বেতগ্রাম-তালা-পাইকগাছা-কয়রা সড়কটিতে সোজা করা হচ্ছে ৩০ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক

প্রকাশিত: ৬:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯ | আপডেট: ৬:৩১:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, তালা:
ভাঙাচোরা সড়ক আর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে তালা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষ। খুলনার আঠারো মাইল এলাকার বেতগ্রাম থেকে কয়রার গোলখালী পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার সড়ক আঞ্চলিক মহাসড়কে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। পাশাপাশি এই সড়কের ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সোজা করা হচ্ছে। এজন্য ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প প্রি-একনেকে অনুমোদন হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই একনেক সভায় উঠবে প্রকল্পটি। সুন্দরবনঘেঁষা দেশের সর্বদক্ষিণের উপজেলা কয়রা। এর পাশেই পাইকগাছা, তার আগে তালা উপজেলা।
এক সময় খুলনা নগরীর সঙ্গে কয়রা-পাইকগাছার যোগাযোগের মাধ্যম ছিল নৌ-রুট। ১৯৯৯-২০০০ সালে শিবসা ও কয়রা সেতু চালু হলে খুলনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয় কয়রা উপজেলা। তখন জেলা সড়কের আদলে নির্মিত এই সড়কটিতে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। খুলনার পাইকগাছা ছাড়াও সাতক্ষীরার তালা ও আশাশুনি উপজেলায় যাতায়াতের সহজ মাধ্যম হয়ে ওঠে এই সড়ক। ফলে সড়কে যান চলাচল অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এজন্য অল্প দিনের মধ্যে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কয়েক বছর পর পর সড়কটি মেরামত করা হলেও অল্প দিনের মধ্যেই তাতে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। এতে প্রতি বছরই দুর্ভোগে পড়তে হয় এ চার উপজেলার মানুষকে।
এ ছাড়া সড়কটিতে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। এর মধ্যে বেতগ্রাম পার হয়ে তেঁতুলিয়া মোড়, তালা বাজারের সামনের সড়কটিতে ৯০ ডিগ্রি কোণের বিশাল বাঁক রয়েছে। তালা বাজারের পরে গোনালী বাজার মোড়, একই উপজেলার ধাপের পুকুর, পাইকগাছা উপজেলার অনেকাংশে ও কয়রা উপজেলার লক্ষ্মীখোলা মোড়, একই উপজেলার সংগ্রামের মোড় সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাঁক নিয়েছে। প্রায়ই এ সকল বাঁকে দুর্ঘটনা ঘটে।
সড়ক বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ‘বেতগ্রাম-তালা-পাইকগাছা-কয়রা সড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ প্রকল্প গ্রহণ করে সড়ক বিভাগ। কিন্তু নানা কারণে প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। পরে আশু সংস্কার করে প্রকল্পটি আবারও পাঠানো হয়। সম্প্রতি সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর প্রি-একনেকের সভায়ও প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। আগামী মাসে প্রকল্পটি একনেকের সভায় উঠবে।
খুলনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ জানান, প্রায় ৬৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়ক স্থায়ীভাবে সংস্কার করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সোজা করা। এজন্য ১১ দশমিক ২৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এতেই ব্যয় হবে ৭১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ ছাড়া সড়কে বাঁধ ও প্রশস্থকরণে ২৭ কোটি টাকা এবং ১০ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ২৩টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, নদী শাসন, আরসিসি ড্রেন, প্যালাসাইডিংসহ বিভিন্ন কাজ করা হবে। তিনি জানান, সড়কটি আগের মতো ১৮ ফুট চওড়া থাকবে। কিন্তু পেভমেন্ট শক্ত করে নির্মাণ করা হবে এবং সড়কটি সোজা হবে। প্রতি বছর এটি আর মেরামতের প্রয়োজন হবে না।
এ ব্যাপারে খুলনা-৬ (পাইকগাছা ও কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আকতারুজ্জামান বাবু বলেন, সড়কটি স্থায়ী ভাবে সংস্কার করা হলে কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, সাতীরার তালা, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার প্রায় এক কোটি মানুষ উপকৃত হবে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/সেলিম হায়দার/তালা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক