কালীগঞ্জ থানার এস.আই জিয়ারত হোসেন স্ট্যান্ড রিলিজ

প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২১ | আপডেট: ৫:১৯:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২১
এস.আই জিয়ারত হোসেন।

দাবিকৃত ঘুষের টাকা না পেয়ে এক বাংলাদেশী নাগরিককে ভারতীয় বানিয়ে জেল হাজতে পাঠানো সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার সেই উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়ারত হোসেনকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়ারত হোসেন নতুন কর্মস্থল পাটকেলঘাটা থানায় যোগদান করেছেন। তবে, কালিগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এ ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তাকে স্বাভাবিক বদলি করা হয়েছে।

 

জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে দু’টি মোটর সাইকেলে উপ-পরিদর্শক জিয়ারত হোসেনসহ সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ কালীগঞ্জ উপজেলার ডেমরাইল গ্রামের মনোরঞ্জন মন্ডলের বাড়িতে এসে প্রথমে তক্ষক সাপ বিক্রি, পরে গাজা ও সর্বশেষ জুয়া খেলার মিথ্যা অভিযোগ এনে মনোরঞ্জন ও তার ছেলে সরোজিতের হাতে হাতকড়া পরান। এ সময় তাদের ঘরে ঢুকে ঘরের চাল ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করা হয় আসবাবপত্র। এরপর কালিমন্দিরের ভিতরে জুতা পরে ঢুকে জিনিসপত্র তছনছ করা হয়। খবর পেয়ে মনোরঞ্জনের শ্যালক ইউপি সদস্য প্রশান্ত হালদার মোটর সাইকেলে তাদের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলে তাকেও মাদক দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন জিয়ারত হোসেন। স্থানীয় লোকজনও পুলিশের হুমকিতে তাদের বাড়িতে আসতে পারেননি।

সরোজিতের কোমরে পুলিশ গাজার দিয়ে মাদক ব্যবসায়ি বানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে ইউপি সদস্য প্রশান্ত’র সঙ্গে থাকা দেবেন মন্ডল ও সুভাষ মন্ডলকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে তাদের হাতকড়া পরিয়ে মনোরঞ্জনের বাড়িতে রাখা হয়। তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা মনোরঞ্জনের বড় ছেলে স্বপন মন্ডলের ভায়রাভাই শ্যামনগরের কাঁচড়াহাটি গ্রামের কমলেশ মন্ডলকে ঘর থেকে বের করে নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত করে পুলিশ। এরপর মনোরঞ্জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। চারজনকে ছেড়ে দিতে ইউপি সদস্য প্রশান্ত হালদারের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন উপ-পরিদর্শক জিয়ারত হোসেন। টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় ইউপি সদস্য’র মোটর সাইকেলসহ সরোজিত, কমলেশ, দেবেন ও সুভাষকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পরদিন সকালে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ইউপি সদস্য প্রশান্ত’র মোটর সাইকেলসহ তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মামলা দেওয়ার আগে হরিদাস মন্ডলসহ কয়েকজন কমলেশের স্মার্ট কার্ড নিয়ে পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান ও উপ-পরিদর্শক জিয়ারত আলীকে দেখালেও ২০ হাজার টাকা দিতে না পারায় কমলেশকে ভারতীয় নাগরিক বানিয়ে মামলা দিয়ে জেলে পাঠায় পুলিশ। পরে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কমলেশকে দুর্বল ধারায় চার্জশীট দেবেন বলে জানান মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জিয়ারত হোসেন।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরই মধ্যে গত বৃহষ্পতিবার কমলেশ বিচারিক হাকিম আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। এদিকে, এ ঘটনায় তদন্তে নেমে গোয়ন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের সত্যতা পান। এরই আলোকে জিয়ারত হোসেনকে শুক্রবার স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দোলোয়ার হুসেন জানান, বাংলাদেশী নাগরিককে ভারতীয় বানিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে, উপ-পরিদর্শক জিয়ারত হোসেনকে স্বাভাবিক বদলী করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

 

এসজি/ডেক্স


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স