ভালবাসার গল্প: “অতৃপ্ত ভালবাসা” (পর্ব-২)

প্রকাশিত: ১:৩৯ পূর্বাহ্ণ, মে ২৭, ২০২০ | আপডেট: ১২:৫৬:পূর্বাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২০

তৃষা: জয়া, রাজ আমার ছোট ভাই। আমরা একই সাথে পড়ি।
রাজ: তুমি খুব সুন্দর জয়া।
জয়া হাসে।
রাজ: তোমার হাসিটা আরও বেশি সুন্দর। এক কোটি টাকা দাম হবে তোমার হাসির।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

পলি: জয়া রাজের কথায় তুমি কিছু মনে করো না।
সাথী: ও এমনি! আমাদের সবার পিছে লেগেই থাকে।
কাকুলি: তবে খুব ভালো বন্ধু আমাদের।
জয়া: শুধু তোমাদের? আমার না?
রাজ: অবশ্যই! অবশ্যই! তোমার জন্য আমার জীবন পর্যন্ত দিতে পারি জুলিয়েট।

সাথী: জয়া লাল রংয়েই শুধু না, সাদা রংয়ের পোশাকেও তোমাকে অনেক সুন্দর দেখায়।
জয়া: সেটা আবার কি? আমি তো কখনো তোমাদের কাউকে দেখিনি। তোমাদের কাউকে আমি চিনিনা।
রাজ: যেমনটা শুনছি তুমি তার থেকে অনেক বেশি সুন্দরী। তোমার মনটাও কি এমন সুন্দর?

জয়া কিছু বলে না শুধু হাসে আর ভাবে! এরা কি পাগল সবাই!
কাকুলি: জয়া তুমি ঘুম থেকে উঠে কথা বললে শুধু শুনতে ইচ্ছা হয়।
জয়া: কি? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা।
আশা: তোরা এবার থাম বেচারী চিন্তায় লাল হয়ে গেছে।
তৃষা: জয়া তো চিন্তায় লাল হয়ে গেছে। ওদিকে অন্যজন যে দূর থেকে দেখার চেষ্টা করছে। ঠিকভাবে দেখতে পাচ্ছে না। তাই রাগে লাল হয়ে গেছে।

জয়া আমি পাগল হয়ে গেছি না কি তোমরা পাগল হয়ে গেছ, বুঝতে পারছি না!
রাজ: পাগল রোমিও হয়েছে। বাকি সবাই ঠিক আছে।
জয়া: সেটা আবার কে?
কাকুলি: যে এক সপ্তাহ ধরে তোমার অপেক্ষায় আছে। আর আমাদের কেও অপেক্ষায় রেখেছে।

জয়া: কে?
রাজ: আমি, তুমি আমার জুলিয়েট। আমি তোমারই রোমিও।
সবাই হেসে ওঠে।
গভীর কন্ঠে জয়া বলে আমি স্বপ্নেও কখনো তোমাকে দেখিনি।
রাজ: তাকে দেখছো?
সবাই হাসে।

আশা: তুমি রোমিও কে না দেখলে কি হবে? রোমিও প্রতি রাতে স্বপ্নে এবং দিনের কল্পনায় তোমাকেই দেখে, খুব ভালো করেই দেখে।
সবাই আবার হাসে।
জয়া: বলো না তোমরা কেন এমন করছ আমার সাথে?
পলি: তোরা আর এমন করিস না।

আশা: তোরও কি একদিনে ভালোবাসা হয়ে গেছে? জয়ার প্রতি তারমত?
সবাই আবার হাসে।
জয়া: কার মত?
রাজ: ছাদের গেটের দিকে তাকাও বুঝতে পারবে।
জয়া তাকাই একটা ছেলেকে দেখতে পাই।

জয়া: কে?
রাজ: তোমার রোমিও! দাঁড়াও রোমিও কে ডেকে আনছি।
তৃষা ছেলেটির হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে আসে।
জয়া তাকিয়ে থাকে কাছে এলে সেই কালো গভীর তীক্ষ্ম চোখ দুটি জয়ার চোখে পড়ে।
জয়া বুঝতে পারে এটা রোহিত। জয়া আর কিছুই বলেনা।
মাথা নিচু করে ভাবে, তবে রোহিতে এসব কথা সবাইকে বলছে।
জয়া লজ্জা পায়।

জয়ার খুব ভালো লাগে, জয়ার মন আনন্দে ভরে যায়।
জয়া মাথা নিচু করে।
কাকুলি: আমরা সাতজন ক্লাস নাইন থেকে একসাথে পড়ি।
তৃষা: আমরা সাতজন, তবে একটাই মন।
রাজ: আজ থেকে আটজন হলাম।

সাথী: তুই কিছু বলবি না রোহিত?
রাজ: এই সাত দিন তো আমাকে পাগল করে দিচ্ছিলি। কবে আসবে, কবে দেখবো।
জয়া খুব খুশি হয়। সে ভাবে এই সাতদিন রোহিত তাকে নিয়ে ভাবছে।

পলি: আমরা সবাই সবাইকে তুই করে বলি। তোমাকে কি বলবো জয়া?
জয়া: তুই, তুমি বলে আমাকে দূরে সরিয়ে রাখবে কেন?
কাকুলি: রোহিত তুই জয়াকে কি বলবি?
রাজ: তুমি করে বলবে, তুই বলার সাহস রোহিতের নেই।
সবাই আবার হাসে।

আশা: তুমি রোহিতকে কি বলবে জয়া?
তৃষা: আপনি। সবাই শব্দ করে হেসে ওঠে।
রোহিত কোন কথা বলে না। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে জয়াকে দেখে।
রাজ: এবার তোরা থাম। আমাদের জুলিয়েট লজ্জা পাচ্ছে!

রোহিত: তুই চুপ করবি।
তৃষা: জুলিয়েটকে নিয়ে কথা হচ্ছে, তুই নাক গলাবার কে রোহিত?
রোহিত: তৃষা মার খাবি!
পলি: জয়াকে মার।
রাজ: ওকে কি মারবে? ওকে তো শুধু আদর করবে!

রোহিত: কি সব বলছিস রাজ?
আশা: আজ একবার রোহিতের দিকে ভালো করে তাকাও জয়া।
না হলে পরে দেখলে চিনতে পারবে না।
জয়া মুখটা তুলে হাসে।
রোহিত জয়ার হাসিমাখা মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

আশা: একটা বাজে। এবার বাসায় যেতে হবে।
রাজ: আরেকটু থাক তোরা। না হলে যে রোমিও কষ্ট পাবে।
সবাই হাসে।
সবাই কলেজগেটে যেয়ে দাঁড়ায়।
এতটা সময় এর মধ্যে একবারও রোহিত ও জয়া কেউ কারও সাথে কথা বলেনা।

রোহিত: তুমি কি একা বাসায় যাবে জয়া?
রাজ: তাহলেতো তোর ভালো হয়!
সবাই শব্দ করে হেসে ওঠে।
জয়া: আমার পাপা আসবে।
তৃষা: কয়টায়?
জয়া: ১টা ১৫ অথবা ২০ মিনিটে।

আশা: জয়ার পাপা না আসা পর্যন্ত আমরা এখানে দাঁড়াই।
কাকুলি: আমার যেতে হবে। কাজ আছে।
পলি: তোর কাজ মানেই তো কৌশিকের সাথে দেখা করা।
কাকুলি: তাতে তোর কি?

সাথি: আমিও যাবো তোর সাথে।
কাকুলি ও সাথী চলে যায়।
রাজ: কাল কলেজে আসবে তো জয়া?
জয়া: কেন?
রাজ: না এলে যে রোমিও কষ্ট পাবে! কান্না বন্ধ করতে পারবে না।
সবাই হাসে।

রোহিত: রাজ ভালো হচ্ছে না।
তৃষা: তুই তলে তলে তাল গাছে উঠবে, আর আমরা তাল পড়ার শব্দ শুনলেই দোষ!
রোহিত: মাফ কর। এবারের মত। আর কখনো তোদের সাথে কোন কথা বলবো না।
আশা: এখনতো বলার লোক পেয়েছো আমাদের বলবে কেন?
পলি: ঠিকই বলছিস।

জয়া রোহিত দিকে তাকায়। রোহিতের চেহারা আকর্ষণীয় সুন্দর।
খুব কম ছেলেরই এমন সুন্দর চেহারা হয়।
জয়ার পাপা আসে। রোহিতের সাথে কথা বলে।
জয়ার সবার সাথে পাপার পরিচয় করিয়ে দেয়।

পাপা: মামনি এবার চলো।
জয়া পাপার মোটর সাইকেলের পিছে বসে।
মোটর সাইকেলে উঠে ১০ থেকে ১৫ গজ দূরে যেয়ে জয়া পিছন ফিরে তাকায়।
রোহিত তাকিয়ে থাকে।
জয়া তাকালে রোহিত হাত নাড়ে।

তারপর যতদূর দেখা যায় দুজন তাকিয়ে থাকে।
জয়া বাসায় পৌছে ঘুমায়। বিকালে জয়া ও জয়ার মামনি ছাদে উঠে।

……………………………………

প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

দ্বিতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

তৃতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

চতুর্থ পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

পঞ্চম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

শেষ পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

……………………………………

 


আপনার মতামত লিখুন :

লেখিকা: নাজনীন