অবশেষে বদলি হলেন বহুল আলোচিত কপিলমুনির ভূমি অফিসের নায়েব জাকির হোসেন

প্রকাশিত: ৮:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০ | আপডেট: ৮:৩০:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০

অবশেষে বদলি হলেন বহুল আলোচিত কপিলমুনির ভূমি অফিসের নায়েব জাকির হোসেন। তবে স্বাভাবিক ভাবে নয়, নৈতিক স্খলনজনিত কারণে তাকে বদলি হতে হয়েছে বলে জানা গেছে। বদলির বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম। খুলনা জেলা প্রশাসক তাকে আদেশ দেন বলে জানান। নায়েব জাকিরের বিরুদ্ধে ঘুষ, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়মসহ এন্তার অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি কখনো।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

তবে গত বছর বিভিন্ন পত্রিকায় ঘুষ বাণিজ্যের তথ্যবহুল সংবাদ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া শুরু করলে প্রভাব খাটিয়ে নায়েব জাকির সেটা বন্ধ করতে সক্ষম হন। সেই থেকে প্রভাবশালী এই সরকারী কর্মকর্তা কপিলমুনিতে ব্যাপক ঘুষ বানিজ্যসহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন বহাল তবিয়তে। প্রভাব আর ক্ষমতার জোরে কপিলমুনি ভূমি অফিসকে তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন। ঘুষ শব্দটি ছিল তার কাছে খুবই প্রিয়। ৪ বছর বছর ধরে কপিলমুনি অফিসে দায়িত্ব পালন করে কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেন এ এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। তার কোপানলে পড়ে রিক্ত নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। কৌশলে জমির প্রকৃত খাজনা থেকে দশ গুন, এমনকি বিশ গুন বেশি টাকা নিতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাছাড়া তদন্ত প্রতিবেনে যে বেশি টাকা দেয় তার পক্ষে প্রতিবেদন দিতেন তিনি। এমনকি উভয় পক্ষের নিকট থেকে টাকা নিতেও কার্পন্য করতেন না তিনি। এমন দ্বৈতনীতিতে অনেকের গালিগালাজ নিথরে হজম করতে হয়েছে তাকে।

তবে নিলজ্জতার কারণে শুনেও না শোনার ভান করতেন তিনি। এ অবস্থা চলতে থাকায় এ অঞ্চলের মানুষের একটিই দাবি ছিল এই ভয়ংকর ঘুষখোর নায়েবের হাত থেকে পরিত্রান। তবে গত ৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে তার অফিস থেকে আধা কিলোমিটার দুরে এক গৃহবধুর ঘরের গভীর রাতে প্রবেশ করলে গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় প্রত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পূর্বের মত এবারও ঘটনা ধামাচাপা দিতে নায়েব দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। হাজার হাজার টাকা দিয়ে তার কিছু দালারদের বিভিন্ন জায়গায় তদ্বির করেও শেষ রক্ষা হয়নি, এমনটি জানালেন অনেকে। আর ঘটনার তদন্তে সত্য প্রমানিত হওয়ায় তাকে শাস্থিমূলক বদলী করা হয়েছে বলে এলাকায় গুনজন চলছে।

এদিকে নায়েব জাকিরের বদলির সংবাদ এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ক্ষমতাধর এ সরকারী কর্মকর্তার বদলিতে মিষ্টি বিতরণ করেছে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি। তবে বদলির খবরে কিছু পৌষ্য দালালদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। বৃহস্পতিবার এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত দাদলাদের পদচারনা ছিল দৃশ্যমান ছিলনা অনেকটা ফাঁকা ছিল তার অফিস কক্ষ। এদিকে এলাকার সুধি মহলের বক্তব্য, যেখানে প্রধানমন্ত্রী দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা দিয়েছেন সেখানে নায়েব কিভাবে দূর্নীতি চালিয়ে গেলেন? তার খুটির জোর কোথায়? বিষয় খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকার মানুষ।

শ্রীরামপুর গ্রামের মইনুদ্দিন হাজরা বলেন, ‘প্রচান্ড ঘুষখোর নায়েবকে বদলী করে জেলা প্রশাসক সময়োপযোগী কাজ করেছেন। কপিলমুনির মুকুন্দ সাধু বলেন, দুইশত টাকার খাজনা তার কাছ থেকে দশহাজার টাকা নিয়েছে নায়েব জাকির। সলুয়ার পুরুল বিবি জানান, চারশতক জায়গা বিক্রির করার সংবাদ পেয়ে খাজনা হিসাবে তেরশত টাকা নিয়ে খাজনা রশিদে নামে মাত্র টাকার অংক বসিয়েছেন ।


আপনার মতামত লিখুন :

এইচএমএ হাশেম। নিজস্ব প্রতিবেদক। কপিলমুনি, খুলনা