিন গাজী বলেন, ‘বাগদা ও গলদা চাষের চেয়ে কাঁকড়া চাষে স্বল্প সময়ে বেশি লাভবান হওয়া যায়, কাঁকড়ায় ন্যায্য মূল্যও পাওয়া যায়, তাছাড়া এ ব্যবসা ভাইরাসের ঝুঁকিমুক্ত, তাই আমি চিংড়ি চাষ ছেড়ে এখন কাঁকড়ার চাষ করছি।’
কাঁকড়া চাষী আজিজুর রহমান বলেন, ‘সম্ভাবনাময় কাঁকড়া চাষের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা দিলে এ খাত থেকে প্রতি বছর মোটাংকের বৈদেশিক অর্থ আসবে। আর বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করতে পারলে হয়তোবা দক্ষিনাঞ্চলের কাঁকড়া চাষীরা তাদের কাঙ্খিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে পারবে।’

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/আমিনুল ইসলাম বজলু/পাইকগাছা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক