সাতক্ষীরায় দুদকের দুর্নীতির মামলায় সাবেক সিভিল সার্জন জেল হাজতে

প্রকাশিত: ৭:১০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৯ | আপডেট: ৭:১০:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৮২৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়েরকৃত মামলার আসামী সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ তৌহিদুর রহমানকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার সাতক্ষীরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান ওই নির্দেশ দেন। আসামী তৌহিদুর রহমান হাইকোর্টের আদেশে ছয় সপ্তাহের জন্য জামিনে ছিলেন। গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর তাঁর জামিনের মেয়াদ শেষ হয়। উক্ত জামিন শেষ হওয়ার পর সোমবার স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন।
চাঞ্চল্যকর এই দুর্নীতির মামলার অপর আসামী হিসাব রক্ষক আনোয়ার হোসেন গত ২৭ আগস্ট আত্মসমার্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকেও হাজতে পাঠান। এছাড়া এ মামলার অপর পলাতক আসামী স্টোর কিপার ফজলুল হককে সম্প্রতি হাইকোর্ট এক আদেশে দেশ ত্যাগ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সুত্র জানান এ মামলার প্রধান আসামী সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান গত ২৯ জুলাই হাইকোর্টে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তাঁকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন এবং ওই সময়ের মধ্যে নিন্ম আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। উক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী তৌহিদুর রহমান গত ২৫ আগস্ট সাতক্ষীরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিননামা সম্পাদনের আবেদন করলে আদালত তাঁর জামিন বহাল রেখে জামিননামা সম্পাদনের নির্দেশ দেন।
জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজ তিনি আত্মসমার্পন করেন। তার পক্ষে আদালতে জামিন শুণানীতে অংশ নেন এড. মিজানুর রহমান পিন্টু। তাকে সহায়তা করেন এড. শাহ আলম ও এড. তোজাম্মেল হোসেন তোজাম। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন দুদকের পিপি এড. আসাদুজ্জামান দিলু। তাকে সহায়তা করেন এড. ফাহিমুল হক কিসলু, এড. বদিউজ্জামান, এড. শাহিদুজ্জামান, এড. শামিম আহমেদ, এড. সালাউদ্দিন লোদি প্রমুখ।
এছাড়া চাঞ্চল্যকর এ মামলার অন্যতম পলাতক আসামী সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার মোঃ ফজলুল হককের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল মিস নং ৩৪১১৭/১৮ তারিখ ১১.০৭.১৯ এর আদেশে পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা এবং ওসি শ্যামনগর থানাকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, ফজলুল হককে ২১.০৭.১৯ তারিখের মধ্যে আটক করে নিন্ম আদালতে সোপর্দ করতে এবং সে যেন আদালতের আদেশ ব্যাতিরেকে দেশ ত্যাগ না করে। কিন্তু ওই আদেশ পাওয়ার পর শ্যামনগর থানা পুলিশ ’তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা এবং অন্য এলাকায় বসবাস করে’ মর্মে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে হাইকোর্ট বিভাগ গত ২১.০৭.১৯ তারিখের অপর একটি আদেশে আইজিপি, ডিজিএফআই এবং র‌্যাবের মহা পরিচালক ও পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা এবং ওসি শ্যামনগর থানাকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, মোঃ ফজলুল হক যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য বিভাগের কলঙ্ক দূর্নীতিবাজ ফজলুল হকের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৭ কোটি ৯৯ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬৪৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা আরও একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সে শ্যামনগর উপজেলার ইছাপুর গ্রামের মৃত আজিজুল হকের পুত্র।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৮২৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দূর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় ঢাকার উপ সহকারি পরিচালক জালাল উদ্দীন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামী করে স্পেশাল ২৫/১৯ নম্বর ওই মামলাটি দায়ের করেন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/শা:/সাতক্ষীরা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক