ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন: কেশবপুরে বিতর্কিতরাই নৌকার কান্ডারী হতে চান

প্রকাশিত: ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২১ | আপডেট: ১০:৩৭:পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২১

তফশীল ঘোষণা না হলেও যশোরের কেশবপুরে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিতর্কিতরাই আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যশি হয়ে দিনরাত গ্রাম, পাড়া মহল্লায় যেয়ে ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করছেন। এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অধিকাংশই গত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করার অভিযোগ রয়েছে। তারাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার কান্ডারী হতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে দেন দরবার শুরু করেছেন। এতে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির আহবানে গত ১৬ অক্টোবর শহরের আবু শারাফ  সাদেক অডিটোরিয়ামে ১১টি ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তার নির্দেশে শূন্য রেজুলশন খাতায় ইউনিয়ন নির্বাহী কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর করে নেয়া হয়। এর পাশাপাশি ওই সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হুসাইন ইসলাম মনোনয়ন প্রত্যাশি ৮৬ জনের কাছে অঙ্গীকারনামা ফরম বিতরণ করেন এবং তাদের কাছ থেকে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট করলে বহিষ্কার করা হবে বলে ওই ফরমে স্বাক্ষর করেও নেয়া হয়েছে।

এদিকে, শূন্য রেজুলেশন খাতায় ১১ ইউনিয়ন কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর নেওয়ায় কমিটির সদস্যসহ তৃণমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, শূন্য রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করানোর বৈধতা নেই বলে প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি সভা থেকে বেরিয়ে আসেন।

সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কমিটির সভাপতি এস এম রুহুল আমিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা কমিটির সদস্য মেয়র রফিকুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি তপন কুমার ঘোষ, সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক হুসাইন ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাসিমা সাদেক, সংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত, দপ্তর সম্পাদক মফিজুর রহমান।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য সোহরাব হোসেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছিলেন তারাই মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কাছে আবেদন করায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এদেরকে মনোনয়ন দেয়া হলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, তৃণমূলের সভা ইউনিয়নে হওয়ার কথা থাকলেও সভাপতি তার ইচ্ছামত আবু শারাফ সাদেক অডিটোরিয়ামে সভা করে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ করেছেন। গত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর বিপক্ষে যেসব চেয়ারম্যান ও মনোনয়ন প্রত্যাশিরা কাজ করেছিলেন, সেইসব চেয়ারম্যান ও অধিকাংশ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাছাই করে স্বাক্ষর করা ওই শূন্য রেজুলেশন খাতায় ১ ও ২ নভেম্বরে তাদের নাম লিপিবদ্ধসহ রেজুলেশন করে কেন্দ্রে পাঠানোর একটি ষড়যন্ত্র করা হয়েছে ওই সভায়। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, দখলদার ও মাদক সেবনকারী অধিকাংশই মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। আমি নির্ভুলভাবে মনোনয়ন প্রত্যাশিদের একটি তালিকা স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রেরণ করবো।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এসএম রুহুল আমিন সভায় ঘোষণা দেন, দলের স্বার্থে শূন্য রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করানো হয়েছে। তবে ইউনিয়ন থেকে যারাই দলের হয়ে নির্বাচন করতে চান তাদের সকলের নাম ওই রেজুলেশন খাতায় লিপিবদ্ধ করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মশিয়ার রহমান। নিজস্ব প্রতিবেদক। কেশবপুর, যশোর