ডুমুরিয়ায় মাটিতে লাল কাঁঠাল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২০ | আপডেট: ২:২৭:অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২০
কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। বাংলাদেশে বেশিরভাগ পাওয়া যায় খাজা, আদারসা ও গালা জাতের কাঁঠাল। তবে উন্নত ফলনশীল ও বারো মাস কাঁঠাল পেতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি কাঁঠাল-১ ও বারি কাঁঠাল-২ জাত উদ্ভাবন করেছেন। আর এসব জাতের কাঁঠালের বাইরেও একটি জাত রয়েছে। যা কখনো আমাদের মাটিতে চাষ করা হয়নি। আর ওই জাতটি হলো ভিয়েতনামের লাল কাঁঠাল। দেখতে বেশ সুন্দর।
 
 
 এই কাঁঠালের চাষ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় সম্ভব।  ভিয়েতনামের জনপ্রিয় লাল কাঁঠালের চারা এনে রোপণ করলে কৃষকরা সফল হবে। কৃষকরা একটু আন্তরিক হলে বাংলাদেশে অনেক কিছুই চাষ করা সম্ভব। ভিয়েতনামের লাল কাঁঠাল দেখতে অনেক সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু। লাল কাঁঠাল চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব। এতে আয়ও হবে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা।‌ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন জানান।
 
 
বর্তমানে খান মোহাম্মদ সবুজের বাগানে এখন দুই শতাধিক চারা রয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, এ বছর ফলন হয়েছে। আর ওই ফলন দেখে একজন বৃক্ষপ্রেমী ১২ হাজার টাকায় ওই গাছটি কিনে নেন। সবুজের ওই ভিয়েতনামী লাল কাঁঠালের বাগান রাজধানীর অদূরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকায় অবস্থিত।
 
 
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউড (বারি)  খুলনা জেলা উপ-সহকারী পরিচালক‌(উদ্যান) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়া ও মাটি কাঁঠাল চাষের উপযোগী। আর এ কারণে যেকোনো দেশের জাত এখানে চাষ করা সম্ভব। কাঁঠালের অনেক জাত রয়েছে। কাঁঠালের জাত ট্রান্সবাউন্ডারি হতে পারে। এক মহাদেশের জাত অন্য মহাদেশে আসা-যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। বাইরের কোনো দেশের জার্মপ্লাজম এসে আমাদের দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করলে সেটা ভালো। তবে জাত বা জার্মপ্লাজম আমদানি প্রপারলি না করা হলে অনেক সময় রোগব্যাধি ঢুকে পড়ে। কিছু কিছু ফসল আছে একটা নির্দিষ্ট অঞ্চল বা নির্দিষ্ট আবহাওয়ায় সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু কাঁঠালের ক্ষেত্রে তা হয় নয়। বাংলাদেশের ফসলও অনেক দেশে জনপ্রিয়। কিন্তু তা মিডিয়ায় তেমন প্রচারণা নেই। যেমন নেপালে আমাদের অনেক ফসলের জাত নিয়ে চাষাবাদ করছে। যা ওখানে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
 
 
ভিয়েতনামী লাল কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ কম হওয়ায় এ কাঁঠাল খেলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই বললেই চলে। ১০০ গ্রাম লাল কাঁঠালে ৩০৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম রয়েছে। এ কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন সি-ও রয়েছে। রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। যা আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধ সক্ষম। এ কাঁঠালে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেণ্ট। যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। বদহজম রোধ করে লাল কাঁঠাল। কাঁঠালে আছে খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ। যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। লাল কাঁঠালে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালী করণে ভূমিকা পালন করে। লাল কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন বি৬ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
 
 
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউড (বারি) মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র সরকার  খুলনা উপপরিচালক পঙ্কচ ‌কান্তি মজুমদার বলেন, আমরা কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফসল বা ফল নিয়ে গবেষণা করে সফল হয়েছি। ভিয়েতনামের লাল কাঁঠাল বাংলাদেশের আবহাওয়ায় চাষের সম্ভাবনা রয়েছে ব্যাপক। আগামীতে ডুমুরিয়া উপজেলার মাটিতে লাল কাঁঠালের
চাষ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন :

গাজী আব্দুল কুদ্দুস। নিজস্ব প্রতিবেদক। চুকনগর, খুলনা