কপিলমুনির হাউলীতে শ্রমজীবি সমিতির সদস্যরা অর্ধাহারে অনাহারে

এইচএমএ হাশেম, কপিলমুনি(খুলনা):
চলমান করোনার প্রভাবে যেখানে গোটা দুনিয়া আজ নিস্তব্দ আর স্থবির, সেখানে খেটে খাওয়া দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের দুঃখের সীমানা অনেকটা লম্বা হওয়াটাই স্বাভাবিক। ইতোমধ্যে করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায় বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষের জীবন বাঁচাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার সকলকে হোমকোয়ারেন্টেইনে থাকতে বলা হয়েছে।

নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে হোমকোয়ারেন্টেইনে থেকে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের হাউলী শ্রমজীবি সমিতির প্রায় দেড়‘শ শ্রমজীবি মানুষ অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কর্তা আয় করতে না পারায় পরিবারের সদস্যরা যেন একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েছেন। বাকি দিনগুলো কিভাবে যাবে সেই চিন্তায় কপালের চামড়ায় ভাজ পড়ে গেছে তাদের। এমন অবস্থা বেশ কিছু দিন ধরে চলতে থাকলেও সরকারী বা ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ তাদের দিকে সাহায্যের হাতও বাড়ায়নি।
২০১৭ সালের শেষের দিকে উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের হাউলী গ্রামের কিছু অসহায় শ্রমজীবি খেটে খাওয়া মানুষদের নিয়ে স্থানীয় আশুতোষ সরদারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় হাউলী শ্রমজীবি সমিতি। দু’একজন করে সদস্য বাড়তে বাড়তে এর সংখ্যা এখন প্রায় দেড়‘শত। সদস্যরা মাটিকাটা, ফসলের ক্ষেতে চাষ করা, রাজমিস্ত্রীর কাজ, কাট চেরাই করাসহ বিভিন্ন রকম কাজ করে সংসারের ঘানি টানেন। কিšুÍ বিধি যেন তাদের বাম, মরণঘাতী করোনা তাদেরকে কর্মহীন করে ফেলেছে।
শ্রমজীবি শ্যামাল বলেন, ‘প্রতি দিন কাজে যাই, ৩‘শ টাকা জনের দাম পাই, তাই দিয়েই চাল ডাল কিনে কোন রকম চলতো, কিন্তু এখন কি হবে আমার। আমি বাজার বেসাতি করব কি দিয়ে।’
সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাফর লস্কর বলেন, ‘আমরা যারা জন খাটি এরকম মানুষ নিয়েই এই সমিতিটি করেছিলাম। বর্তমানে ঘর বন্দি থাকায় সব সদস্যরা আমাকে বলে আমাদের কেউকি সাহায্য দেবেনা, খেতে দেবে না ?’
সমিতির সভাপতি আশুতোষ সরদার বলেন, ‘করোনার কারণে আমরা বড্ড বেকায়দায় আছি, কি খাবো কি, কি করবো জানি না। আজ পর্যন্ত এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বর আমাদের খোঁজ নেয়নি, সাহায্যের হাত বাড়য়নি। তাই এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সু-দৃষ্টি কামনা করছি।’
সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক