রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাওড়ে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুতে গভীর রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীদের ভীড়

প্রকাশিত: ২:২৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০ | আপডেট: ২:২৪:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০

উত্তম চক্রবর্তী: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাওড়ের দৃশ্যমান ভাসমান সেতু দুটিতে ভীড় জমতে শুরু করেছে। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেতুতে ভীড় জমছে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। জানা যায়- রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাওড়ে প্রায় হাফ কিলোমিটার দৈর্ঘের বাজার সংলগ্ন ঘাটে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ও বাজারের হাফ কিলোমিটার দক্ষিনে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু তৈরী করা হয়েছে। ভাসমান সেতু তৈরীর শুরু থেকে স্থানীয় প্রিন্ট মিডিয়া ও দেশের বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিডিয়ার ব্যপক প্রচার করাই বিশ্বব্যাপী সাড়া জেগে ওঠে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

সেতু দুটির মধ্যে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্বোধন করেন তৎকালীন যশোরের জেলা প্রশাসক আবু আওয়াল চৌধুরী। পরের বছর ২০১৮ সালের মাঝের দিকে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুটি উদ্বোধন করেন তৎসময়ের মণিরামপুরের এমপি ও বর্তমান প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য।  সেই থেকে আলোচনায় মুখপাত্র হয়ে ওঠে এই ভাসমান সেতু দুটি। দৃশ্যমান সেতু দেখতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার নারী পুরুষের ভীড় জমতে থাকে। দেখা গেছে- বছরের প্রতিটা সময়ে সেতুতে রয়েছে দর্শনার্থী। দেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন নামী দামী লোক এই সেতু পরিদর্শনে। এদিকে দুই ভাসমান সেতুর মাঝখানের ঝাঁপা গ্রাম পাড়ে তৈরী করা হয়েছে মিনি পার্ক ও পিকনিক স্পট। সেখানে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা, শিশুদের আনন্দ দেবার জন্য রয়েছে হরেক রকমের দোলনা। বড়দের জন্য রয়েছে চরকা ও দোলনা। রয়েছে ভাসমান টি স্টল, পিকনিক স্পটে রয়েছে চটপটি হাউজ, রকমারী কসমেটিক সহ হরেক রকমের প্রসাদনী খাবারের দোকান।

এখন চলছে শিক্ষা সফর ও পিকনিক মৌসুম, তাই অনেক দুর দুরান্তের বিভিন্ন অফিস, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে পিকনিকে আসছে। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যারা দুরের কোথাও শিক্ষা সফরে যাচ্ছে তারা ফেরার পথে রাত হলেও একবার ঘুরে যাচ্ছে ভাসমান সেতু দুটি। যতদুর জানা গেছে- গত দু-বছর ধরে ভাসমান সেতু পরিদর্শনে হাইকোটের কয়েকজন বিচারপতি, কয়েকজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টা এসেছেন। এসেছেন চলচিত্রের ও বিভিন্ন কৌতুকের শিল্পীরা। দেখতে এসেছেন আইন ও প্রশাসনের অনেক উদ্ধোর্তন কর্মকর্তা। সম্প্রতি দেখা গেছে- যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা সেতুতে সফরে এসে ভুরিভোজ করেছেন। এ ভুরিভোজের প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য এমপি। এ ছাড়া প্রতিদিন কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এই ভাসমান সেতুতে পিকনিকে আসছে।

কথা হয় জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতুর সভাপতি ঝাঁপা গ্রামের মাষ্টার টুটুল ও সাধারন সম্পাদক মাষ্টার আসাদুজামানের সাথে তারা প্রতিনিধিকে জানায়- বাব দাদাদের, আমাদের ও আমাদের ছেলে মেয়েদের নৌকায় পারাপারের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আমরা স্থানীয় কিছু যুব সমাজ নিজেদের অর্থ দিয়ে ভাসমান সেতু তৈরী করেছি।  কোন ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াই স্থানীয় হোল্ডিং মিস্ত্রি দিয়ে আমরা সেতু দুটি তৈরী করেছি। সেতু দুটি তৈরীর পর এত দৃশ্যমান হবে তা আমরা কোন দিন ভাবতে পারেনি। শুধু দেশ নয় সমস্ত বিশ্বব্যাপী সাড়া পড়েছে এই ভাসমান সেতু দুটি। তাই আমরা ধন্য দেশবাসীর কাছে। আমরা আসা করছি দেশের যে সব জায়গায় এই ধরনের জলাকার রয়েছে এবং নৌকা পারাপারে ভুগান্তি পেতে হচ্ছে সেই সকল স্থানে স্থানীয় যুব সমাজ মিলে এমন উদ্যোগ গ্রহন করুক। তাহলে আমাদের উদ্যোগটা সফল ও সার্থক হবে বলে আমরা মনে করছি।

সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক/মনিরামপুর(যশোর)


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক