সাতক্ষীরা টিটিসি ভবনে মুজিববর্ষে আমাদের ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ২:২২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০ | আপডেট: ২:২২:পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০

“শতবর্ষের সাক্ষী তুমি হে মহান
জন্ম তোমার ইতিহাস হবে
দেশ হবে মহীয়ান
তুমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান….”

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০-২০২১ সাল কে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে, তারই ধারাবাহিকতায় আজ ২২শে জানুয়ারী বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কনফারেন্স রুমে  অধ্যক্ষ মোঃ মুছারুেজ্জামানের সভাপতিত্বে মুজিববর্ষে আমাদের ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এ সময় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান বাবু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন লাবসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান সজল, সহ অনন্য নেতৃবৃন্দ। এবং সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শিক্ষক – শিক্ষিকা বৃন্দ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ বাবু মুজিব বর্ষ আমাদের ভাবনা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে  বলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলেটে প্রাণ না হারাতেন তবে আজ তাঁর বয়স হতো ৯৯ বছর ১০মাস ১৬ দিন এবং ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তিনি শতায়ু হতেন। আবার কাকতালীয়ভাবে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ তারিখে বাংলাদেশ তাঁর স্বাধীনতার অর্ধ-শত বার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। কি আশ্চর্য এক মিলের সেতু বন্ধন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর তাঁর স্বপ্নের গড়ে ওঠা বাংলাদেশের। কিন্তু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালিকে জাতি হিসেবে আমরা মাত্র ৫৫ বছর ৪ মাস বাঁচতে দিয়েছি। স্বাভাবিক মৃত্যু হলে শতায়ু তিনি হতেন না, তা কে বলতে পারে! যদি তিনি তাঁর অতি প্রিয় বাংলার মাটিতে শতবর্ষ বেঁচে থাকতেন তবে এই দিনটি জাতি তখন কীভাবে পালন করত, তা ভাবলে মনেপ্রাণে শিহরণ জাগে। সেই উপলব্ধি থেকেই হয়তো বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার সে দেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলেক্ষ্য ২০২০-২০২১ খ্রীস্টাব্দকে মুজিব বর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এই হলো পটভূমি। যে দেশটির জন্য তিনি আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন, যে দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের কথা নিয়েই যিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আত্মনিয়োজিত ছিলেন, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঘোষিত “মুজিব বর্ষ”টি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। জয় বাংলা- এ শ্লোগান আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাইতো গত ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা দেন মহামান্য হাইকোর্ট। আর এই স্লোগান যার মুখে মুখরিত ছিলো সে আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয়সংগ্রামী বাঙালীর প্রিয় নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যাঁর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ অভিজাত এক বংশে শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়েরা খাতুনের ঘরে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে শিশু।বাবা-মা আদর করে নাম রাখলেন ‘খোকা’। টুঙ্গিপাড়ার একটি বনেদী পরিবারের নাম শেখ পরিবার। এই পরিবারের উত্তরসূরী শেখ পরিবারের সুপরিচিত ব্যক্তি শেখ হামিদ গড়ে তোলেন একটি টিনের ঘর। শেখ হামিদের একমাত্র পুত্র শেখ লুৎফর রহমান একজন সজ্জন ব্যক্তি। এখনো মনে পড়ে ১৯৭৪ সালের কথা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৫৪তম জন্মদিন পালিত হলো বাংলার আকাশে দুর্যোগের এক গভীর ঘনঘটার মধ্যে। তিনি তখন ছিলেন গুরুতর অসুস্থ। মাত্র ২ দিন পর চিকিৎসার জন্য মস্কো যাবেন, এই খবরটা মানুষ তখন জেনে গেছে। এই নিয়ে গভীর শঙ্কা মানুষের মনে। বঙ্গবন্ধুর সুস্থতা কামনা করে বয়স্ক মানুষ বিশেষত মা-দাদিরা রোজা রাখছেন, এই খবর তখন পত্রপত্রিকাসহ নানাভাবে জানা যাচ্ছিল।

সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জব- প্লেসমেন্ট অফিসার মোঃ আরিফুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন এবং তার বক্তব্য শেষ করেন।

এ সময় সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধক্ষ্য মোঃ মুছারুেজ্জামান বলেন বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও কৈশোর কোথায় কিভাবে কেটেছে সেই সম্পর্কে বর্ণনা দেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুষমামণ্ডিত টুঙ্গিপাড়ায়। টুঙ্গীপাড়া গ্রামেই শেখ মুজিবুর রহমান ধনধান্যে পুষ্প ভরা শস্য শ্যামলা রূপসী বাংলাকে দেখেছেন। তিনি আবহমান বাংলার আলো-বাতাসে লালিত ও বর্ধিত হয়েছেন।তিনি দোয়েল ও বাবুই পাখি ভীষণ ভালোবাসতেন। বাড়িতে শালিক ও ময়না পুষতেন। আবার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটতেন। বানর ও কুকুর পুষতেন বোনদের নিয়ে। পাখি আর জীবজন্তুর প্রতি ছিল গভীর মমতা। মাছরাঙা ডুব দিয়ে কীভাবে মাছ ধরে তাও তিনি খেয়াল করতেন খালের পাড়ে বসে বসে। ফুটবল ছিল তার প্রিয় খেলা। এভাবে তার শৈশব কেটেছে মেঠো পথের ধুলোবালি মেখে আর বর্ষার কাদা পানিতে ভিজে। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো।

বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমান আদালতে চাকরি করতেন । তার মাতা সায়েরা খাতুন ছিলেন গৃহিনী। পিতা-মাতার স্বপ্ন ছিলবড় হয়ে তিনি একজন বিজ্ঞ আইনজীবী হবেন। টুঙ্গিপাড়ার সেই শেখ বাড়ির দক্ষিণে ছিল কাছারি ঘর। এখানেই মাস্টার, পন্ডিতও মৌলভী সাহেবদের কাছে ছোট্ট মুজিবের হাতেখড়ি। একটু বড় হলে তাদের পূর্ব পুররুষদের গড়া গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়েতার লেখাপড়া শুরু হয়। এরপর পিতার কর্মস্থল মাদারীপুরের ইসলামিয়া হাইস্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে কিছুদিন লেখাপড়া করেন। পরবর্তীতে তার পিতা বদলি হয়ে গোপালগঞ্জে যোগদান করলে তিনি গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন। বিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি। পছন্দ করতেন ইতিহাসের বই।এসব কারণে প্রধান শিক্ষক গিরিশ চন্দ্রসহ সকল শিক্ষকের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন শেখ মুজিব। শিশুকাল থেকেই শেখ মুজিবছিলেন পরোপকারী এবং অন্যায়ের প্রতিবাদী। মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় যেমন সহযোগিতার হাত বাড়াতেন-তেমনি কারো প্রতিঅন্যায় আচরণ দেখলে প্রতিবাদ করতেন। মাত্র তের বছর বয়সে প্রতিবাদের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন তিনি।

মুজিব বর্ষ ২০২০

সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র টিটিসির সকল ট্রেডের ছাত্র ছাত্রী দের উপস্থিতে মুখরিত হয়ে উঠে টিটিসি প্রাঙ্গন।

সুন্দরবনটাইমস.কম/মোঃ সাইদুজ্জামান শুভ/ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক