কপিলমুনিতে সেফ কর্মকর্তারা লাপাত্তা: অন্য সমিতি থেকেও সঞ্চয় উত্তোলনের হিড়িক !

প্রকাশিত: ১:৫২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০১৯ | আপডেট: ১:৫২:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, কপিলমুনি(খুলনা):
সম্প্রতি সেফ ইসলামী গ্রুপের কর্মকর্তারা লাপাত্তা হবার ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় গ্রাহকদের মাঝে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন খুলনার পাইকগাছার কপিলমুনিতে অবস্থিত সমবায় সমিতির অফিসগুলোতে ভিড় করছেন পাওনাদাররা। পাওনাদাররা তাদের জমাকৃত সঞ্চয় ফেরৎ নিতে চাইছেন।
এমতাবস্থায় গ্রাহকদের চাপের মুখে তাদের সঞ্চয়কৃত টাকা ফেরৎ দিতে বাধ্য হচ্ছেন সমবায় সমিতি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গত ১ সপ্তাহ কপিলমুনি বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ড্রিমটাচ এন্টারপ্রাইজে সঞ্চয় আমানতকারী গ্রাহকদের ভিড় করতে দেখা গেছে।
গ্রাহকদের অভিযোগ, ড্রিমটাচ এর অধীনে জমাকৃত সঞ্চয় ফেরৎ চাইতে গেলে কর্তৃপক্ষ মেয়াদ শেষ না হওয়ার অযুহাত দেখিয়ে ফেরৎ না দিতে তালবাহানা করলে সর্বশেষ গ্রাহকদের চাপের মুখে মালামাল দিয়ে কাটাছেড়া ভাবে টাকা পরিশোধ করছে। সরেজমিন গিয়ে দেখাগেছে, অনেক গ্রাহক তাদের সঞ্চয়ের বিপরীতে ফ্রিজ, খাট, গ্যাসের চুলা, আইরণ মেশিন, ননস্টিক কড়াই, গামলা, মোবাইল সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে আমানত পরিশোধ করতে দেখাগেছে।
সম্প্রতি খুলনা সমবায় অফিসের নিবন্ধন নিয়ে সেফ ইসলামী গ্রুপ নামের একটি সমবায় সমিতি খুলনা সহ বিভিন্ন উপজেলায় চষে বেড়িয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে কোটিকোটি টাকা আমানত জমা নিয়ে জমিক্রয় ও বড়সড় ভবন নির্মান করে আলোড়ন সৃষ্টির পর সংশ্লিষ্ট উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের হঠাৎ লাপাত্তা হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হলে আমানত সঞ্চয়কারী গ্রাহকদের মাঝে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার সমবায় সমিতিভুক্ত বে-সরকারী এসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা তাদের পাওনা জমাকৃত সঞ্চয় ফেরৎ পেতে এখন মরিয়া। ড্রিম টাচ এন্টারপ্রাইজে আসা সোনাতনকাটি গ্রামের শাহাজান গাজীর পুত্র মাজেদ গাজীকে আমানতের বিপরীতে ১টি মিনিষ্টার কোম্পানীর ফ্রিজ দিয়ে পরিশোধ করেন কর্তারা, তার জমা ছিল এককালীন ৩০ হাজার টাকা।

একইভাবে সোনাতনকাটি গ্রামে শামছুল হকের স্ত্রী নাছরিন বেগম স্টীলের খাট নিয়ে পরিশোধ করেন। একই এলাকার ফরিদা বেগম, রেবেকা খানম, ও কামরুন্নাহার ২৯ হাজার ৭০০ টাকার বিনিময়ে নেন ফ্রিজ ও আইরণ মেশিন। এ ভাবে ওইদিন প্রায় ২ শতাধিক গ্রাহক তাদের সঞ্চয় ফেরৎ নিয়ে গেছেন। এখনও অনেক গ্রাহক বাকি রয়েছে।
ড্রিম টাচ এন্টারপ্রাইজে দ্বায়িত্বে থাকা মোঃ ইয়াকুব আলী জানান, পার্শবর্তী সেফ ইসলামী গ্রুপের এমন খবরে আমাদের গ্রাহকরা ভয় পেয়ে তারা তাদের টাকা উঠাতে এলে আমানতের পরিবর্তে আমরা বিভিন্ন জিনিষ দিয়ে তাদের টাকা পরিশোধ করে দিচ্ছি। মেয়াদ ভিত্তিক এককালিন এফডিআর সঞ্চয়ের কোন নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব প্রতিষ্ঠান এভাবেই লেনদেন চলছে। তবে সেফ কর্মকর্তাদের কারণে আমরা চাপের মধ্যে পড়েছি। তিনি বলেন আমরা কারও টাকা মারবো না।

এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সাত্তার জানান, এফডিআর বা এককালীন সঞ্চয় করার কোন নিয়ম নাই। তিনি বলেন, সমবায় সমিতির নামে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালানো যাবে না, এটা সম্পূর্ণ বে-আইনি। তবে এর সঠিক তদারকি নেয়া হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরোও বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি।

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/এইচ এম এ হাশেম/কপিলমুনি


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক