অণুগল্প: ”আত্মবিশ্বাস”

প্রকাশিত: ২:২৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২০ | আপডেট: ২:২৫:অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২০
আত্মবিশ্বাস
……….রুদ্র অয়ন 
সভায় হাজারও লোকের উপস্থিতি। প্রধান বক্তার আগমন ঘটলো। মঞ্চে উঠে এলেন তিনি।  তীক্ষ্ণ চোখজোড়ায় ব্যক্তিত্বের ছাপ। পকেট থেকে এক হাজার টাকার একটি নোট বের করলেন ।
টাকার নোটটা তুলে ধরলেন হাত মেলে ওপরে।  দৃপ্তকণ্ঠে বললেন ‘আপনাদের মাঝে কে কে চায় এই নোটটি?’
কোন কথা নেই, সারি সারি হাত ওঠে গেল ওপরে। অর্থাৎ সবাই চায় নোটটি!
মৃদু হাসি খেলে গেল বক্তার ঠোঁটের কোণে। নোটটি হাতের মুঠোয় মুচড়ে দুমড়ে আবার তুলে ধরলেন, ‘এবার কে কে চান?’
সবগুলো হাত ওঠে গেল আবারও, ঠিক আগেরবারের মতোই।
‘আচ্ছা! আমি আপনাদের কাউকে অবশ্যই দেব টাকাটি, কিন্তু তার আগে একটি কাজ করবো!’ এই বলে নোটটি মাটিতে ফেলে জুতো দিয়ে মাড়ালেন তিনি। ধুলো-ময়লা মাখা কুঁচকানো নোটটি দেখিয়ে কৌতুকের স্বরে বললেন, ‘এই ময়লা নোটটি নিতেও আপত্তি নেই আপনাদের?’
উপস্থিত অতিথিবৃন্দ মাথা নেড়ে জানিয়ে দিলেন কারো আপত্তি নেই তাতে!
বক্তা বলতে শুরু করলেন, ‘সুপ্রিয় অতিথিবৃন্দ! আপনারা এইমাত্র জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা প্রত্যক্ষ করলেন। এক হাজার টাকার এই নোটটিকে আমি দুমড়ে মুচড়ে মাটিতে ফেলে জুতো দিয়ে মাড়িয়েছি, কিন্তু তারপরও আপনারা টাকাটি পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ; কারণ যত যা-ই করি না কেন আমি টাকাটির মূল্য তাতে বিন্দুমাত্র কমেনি! ঝকঝকে নোটটি আর এই কুঁচকানো ময়লা নোটটিতে কোন পার্থক্য নেই, এটি এখনো এক হাজার টাকা মূল্যমানের!
জীবনে আমাদের অনেক দুঃখ, বেদনা, হতাশা, ব্যর্থতার মুখোমুখি হতে হয়, আমাদের আত্মবিশ্বাস একদম তলানিতে গিয়ে ঠেকে, নিজেকে আয়নায় দেখে ভাবি, আমার জীবনটা শেষ হয়েগেছে! আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না!
এই বিপর্যয়ের মুহূর্তগুলোতে মনে রাখতে হবে এই এক হাজার টাকার নোটটির গল্প। দুমড়ে-মুচড়ে ধুলি ধূসরিত হয়ে নোটটির মর্যাদা কি একটুও কমেছে? কমেনি!
আপনাকে যতবার ব্যর্থতা গ্রাস করবে, হতাশায় মুষড়ে পড়বেন, ততোবার নিজেকে টেনে তুলবেন নতুন আত্মবিশ্বাসে। এই পৃথিবীতে যে আপনার মতো আর দ্বিতীয়টি নেই কেউ! আপনি অনন্য, অতুলনীয়, পৃথিবীকে আপনার দেওয়ার আছে অজস্র ঐশ্বর্য। কোন ব্যর্থতা-গ্লানির সাধ্য আছে কি সেই গৌরবোজ্জ্বল দ্যুতিকে ম্লান করতে পারে?

 

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

সুন্দরবনটাইমস.কম/কবিতা/লেখক:রুদ্র অয়ন/ঢাকা


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক