গ্রাম্য ডাক্তার থেকে কোটি টাকার মালিক পাটকেলঘাটার সাগর দাশ ! প্রকাশিত: ৯:২৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২০ | আপডেট: ৯:২৫:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২০ নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার জগদানন্দকাটি গ্রামের ক্ষেতমুজুর গোবিন্দ দাশের ছেলে সাগর দাশ। অভাব অনাটনে বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারেনি। এসএসসি পাশের পরেই এক চিকিৎসকের প্রশিক্ষণ নেয়। এরপর মির্জাপুর বাজারে চিকিৎসা সেবার জন্য একটি চেম্বার খোলে। এরপাশাপাশি সে এমএলএম ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডেসটিনিতে জড়িয়ে পড়ে। এর মাধ্যমে এলাকার অনেক মানুষের কাছ থেকে অনেক অর্থ হাতিয়ে নেয় সাগর দাশ। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অধিক টাকার লোভে সাগর মির্জাপুরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সানের তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক আজিজুল ইসালামের কাছ থেকে ২০০৭/ ২০০৮ সালের দিকে সমোঝতার মাধ্যমে নির্বাহী পরিচালক হয়। উল্লেখ্য, সামাজিক কাজের জন্য অনুমোদন পাওয়া এ প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই সমাজ সেবা না দিয়েই ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসায় জড়িয়ে পরে। সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে নব্বই দশকে এ সংস্থাটির অনুমোদন নেন আজিজুল ইসলাম। ২০০১ এর দিকে প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক আজিজুল ইসলাম গ্রাহকের অর্থ ফেরতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রাখে। জানা গেছে, ২০০৭ বা ২০০৮ এর দিকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে সাগর দাশ দ্বায়িত্ব নিয়েই কয়েকটি সমাজ সেবার কার্যক্রম যেমন পোল্ট্রি প্রশিক্ষণ ও সেলাই প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু করে। এরপর প্রতিষ্ঠানটির পার্শবর্তী গ্রাম মির্জাপুর, জগদানন্দকাটি, বারাত, কেশা, বকশিয়া, নোয়াকাটিতে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহ করে। এর কার্যক্রম বিস্তার লাভ করতে থাকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। ধানদিয়া ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রাম, তেতুলিয়া ও ইসলামকাটি গ্রামের অনেক গ্রামে এর কার্যক্রম শুরু করে। কয়েক বছর পর ধানদিয়া-ফুলবাড়ি এলাকার প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাহকের আমানত নিয়ে সেখানে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। সব গ্রাহকের পক্ষে মির্জাপুর এসে এনজিও নির্বাহী পরিচালককে খুঁজে বের করে অর্থ আদায় করা কষ্ট স্বাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। তাই অনেকেই তাদের আমানত ফেরত পেতে ব্যর্থ হয়। কিছু গ্রাহক অনেকবার মির্জাপুরে এসে অর্থের তাগিদা করেও সব অর্থ ফেরতে ব্যর্থ হয়। এমন অভিযোগ ধানদিয়া ইউনিয়নের অনেক গ্রাহক এ প্রতিবেদকের কাছে করেছেন। এদিকে, মির্জাপুর, কেশা, বারাত, হাতবাস, নোয়াকাটিসহ সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের পাশ্ববর্তী গ্রামের বিভিন্ন কেন্দ্রে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত সঞ্চয় সংগ্রহ করেছে। এরপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোন কার্যক্রম তারা পরিচালনা করছে না। এমনকি তাদের কোন অফিসও নেই মির্জাপুরে। নির্বাহী পরিচালক সাগর দাশের বাড়িতে গ্রাহকরা মাসের পর মাস হাটাহাটি করেও তাদের আমানত ফেরত পারনি। এসব এলাকায় প্রায় ১৫০ গ্রাহক টাকা পাবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ গ্রাহকের ৩০ লাখ টাকার আমানত ফেরত দিচ্ছে না সাগর দাশ। এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক এসব অর্থ হাতিয়ে মির্জাপুর বাজারে গড়ে তুলেছে অনেক স্থাপনা। সেখানে তালার একটি বেসরকারি সংস্থাও বেশকিছু দোকান ভাড়া দিয়েছে। এমনকি থাকার জন্য অনেক টাকা খরচ করে পাকা বাড়িও করেছেন সাগর। অর্থের দাপটে তিনি কাউকে মূল্যায়ন করছেন না। একারণে তিনি কাউকে টাকা ফেরতের বিষয়ে গুরুত্ব দেন না। এলাবাসী বা স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারাও যেন তার কাছে হার মানছে। জানতে চাইলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সান এর পরিচালক সাগর দাশ এ প্রতিবেদকে জানান, ৩০০ না প্রায় ১৫০ গ্রাহক আমার কাছে সাড়ে ১২ লাখ টাকা পাবে। আমি তাদেরকে দিয়ে দেবো। আমানত পরিশোধে কতদিন লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা বলা যাবে না। তবে আমি গ্রাহকের টাকা দিয়ে দিবো। এতদিন কেন পরিশোধ করেননি জানতে চাইলে সাগর দাশ বলেন, সংস্থার মাঠকর্মীর সাথে আমার মামলা চলছে। সেটি শেষের অপেক্ষায় আছি। জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেছেন, বিষয়টা আমি পত্রিকা মারফত দেখেছি। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি। আর ভুক্তভোগীরা থানায় যদি অভিযোগ দেয় তবে তাকে পুলিশ আটক করবে। এ প্রসঙ্গে জেলা সমাজসেবা অফিসার দেবাশীষ রায় বলেন, আমি এখনই খোঁজখবর নিচ্ছি। তারপর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুন্দরবনটাইমস.কম/ডেক্স ভূয়া এনজিও সংবাদটি পড়া হয়েছে ২৩৩ বার আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন সাতক্ষীরায় মুজিববর্ষের ৪র্থ ধাপে জমিসহ গৃহ পাচ্ছেন ৬০৫টি পরিবার আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস: কেন এই ভালোবাসা দিবস?