শত বছরের পুরনো কপিলমুনি হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি প্রকাশিত: ১০:০৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২০ | আপডেট: ১০:০৬:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২০ নিজস্ব প্রতিবেদক, পাইকগাছা(খুলনা): খুলনার কপিলমুনির ঐতিহাসিকতা ও বর্ধিষ্ণু জনপদের শত বছরের পুরনো কপিলমুনি হাসপাতালটিকে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠাকালিন নাম ভরত চন্দ্র হাসপাতাল হিসেবে নামকরণ ও আধিুনিক চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি এখন সময়ের দাবি। হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিটা এলাকার মানুষের শুধু প্রাণের দাবিই নয় সঠিক স্বাস্থ্যা সেবা নিশ্চিত করন এখন অতীব জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জানা গেছে, ১৯১৫ সালের ৭ এপ্রিল রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ২০ শয্যা বিশিষ্ট যাদব চন্দ্র চ্যারিটেবল ডিসপেনসারী ও ভরত চন্দ্র হাসপাতাল হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন জেলা পরিষদ, হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতার প্রদেয় অর্থের লভ্যাংশ দ্বারা পরিচালিত হত। হযরত পীর জাফর আউলিয়া, মহাভারতীয় যুগে মুনি কপিল, বৌদ্ধ যুগে বাগনাথমহন্ত স্মৃতি বিজড়িত এবং কপোতাক্ষ তীরবর্তী দক্ষিণ খুলনার সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। দানবীর রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু যার আধুনিক রূপকার। ভৌগলিক অবস্থান বিন্যাসে খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর সীমানা প্রায় ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে কপিলমুনি হাসপাতাল প্রায় অর্ধ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে একমাত্র সরকারী হাসপাতাল। জগৎ বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য স্যার পি সি রায় এর অনুপ্রেরণায় বিনোদ বিহারী সাধু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শিক্ষা, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার জন্য বাণিজ্যিক কেন্দ্র, টেকনিক্যাল স্কুল, উপসানালয় সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে হাসপাতাল নির্মানে তৎকালীন সময়ে নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সহ এক্স-রে মেশিন স্থাপন করেন। তৎকালীন খুলনা সদর হাসপাতালেও উন্নত চিকিৎসার জন্য ছিলনা কোন এক্স-রে মেশিন। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার বিশেষ অনুরোধে কপিলমুনি হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি সদর হাসপাতালে নিজ খরচে ভবন নির্মান সহ প্রতিস্থাপন করা হয়, যাহা আজও দৃশ্যমান। নাছিরপুর গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা শেখ নেছার আলী জানান, এই ঐতিহাসিক ও বর্ধিষ্ণু জনপদের বিশাল জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়োজনীয় জনবল এবং অবকাঠামোগত অবস্থা কপিলমুনি হাসপাতালের নাই। এলাকার প্রবীন ব্যক্তিত্ব সমাজসেবক আলহাজ্ব এরফান আলী মোড়ল জানান, হাসপাতাল শয্যা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। সাবেক উপাধ্যক্ষ আফসার আলী মালী জানান, বৃহত্তর খুলনার ইতিহাসে ও ঐতিহ্যের অন্যতম দাবিদার প্রবীন জনপদ কপিলমুনি। এখানে জন্ম দেশ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের। ঐতিহাসিক স্থান ও বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় হাসপাতালে শয্যা বৃদ্ধি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। স্থানীয় বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যগণ ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর কপিলমুনি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা উন্নীত করনে ডিও দিয়েছেন। ঐতিহাসিক বর্ধিষ্ণু জনপদ কপিলমুনি হাসপাতালের অবকাঠামোর উন্নয়ন ও শয্যা সংখ্যা কমপক্ষে ৩১ শয্যায় উন্নিত করন এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি এবং সময়ের দাবিও বটে। প্রসঙ্গত, কপিলমুনি হাসপাতালটি প্রায় তিন একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে একতলা বিশিষ্ট বহি:বিভাগ, দ্বিতল বিশিষ্ট আন্তঃ বিভাগ, পুকুর ২ টি, বেড সংখ্যা ১০টি, অক্সিজেন সিলিন্ডার -৬টি, অক্সিজেন ফ্লোমিটার ২টি, আবাসিক ভবন (সবগুলি পরিত্যাক্ত) এবং জনবল কাঠামো, ডাক্তার ২ জন, নার্স (পদ ৪টি) শূন্য ১টি, ফার্মসিষ্ট, অফিস সহকারী ২জন এবং রয়েছে ২জন পরিদর্শন কর্মী। আয়া, বাবুর্চি, নাইটগার্ড, ওয়ার্ডবয় ও ফ্লোর ক্লিনার নাই। হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স, অপারেশন থিয়েটার, লেবার রুম ও লেবার ওয়ার্ড নাই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কওছার আলী জোয়ার্দ্দার জানান, রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ২০ শয্যা বিশিষ্ট যাদব চন্দ্র চ্যারিটেবল ডিসপেনসারী ও ভরত চন্দ্র হাসপাতাল হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। অর্ধ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে একমাত্র সরকারী হাসপাতালটি অচিরেই ৩১ শয্যা উন্নীত করার দাবি করেন। সুন্দরবনটাইমস.কম/আমিনুল ইসলাম বজলু সংবাদটি পড়া হয়েছে ২৪৩ বার আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন শিক্ষা সফরে যেতে না দেয়ায় পাইকগাছায় স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা! পাইকগাছার ৬ ইট ভাটাকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা