কপিলমুনি পুলিশ ফাাঁড়ির সেই বিতর্কিত এসআই অভিজিতের বদলী

প্রকাশিত: ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২০ | আপডেট: ৬:৫৪:অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২০

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ীর বহুল আলোচিত সেই এস আই অভিজিত রায়কে অবশেষে বদলী করা হযেছে। বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানাগেছে, কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ীতে চলতি বছরের শুরুর দিকে যোগদানের পর থেকে এস আই অভিজিত নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। ঘুষ, দূর্নীতি, অসদাচারণ ইত্যকার নানা ঘটনায় ধারাবাহিক সংবাদের শিরোনাম হয়ে ওঠেন তিনি। একের পর এক তার বিরুদ্ধে দৈনিক সংযোগ বাংলাদেশ পত্রিকায় তথ্যবহুল খবর প্রকাশিত হতে থাকে। আর তারই জের হিসেবে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে নড়ে চড়ে বসে এবং তাকে কপিলমুনি থেকে খুলনার দিঘলিয়া থানায় বদলী করা হয়।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

জানা গেছে, অভিজিতের নানান অপকর্মের মধ্যে অন্যতম ঘটনা ছিল নির্দোষ দু’সহোদর অপ- দিপুকে গাঁজা, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা দিয়ে মাদক মামলায় চালান দেয়া। তিনি স্থানীয় মাদক সম্রাটের দ্বারা প্রবাবিত হয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এস আই অভিজিৎ গত ২৩ মে কানাইদিয়ার দু’সহোদর অপু ও দিপু ঈদের বাজার করতে আসলে মাছা বাজার এলাকা থেকে তিনি আচমকা তাদের আটক করেন। উপস্থিত জনতার সামনে আটককৃতদের দেহ তল্লাসী করে কোন মাদক উদ্ধার দেখাতে না পারলেও ফাঁড়ীতে নিয়ে গিয়ে তিনি ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে মাদক মামলা দিয়ে চালান দেন।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। যদিও তারা আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন, তবে পারিবারিক সুনাম ক্ষুন্ন, হয়রানী ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে তাদের মা হোসনেআরা অভিযোগ করেন। এছাড়া একটা বসতবাড়ির বিতর্কিত জায়গাকে কেন্দ্র করে নগর শ্রীরামপুর গ্রামের মালোপাড়ায় মৃতঃ শহীদ হাজরার কন্যা জমির মালিক শরীফা বেগম ও শহীদ হাজরার স্ত্রীর কাছ থেকে সাম্প্রদায়িকতার মামলার ভয় দেখিয়ে দুই দফায় মোট ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এছাড়া ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী কপিলমুনির ২ কসমেটিকস ব্যবসায়ী পাইকগাছা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নিতে যাওয়ার পথে তাদেরকে আটক করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। প্রায়ই মোটর সাইকলে আটক করে তিনি অর্থ বাণিজ্য করেন। কপিলমুনি বাজারে এক স্বনামধন্য জুয়েলার্স ব্যবসায়ী পরিমলের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ এনে গ্রেফতার করতে গেলে স্থানীয় জুয়েলারী ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়েন। এসময় প্রতিবাদকারী এক ব্যবসায়ী নেতাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের হুমকিও দেন তিনি।

কপিলমুনি বাজারে ২২ এপ্রিল গভীর রাতে এক মুড়ি ব্যবসায়ীর কারখানার প্রধান দরজা ভেঙ্গে বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করে ৩হাজার টাকা নেন। প্রচন্ড ধুমপায়ী এই পুলিশ অফিসার জনসমাগম স্থানে প্রকাশ্যে ধুমপান করে সুধীমহলে ব্যাপক সমালোচিত হয়ে ওঠেন। এরকম নানা ঘটনা একের পর এক জন্ম দেওয়া ছাড়াও সাধারণ মানুষের সাথে রুঢ় আচারণ করে তার পেশাগত দায়িত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
এদিকে তার নানা অনৈতিকতার ঘটনা একাধিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ আমলে এনে তাকে খুলনার দিঘলিয়া থানায় বদলী করেছে। খবর পেয়ে সুচতুর অভিজিত বদলী ঠেকাতে তববীর মিশনে নেমেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

এইচএমএ হাশেম। নিজস্ব প্রতিবেদক। কপিলমুনি, ‍খুলনা