মুরুব্বীদের মত বিরোধের কারনে তাবলীগ জামাত গভীর সাগরে নিমজ্জিত

প্রকাশিত: ১:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯ | আপডেট: ১:৩৫:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯

বর্তমান প্রেক্ষাপট তাবলীগ জামাতের জন্য অশ্রুতপূর্ব অকরুন ঘটনা। যাহা তাবলীগের জন্য অশনি সংকেত, মুসলিম জাতির জন্য কলঙ্কজনক। এই সঙ্কটময় মূহুর্তে, আল্লাহ পাকের আদেশ ও নিষেধ এর প্রতি গুরুত্বারোপ করে, সকল প্রকার প্রতি হিংসা পরায়ন মনোভাব পরিহার করে ও নীতি নৈতিকতার আদর্শের বিকাশ ঘটায়ে, লোভ লালসা, পদ পদবীর মোহত্যাগ করে দেশ ও জাতির কল্যানের জন্য এক প্লাটফরমে ফিরে এসে উম্মতের দরদ আর ফিকির নিয়ে সুসংগঠিত হওয়া বাঞ্চনীয়। মুরুব্বীদের ভূলের কারনে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ায়ে মুসলিম উম্মহর জাতীয়তাবোধ ও ভ্রাতৃত্ব বোধকে সম্পূর্ন ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। দিক ভ্রান্ত মানবজাতিকে অপ সিদ্ধান্তের ঐশী বানীর কারণে পথ হারায়ে গোমরাহী হয়ে ধর্ম্মান্ধতায় নিমর্জ্জিত।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

মানবজাতির কল্যানের জন্য উম্মতের দরদ চিন্তা ও ফিকির যদি অন্তরে বদ্ধমূল না হয় বা সকল প্রতিকুলতার মধ্যে যদি দ্বীন ইসলামকে প্রাধান্য দেওয়া না যায় তাহলে লোক দেখানো তাবলীগ করার প্রয়োজন কি? পূর্বের ন্যায় তাবলীগ জামাত যদি এক প্লাটফরমে ফিরে এসে সুসংগঠিতভাবে চালানো না যায় তাহলে বুঝতে হবে অধঃপতন নিশ্চিত। আল্লাহওয়ালাদের ভালবাসা অকৃত্রিম ও নির্ভেজাল সেহেতু আল্লাহর সৃষ্টির সেবায় স্রষ্টার নৈকট্য লাভ হয়, ধার্মিকতা ও মানবতা দুটি গুনই সৌন্দর্যমন্ডিত করতে পারে। বস্তুবাদে আকৃষ্ঠ না হয়ে আধ্যাতিকতায় অন্বেষন করে যেখানে ত্যাগ নেই আছে শুধু আসক্তি ও মোহ সেখানেই কিন্তু অশান্তি দন্ধ কলহ। যাহারা মন চায় জিন্দেগী মত চলে তাদের মনে করিতে হইবে অকৃতার্থ জীবন। লোভ লালসা পদ পদবীর মোহে পড়ে প্রতিহিংসা পরায়ন ও আমিত্ব যেন গ্রাস করে বসে আছে। সেই কারণে তাবলীগ জামাতকে পরিকল্পিতভাবে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এই সমস্ত জঘন্য কর্মকান্ডের নেতৃত্বের প্রাধান্য দিতে যেয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চরিত্বার্থ হচ্ছে, সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন হচ্ছে, দেশ ও দশে জানছে আমি একজন তাবলীগ জামাতের বড় বড় মুরুব্বী। এই সমস্ত খেতাব অর্জন করতে যেয়ে এই দেশের সুনাম ক্ষুন্ন সহ ইসলামপ্রিয় সরলমনা নিরীহ সহজ সরল মানুষগুলি প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে দাঙ্গা, হাঙ্গামা, দন্ধ কলহ, খুন জখম সহ সকল প্রকার ইসলাম বিরোধী কার্য্যকলাপে জড়ায়ে আজ হাবুডুবু খাচ্ছে। আর এক শ্রেনীর স্বার্থ্যন্বেষী মহল বসে ফায়দা লুটছে। এই সমস্ত জঘন্য কর্মকান্ড ও অনৈতিক কার্য্যকালাপ চালায়ে, মানুষ মেরে দ্বীন কায়েম আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছু নহে। তাবলীগ জামাত একটি সম্পূর্ন অরাজনৈতিক শান্তিপ্রিয় ইসলামী সংগঠন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে তৃনমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় অধিকাংশ মুরুব্বীরা রাজনীতিকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে।

তৃনমূল পর্যায়ে মুরুব্বীদের মধ্যে বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতার কারনে হিংসাত্বক মনোভাব দিন দিন বৃৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিরোধ মূলক কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামীতে যে কোন মূহুর্তে রক্তক্ষয়ী গনঅভ্যুত্থান ঘটতে পারে। ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটতে আছে। নীতিভ্রষ্ট হয়ে পদস্থলন হয়েছে, সেই কারণে লোভ লালসা পদ পদবীর মোহ যেন অন্তরে বাসা বেধে, গোমরাহী হয়ে, ধর্ম্মন্ধতায় মনে হয় চোখে অন্ধকার দেখছে। কোনটি ভালো কোনটি মন্দ এই জ্ঞান যাদের মধ্যে নেই তাদের এই বাংলার জমিনে তাবলীগ করার কোন প্রয়োজন নাই। অচিরেই তাবলীগ জামাত অন্ধকারে নিমর্জ্জিত হবে। বর্তমান পেক্ষাপটে দিধা দন্ধে জড়িয়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে। বিষয়টি জটিলতা নিরশনের লক্ষ্যে দেশ বরেন্য ওলামায়েকেরাম সহ জ্ঞানী গুনী শুশীল সমাজ ও সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করিতেছি যে, বাংলার জমিনে সমঝোতার ভিত্তিতে যদি তাবলীগ জামাত এক প্লাটফরমে চলতে না পারে তাহলে বুঝতে হবে এই দেশ থেকে অচিরেই তাবলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা। তাবলীগ জামাত দেশের সর্বজন স্বীকৃত, আমাদের জন্ম লগ্ন থেকেই দেখছি সুনামের সহিত কার্যক্রম চলিতেছে। আমিও একজন তাবলীগ প্রিয় তিন চিল্লার সাথী। তাবলীগের ছত্র ছায়ায় এসে এদেশের তথা বিশ্বের অন্যান্য দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ সোনার মানুষে পরিনত হয়েছে। দেশের সমাজপতি বুদ্ধিজীবি, কৃষিজীবি, শ্রমজীবি সরকারী বহু কর্মকর্তা কর্মচারী শিক্ষিত অশিক্ষিত সুদ ঘুষ ও নেশার সহিত জড়িত সহ সকল অপকর্মের বহু হোতারা সোনার মানুষে পরিনত হয়েছে যাহা এদেশের সর্বজন স্বীকৃত। তাহলে তাবলীগ জামাতের এই পরিনতি কেন? নিশ্চয় এর পিছনে কোন রহস্য লুকায়িত আছে। তাবলীগের গনজোয়ার দেখে ইসলামবিরোধী নাস্তিকবাদী তাগুতি শক্তিগুলির মনে হয় গাত্রদাহ শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাদের চিন্তা চেতনা হলো, যে কোন কৌশলে তাবলীগের গতিরোধ করতে হবে। যদি আমরা এদের গতিরোধ করতে না পারি তাহলে গোটা বিশ্বের সকল কার্য্যক্রম তাদের নিয়ন্ত্রনে চলে যাবে মনে করে সুকৌশলে তাবলীগ জামাতের মুরুব্বীদের মধ্যে ছোলো পয়জন ঢুকায়ে দিয়েছে। তাদের মদদ পুষ্ঠ হয়ে, রঙ্গিন চশমায় মনে হয় চোখে অন্ধকার দেখছে। রঙ্গিন চশমা খুলে বাস্তব দেখতে হবে। তাবলীগ নিজে চলে না তাকে চালাইতে হয় যেমন প্রদীপ নিজে জ্বলে না তাকে জ্বালাইতে হয়। আসুন আমরা জ্ঞানের বাতি জ্বালাইয়া দেই যাতে পথহারা মানুষগুলি সুন্দর পথের দিক নির্দেশনা পেয়ে মানবজাতিকে এগিয়ে নিতে পারবে। এই দেশে ইসলাম ও মুসলমানের কি করুন পরিনতি। শুধু তাবলীগ জামাতের নয়, এদেশের অধিকাংশ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান প্রধানদের যে সমস্ত অনৈতিক কার্যকলাপ পেপার পত্রিকায় দিন দিন প্রকাশিত হচ্ছে, ভাবতেও অবাক লাগে, আমার বোধদ্বয় হয় না ইসলাম ও মুসলমান বলে দাবী করতেও লজ্জাবোধ হচ্ছে। এই সমস্ত বড় বড় মুরুব্বীদের ভূলের কারণে বিবাদ আসে। এতে বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হয়, শুরু হয় দলাদলী, মাথা চাড়া দিয়ে উঠে অঞ্চলভিত্তিক দন্ধ, মূল কেন্দ্র বিন্দু বাদ দিয়ে বড় বড় নেতৃত্বের শাখা প্রশাখা গজিয়ে ওঠে। বর্তমান প্রেক্ষাপট তারই বহিঃপ্রকাশ। যাহাদের মধ্যে আত্ন প্রশাদের লেশ নাই, তাহারা যদি ক্ষমতার আসনে বসতে চায়, তাদের উচিত আগে নিজের প্রবৃত্তিকে দমন করা। যাহারা নিজে সংশোধন হয়না তাহারা কখনও অপরকে সংশোধন করতে পারে না। যেসমস্ত অকেতু আলেম সম্পদের মোহে পড়ে ধর্নাঢ্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়, তাহারা আল্লাহ পাকের প্রকাশ্য শত্রু। যাহারা জ্ঞানী তাহারা জ্ঞান অন্বেশ্বন করে ও নিজেকে ছোট মনে করে। আর যাহারা অজ্ঞানী তাহারা নিজেকে সবসময় বড় মনে করে আর খুজতে থাকে সম্পদ। যে জাতি জ্ঞানী গুনী পান্ডিত্ব ব্যক্তিদের অনুসরন অনুকরণ করেনা সে জাতি কখনো গুনী জনকে সন্মান করতে জানে না। আসুন আমরা এই মহেন্দ্রক্ষনে উম্মতের দরদ আর ফিকির নিয়ে সকল মতভেদ ভূলে দেশ ও জাতির কল্যানের জন্য দিক ভ্রান্ত মানবজাতিকে গোমরাহী ও ধর্ম্মাদ্ধতা দূর করে কু-সংস্কারের বেড়াজালে আচ্ছন্ন মানবজাতিকে দাওয়াতের মাধ্যমে আলোর দিশায় একিভূত করতে তাবলীগ জামাতের কোন বিকল্প নাই। অতীতের মত পথ হারা মানবজাতি পথের সন্ধ্যান পাবে, ইল্মে দ্বীন শিক্ষা পাবে, খোদাভীতি অর্জন হবে, ঈমান একিন মোকাম্বেল হবে, দক্ষতা ও মনের দৃঢ়তা বৃদ্ধি পাবে, নীতি নৈতিকতার আদর্শের বিকাশ ঘটবে, সুন্নতের তরাক্বী হবে, দাওয়াত ও তাবলীগের উন্নতি হবে, এই দেশের ইসলমী চিন্তাশীল জ্ঞানী গুনী সহ সকল শ্রেনীর মুরুব্বীদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এটা দেশবাসী কামনা করে। কি লিখেছে কেন লিখেছে এটা না জেনে কে লিখেছে এর গবেষনা চলে, বীজ আগে না গাছ আগে এই রুপ বিতর্কিত মনোভাব নিয়ে মহৎ কাজ বা জাতি কখনো সুসংগঠিত হতে পারে না। আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে দোয়া করি, তাবলীগ জামাত এক প্লাটফরমে ফিরে আসুক। দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করি।

বাস্তববাদী লেখক ও গবেষক: সরদার এম.এ মজিদ
পাটকেলঘাটা, সাতক্ষীরা
মোবাইল নং- ০১৭২৩৯১২৭৪১।

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/ডেক্স/


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক