পিপিএম সেবা পদক পেলেন তালার সন্তান শ্যামল মুখার্জী

প্রকাশিত: ৫:৪১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২০ | আপডেট: ৫:৪১:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২০

রহমান আজিজ, ঢাকা:
ব্যতিক্রমী সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পেলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ কমিশনার (অর্থ) শ্যামল কুমার মুখার্জী।
রোববার বেলা সাড়ে ১০টায় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সপ্তাহ-২০২০ অনুষ্ঠানে তাকে এ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের ১১৮ জন সদস্যের হাতে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) তুলে দেয়া হয়। পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদের কর্মকর্তারা। এরমধ্যে বিপিএম সাহসিকতা পদক পেয়েছেন ১৪ জন, সেবায় অবদানের জন্য বিপিএম পদক ২৮ জন, সাহসিকতার স্বারক হিসেবে পিপিএম পদক ২০ জন ও পিপিএম সেবা পদক পেয়েছেন ৫৬ জন।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

এদের মধ্যে শ্যামল কুমার মুখার্জী তার কৃতিত্বের জন পেয়েছেন পিপিএম সেবা পদক। তিনি ডিএমপির অর্থ বিভাগ পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনকরণ, স্বয়ংক্রিয় বেতন পদ্ধতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের দায়িত্ব পালন, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচন পরিচালনা, কমিউনিটি ব্যাংকের দায়িত্ব পালন, বাংলাদেশ লিমিটেড, ‘উদ্দীপন’ ও ‘ডিটেকটিভ’ পুলিশ সপ্তাহ বিশেষ সংখ্যাসহ বিভিন্ন প্রকাশনায় অবদান রাখার মতো কাজ করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানা যায়, অর্থ বিভাগের সকল কাজ পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় (অটোমেশন) করার লক্ষ্যে অটোমেশন সফটওয়্যার কেনা হচ্ছে শ্যামল কুমারের উদ্যোগে। এর ফলে বর্তমানে ব্যবহৃত সনাতন পদ্ধতির সকল কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয়ভাবে হবে। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ও নেতৃত্বে ডিএমপিতে সর্বপ্রথম কোনো ইউনিট পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন হচ্ছে।

তার উদ্যোগে ডিএমপির ৪২টি বিভাগের ৩৩ হাজার ৮৪৪ জন গেজেটেড ও নন-গেজেটেড পুলিশ ও দাপ্তরিক কর্মকর্তা, কর্মচারীর মাসিক নিয়মিত বেতনভাতাসহ অন্যান্য আর্থিক কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে। এছাড়াও তিনি মাসিক টিএ, ডিএ বিল এবং গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, টেলিফোন বিল নিয়মিত প্রদানে অধিকতর স্বচ্ছতা এনেছেন।

 

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ২০২০ উপলক্ষে প্রকাশনা ও বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখক, পুলিশ সদসদের লেখা আহ্বান ও সংগ্রহ কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন।
এছাড়াও তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উপ-নির্বাচন উপলক্ষে আনুষঙ্গিকসহ প্রায় ১৫ হাজার ৩১১ জন কর্মকর্তা, কর্মচারীর বাজেট প্রস্তুতসহ বাজেট সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের বেতনভাতা পরিশোধের জন্য তার তত্ত্বাবধানে অ্যাকাউন্ট খোলা ও ডেবিট কার্ড বিতরণসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী কনসেপ্ট নিয়ে তার একক সম্পাদনায় ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের বার্ষিক পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে উদ্দীপন এর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তাঁর সম্পাদনায় বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি ক্লাবের প্রথম স্মরণিকা প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমানে তিনি পুলিশ সপ্তাহ ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে নিউজ পেপার সাপ্লিমেন্ট, ডিটেকটিভ, পুনাক স্মরণিকা ও পুলিশ পদক প্রকাশনা কমিটিতে মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) কর্তৃক সদস্যসচিব মনোনীত হয়ে কাজ করেছেন।

শ্যামল কুমার মুখার্জী সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামের স্বর্গীয় দিলীপ কুমার মুখার্জী ও পদ্মরানী মুখার্জীর ছেলে। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (অর্থ) হিসেবে কর্মরত।
শ্যামল কুমার মুখার্জী ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ঢাকা জেলার শ্রেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত হন। একই বছরে নাটোর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করে গুরুদাসপুরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রুখে দেয়ায় ২০১৫ সালে প্রথমবার আইজিপি ব্যাজ পান তিনি। এরপর ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ সালে টানা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বারের মত আইজিপি ব্যাজ পান পুলিশের এই কর্মকর্তা। এছাড়া ডিএমপিতে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে কয়েক দফায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
শ্যামল কুমার মুখার্জীর তালা বি.দে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও তালা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। তালায় লেখাপড়া করাকালীন সময়ে সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত হন। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করা এই পুলিশ কর্মকর্তা জাপানের কিউশু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের উপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০০৩ সালে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশ বিভাগে যোগদান করার পর বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তর, ইউনিটে কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি ইতোমধ্যে একাধিকার পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন।
পদক প্রসঙ্গে শ্যামল কুমার মুখার্জীর মা পদ্ম রানী মুখার্জী বলেন, ছেলের ভালো কাজ ও পদক পাওয়ার জন্য আমি গর্বিত। আমি খুব সুখী মানুষ। শ্যামল একজন সৎ পুলিশ অফিসার সকলেই যখন এটা বলে তখন গর্বে আমার বুকটা ভরে যায়। আমি সকলের কাছে আমার ছেলের জন্য দোয়া চাই।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (অর্থ) শ্যামল কুমার মুখার্জী বলেন, ভালোকাজের স্বকৃতি কাজের সব সময় কাজের প্রতি উৎসাহ ও উদ্বীপনা বাড়িয়ে দেয়। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব যেন যথাযথভাবে পালন করে দেশ ও মানুষের সেবা করতে পারি সেজন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করি।

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক/ঢাকা

 


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক