কপিলমুনিতে পানির অভাবে চিংড়ি চাষ ব্যাহত: অসংখ্য মৎষ্য চাষীর ভাগ্য বিপর্যয় !

প্রকাশিত: ৭:৩৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২০ | আপডেট: ৭:৩৩:অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২০

এইচ এম এ হাশেম, কপিলমুনি(খুলনা):
ধান নেই, মাছ নেই খাব কি? এনজিও র এক গাদা টাকা শোধ করবো কি করে? এ কথা বলেই অঝোরে কেঁদে ফেললেন প্রান্তিক মাছ চাষী শহিদুল। শুধু শহিদুল নয় অমল, রাম প্রসাদ, জাকারিয়া মোড়লসহ দুশ্চিন্তায় কপালে ভাজপড়া মলিন মুখে শত শত মৎস্য চাষী একে একে বললেন তাদের না বলা কথা। তাদের এই ভাগ্য বিপর্যয়ে দুষলেন স্থানীয় ঠিকাদার ইউপি সদস্য ইউনুস আলীকে। তার কারনে এবার পথে বসতে হবে এমন অভিযোগ ও খুলনা- ৬ আসনের এমপি বরাবর করেছেন ভুক্তভোগি মৎস্য চাষীরা।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

কপিলমুনির হাউলী, প্রতাপকাটি, নোয়াকাটি, ও নাবার বিলে ৩ হাজার বিঘা জমিতে প্রায় ৫ শত মৎস্য চাষী চিংড়ী চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ছোট বড় এসব মৎস্য ঘেরের বেশীর ভাগই প্রান্তিক মৎস্য চাষী। গত সাড়ে ৩ দশক যাবত এ সব বিলে নিবিড় চিংড়ীসহ সাথী মাছের চাষ করে আসছেন মৎস্য চাষীরা। দীর্ঘদিন মাছ চাষের ফলে নোনা পানির প্রভাবে এসব বিলে ধান চাষ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই চিংড়ী চাষের উপরই তারা নির্ভরশীল। কিন্তু এবার তাদের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটেছে। চিংড়ী চাষের এই উপযোগী মৌসুমে নদী থেকে বিলে পানি আসতে না পারায় পুরো বিল গুলো খাঁ খাঁ করছে। ঘেরের মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও পানির অভাবে ঘেরে চিংড়ী পোনাসহ সাথী মাছের পোনা ছাড়তে পারেন নি। আর এ কারনেই মৎস্য চাষীদের মাথায় হাত উঠেছে।

মৎস্য চাষীদের অভিযোগ, এ চারটি বিলে একটি মাত্র খাল দিয়ে পার্শ্ববর্তী হাড়িয়া নদী থেকে পানি উঠানামা করে। কিন্তু প্রায় দেড় মাস যাবৎ খালের কালর্ভাটটির চারিপাশ মাটি দিয়ে বন্দ করে রাখার ফলে নদী থেকে ছিটেফোঁটা পানি খাল দিয়ে বিলে আসছে না।
মৎস্য চাষীরা জানান, যথেষ্ট মজবুত থাকলেও পূর্বের কালভার্টটির স্থলে নতুন কালভার্ট নির্মানে ঠিকাদার হিসাবে নির্মান কাজের দায়িত্ব পান কপিলমুনি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইউনুচ আলী মোড়ল। তিনি কালভার্টটির চারপাশ মাটি দিয়ে বেধে মাত্র তিনজন শ্রমিক দিয়ে পুরাতন কালভার্টটি ভাঙ্গার কাজ শুরু করেন। কিন্তু ভাঙ্গার কাজ ধীরগতিতে চলে।

যেভাবে নির্মান কাজ চলছে তা আগামী ৩/৪ মাসেও শেষ করতে পারবেন না বলে তারা অভিযোগ করেন। কালভার্ট নির্মানে অযাচিত কালক্ষেপনে শত শত মৎস্য চাষীর ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষয়ে পাইকগাছা আ’লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস জানান, শত শত প্রান্তিক মৎস্য চাষীর একমাত্র অবলম্বন মাছ চাষে প্রতিবন্দকতা সৃষ্টি করা মোটেও কাঙ্খিত নয়। এসব মৎস্য চাষীদের দূর্দশা দেখে দ্রুত কালভার্ট নির্মান করে পানি তোলার ব্যবস্থা করার জন্য তিনি ইউনুচ মেম্বরকে অনুরোধ করেন বলে জানান।
ইউনুচ আলী বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে কালভার্র্ট নির্মান করে বা মাটি অপসারন করে পানি তোলার ব্যবস্থা করা হবে।’

সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক