করোনা মহামারিতে কিস্তি ও হালখাতার চাপ: দিশেহারা রাজগঞ্জের মানুষ

প্রকাশিত: ১০:৫১ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২০ | আপডেট: ১০:৫১:অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২০

প্রাণঘাতি মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মানুষ যখন ঝুকির মধ্যে, রাজগঞ্জে তখন এনজিও ঋণের কিস্তি আদায় ও হালখাতার হিড়িক পড়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যে সীমিত পরিসরে চলতে না চলতেই  এনজিও’র কর্মীরা বাড়ীতে যেয়ে কিস্তি আদায় করছেন এবং কিস্তির টাকা দিতে না পারলে চাপ দিচ্ছেন। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কর্মহীন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, করোনার প্রাদুর্ভাবে ও লকডাউনের কারণে মানুষ কর্মহীন পয়ে পড়ে। তারপরও জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু করেছে এনজিও গুলো কিস্তি আদায় কার্যক্রম। ব্যবসায়ীরা শুরু করেছে হালখাতার প্রতিযোগিতা। ঘরে ঘরে চলছে হালখাতা। এতে কর্মহীন হয়ে পড়া গ্রামাঞ্চলের মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য রয়েছে চাপ। জুনের মধ্যেই বিলম্ব মাশুল ছাড়া বিদ্যুৎ বিল দিতে বাধ্য হচ্ছেন। করোনা মহামারী শুরুর পর এমনিতেই উপার্জন কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তার ওপর এনজিও’র কিস্তি তাদের কাছে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।

তাদের অভিযোগ, কখনও মোবাইল ফোনে, কখনও বাড়িতে গিয়ে কিস্তি পরিশোধের জন্য গ্রাহককে নানাভাবে চাপ দিয়ে হয়রানি ও হুমকী দিচ্ছেন এনজিওগুলোর মাঠকর্মীরা। সুদের হার বৃদ্ধি পাবে মর্মে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন এনজিওগুলো। ফলে নিরুপায় হয়েই মানুষ ধারদেনা করে অতিকষ্টে এনজিও’র কিস্তি দিতে হচ্ছে ঋণগ্রহীতাদের। এরপরও অল্পসংখ্যক সদস্য সাপ্তাহিক কিস্তি দিতে না পারলেও দু-একদিন পরই কিস্তি আদায় করা হচ্ছে তাদের কাছ থেকে। ইজিবাইক চালক, ভ্যান চালক, ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালকরা যাত্রী পাচ্ছেন না। বাজারেও জনসমাগম কমছে। ছোট খাট দোকানীদের বেচাবিক্রয় নেই বল্লে চলে। দিন মজুরদের কাজে নিচ্ছেন না অনেকে। কিন্তু এ অঞ্চলের করোনা আতংকিত হয়ে মানুষের পিছু ছাড়ছে না বিভিন্ন এনজিও’র কর্মীরা। কর্মীদের নেই কোন করোনা সরঞ্জম। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মীরা বাড়িতে যেয়ে কিস্তি আদায় করছেন।

রাজমিস্ত্রি মুক্তার হোসেন, ভ্যান চালক আজাহার আলী বলেন, করোনার কারণে কাজ কাম নাই। তারপরও এখন কিস্তির চাপের পাশাপাশি চলছে হালখাতার বাড়তি চাপ। সংসার চালানোই হিমসীম খেতে হচ্ছে তারপরও এ সব চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

চা বিক্রেতা আরশাদ আলী বলেন, করোনার শুরু থেকেই চায়ের দোকান বন্ধ। সামান্য সরকারী সহযোগিতা পেলেও সংসার চালানো এখন কষ্টকর। তাই লকডাউন না থাকায় এখন দোকান খুলতে শুরু করেছি। তবে ওয়ান টাইম গ্লাসে চা বিক্রি করতে বাড়তি টাকা নিতে পারছি না।

মুদি দোকানী রেজাউল ইসলাম বলেন, মহাজনদের দোকানে বাকী থাকার কারণে এখন হালখাতা করা ছাড়া কোন উপায় নেই। এ কারণে ব্যবসায়ীরা হালখাতার উপর ঝুকছে। 


আপনার মতামত লিখুন :

উত্তম চক্রবর্তী। নিজস্ব প্রতিবেদক। মণিরামপুর, যশোর