কপিলমুনি ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঝিমিয়ে পড়েছে কার্যক্রম

প্রকাশিত: ২:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯ | আপডেট: ২:৫৬:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, কপিলমুনি(খুলনা):
দক্ষিণ খুলনার ঐতিহ্যবাহী ক্রিড়া সংগঠন কপিলমুনি ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (কে কে এস পি) ’র কার্যক্রম একেবারেই ঝিমিয়ে পড়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে জগা-খেচুড়ী ভাবে নাম মাত্র ক্লাবের কার্যক্রম চলছে। ক্লাবের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা, দীর্ঘদিন এককভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার কৌশলের কাছে হার মেনেছে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটির সকল কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠার পর এই ক্লাবটিকে ঘিরে এলাকার সচেতন মানুষ তাদের ছেলে-মেয়েদের সময় উপযোগী খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখতেন তা এখন যেন দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করা ছাড়া কেকেএসপি’র আর কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনা। দীর্ঘ দিন কমিটির মেয়াদ পার হয়ে গেলেও নতুন করে কমিটি গঠনের আগ্রহ নেই কয়েকজন কর্মকর্তার। সদস্যরা কমিটির মুল দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার সেচ্ছাচারিতাকে দায়ী করছেন। তাদের ইচ্ছে মত কর্মকান্ড, বিগত কয়েক বছর বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ও ফাইনাল না খেলা মাসিক মিটিংসহ কোন প্রকার মিটিং না করায় মুখথুবড়ে পড়েছে ক্লাবটির সকল কার্যক্রম। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়টি যেন বেদখল হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কাঠ ব্যাবসীরা কার্যালয়ের বারান্দার এক পাশে কাঠের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপর পাশে পানি জমে কচুরিপানা গজে উঠেছে। বর্ষার সময় হাঠু সমান পানি থাকে কার্যালয়ের ঘরে ও বারান্দায়।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, ১৯৯০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর কপিলমুনিসহ আশে-পাশের কিছু খেলা পাগল মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তৎকালীণ কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত সরদার রোকন উদ্দীনের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পরিষদের নিচ তলায় প্রতিষ্ঠিত হয় কপিলমুনি ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (কে কে এস পি)। ক্লাবটির শুভ উদ্বোধন করেন তৎকালীণ পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম বাবর আলী। কে কে এস পি’র প্রতিষ্ঠাকালীণ সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ আঃ রশীদ ও সাঃ সম্পাদক নির্বাচিত হন এম বুলবুল আহমদ। ১৯৯২ সালে কপিলমুনির পাবলিক স্টেডিয়ামের একপাশে (বর্তমান পুলিশ ফাঁড়ির পাশে) ক্লাবটির স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ করা হয়।
প্রতিষ্ঠা কালীণ সভাপতি শেখ আঃ রশিদ বলেন, ‘ক্লাবটি প্রতিষ্ঠার পর আমরা সকল সদস্যকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন করতাম, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা ফুটবল, মহিলা ভলিবল টুর্নামেন্টের আয়োজন, কপোতাক্ষ নদে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলা। আমরাই প্রথম কপিলমুনির আশ-পাশের ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদেরকে কপিলমুনি ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেই।’
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ ইকবাল খোকন বলেন, আমি নতুন কমিটি করার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করেও বিভিন্ন কারণে শেষ নামাতে পারেনি।
সংগঠনটির বর্তমান সহ-সাধারণ সম্পাদক জগদীশ দে বলেন, ‘কমিটির মেয়াদ অনেক দিন আগেই শেষ হয়েছে, বর্তমানে চলছে এক প্রকার গড়ি মসি করে। তাছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির অধিকাংশ কর্মকর্তা ক্লাবের কর্মকান্ডে সক্রিয় নয়, তাই অনতি বিলম্বে সক্রিয় সদস্যদের দিয়ে কমিটি করলে সু-নামধন্য সংগঠনটি তার সুনামের জায়গায় ফিরে যাবে।’
বর্তমান সাঃ সম্পাদক এম আজাদ হোসেন বলেন, ‘বাজার মাটি দ্বারা উচু করার কারণে ক্লাবটির ঘর নিচে পড়ে যাওয়ায় বর্ষার সময় পানি বাধে। তিনি আরো বলেন, আমি দ্বায়িত্ব নেওয়ার পূর্বে ঘরে কোন আসবাপত্র, চেয়ার, টেবিল ছিলনা আমি আসার পর ঘরে চেয়ার টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করেছি। বর্তমানে সরকারি কোন অনুদান না পাওয়ার কারণে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া ক্লাবটির উন্নয়নের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা প্রয়োজন।’

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/এইচ এম এ হাশেম/কপিলমুনি


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক